কারামাতিদের পরিচয় দাও।
অথবা, কারামাতি কারা?
উত্তর ভূমিকা: আব্বাসি আমলে যে কয়েকটি শিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয় তার মধ্যে একটি হলো কারামাতি। এরাও ইসমাইলীয় শিয়াদের অন্য একটি শাখা। উভয় দলের নেতা ছিলেন আব্দুল্লাহ বিন মায়মুনের শিষ্য। তারা সশস্ত্র বিপ্লবে বিশ্বাসী ছিলেন। এ দলের প্রতিষ্ঠাতা হলেন হামদান কারামাত। তিনি ৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে এটি প্রতিষ্ঠিত করেন।
কারামাতিদের পরিচয়: কারামাতিরা ইসমাইলীয় শিয়ার অন্য একটি শাখা। এ দলের নেতা ছিলেন আব্দুল্লাহ বিন মায়মুনের শিষ্য। আব্দুল্লাহ বিন মায়মুন তার মৃত্যুর পূর্বে ৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে হামদান কারামাত নামক এক ইরাকি কৃষক সন্তানকে তার শিষ্য হিসেবে পান। হামদান কারামাত রাশিচক্র অধ্যয়ন করে সিদ্ধান্তে আসেন যে, ইরানিরা সত্ত্বর আরবদের নিকট হতে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করবে। হামদান কারামাত স্বতন্ত্রভাবে যে গোপন সংগঠনটি গড়ে তোলেন তার নামানুসারে কারামাতিয়া। বলে অভিহিত করা হয়। তিনি ৮৯০ খ্রিস্টাব্দে কুফার সন্নিকটে দারুল হিজরাতে তার প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেন। তার প্রচারক বাহিনী স্থানীয় কৃষক, কারিগর, শিল্পী, ক্ষুদে দোকানিদের মধ্যে প্রচারাভিযান পরিচালনা করেন। ফলে দ্রুত দরিদ্র জনতার মধ্যে তার মতাদর্শ দৃঢ়মূল হয়। তারা শ্রমিকদের গিল্ডে সংগঠিত করেন। তারা সশস্ত্র বিপ্লবে বিশ্বাসী ছিলেন। কারামাত নেতা আবু সাঈদ আল হাসান আল জান্নাবি ৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে পারস্য উপসাগরের তীরে আল আহমারকে রাজধানী করে একটি রাজ্য স্থাপন করেন। এ দলটি দ্রুত এত শক্তি সঞ্চয়। করে যে, বাগদাদের জন্য তা হুমকি হয়ে দাড়ায়। তারা ইয়েমেন দখল করে এবং আরও কতিপয় অঞ্চলের ওপর আক্রমণ চালায়।
উপসংহার: পরিশেষে বলা
যা যে, ইসমাইলীয় শিয়াদের মধ্যে কারামাতিয়া হলো অন্যতম একটি শাখা। তারা আলি (রা.)-কে
আল্লাহর অবতার মনে করতো। এ কারণে তাদেরকে আলাভীও বলা হয়। তারা অনেক খ্রিস্টীয় উৎসবও
পালন করতো এবং খ্রিস্টান নামকরণ পছন্দ করতো। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের জন্য ইতিহাসে তারা
বিখ্যাত হয়ে আছে।