সমাইলীয়দের উৎপত্তি কীভাবে হয়?
অথবা, ইসমাইলীয় কারা?
উত্তর ভূমিকা: ইসলামের প্রথম যুগে যেসব দল-উপদলের সৃষ্টি হয় তন্মধ্যে শিয়া সম্প্রদায় অন্যতম। শিয়াগণ একটি ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসেবে আবির্ভূত হলেও কালক্রমে রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। শিয়াদের দুটি গ্রুপ আস সাবিয়া ও ইসনা আশারিয়া। আস সাবিয়াগণই ইসমাইলীয় নামে পরিচিত।
ইসমাইলীয়দের উৎপত্তি: হযরত আলি (রা.)-এর বংশধর ও অনুসারীগণই শিয়া নামে পরিচিত। মুয়াবিয়া (রা.) কর্তৃক আলি (রা.)-কে খিলাফত থেকে সরিয়ে দেওয়া, ইমাম হাসান (রা.)-কে বিষ প্রয়োগে হত্যা এবং সর্বোপরি কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসেন (রা.)-এর নির্মম হত্যাকাণ্ড শিয়া সম্প্রদায়ের জন্ম দেয়। ইমাম জাফর আস সাদিকের মৃত্যুর পূর্বে তার পুত্র ইসমাইলকে পরবর্তী উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। কিন্তু জাফর আস সাদিকের মৃত্যুর পূর্বেই ইসমাইল মারা যান। তখন তিনি তার অপর পুত্র মুসা আল কাজিমকে পরবর্তী উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত ইসমাইলের অনুসারীরা মেনে নিতে অস্বীকার করে। তারা মনে করে যে ইমামত ইসমাইলের পুত্র মুহম্মদের কাছে এসে পৌঁছেছে। ইসমাইলের সমর্থক এসব শিয়াগণ ইতিহাসে ইসমাইলীয় শিয়া নামে পরিচিত। ইসমাইলের অনুসারীরা অপেক্ষাকৃত সহিংস ও বিপ্লবী। তারা আব্বাসি শাসনকে উৎখাত করে ফাতেমি শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। ইসমাইলীয়দের আবার 'আস সাবিয়া'ও বলা হয়।
ইসমাইলীয় বা সাবিয়াগণ অর্থাৎ সপ্তম ইমামে
বিশ্বাসীগণ ৭ সংখ্যাকে পবিত্র মনে করে এবং তারা বিশ্বাস করে পরিত্রাণের উপায় সাতটি।
তা হলো- ১. সৃষ্টিকর্তা, ২. বিবেক, ৩. ইন্দ্রিয়, ৪. বিশ্ব সৃষ্টির ঘটনাবলি, ৫. মহাকাশ,
৬. সময় এবং ৭. মানুষ ও পার্থিব জগৎ।
উপসংহার: পরিশেষে বলা
যায় যে, শিয়া সম্প্রদায়ের দুটি ভাগের মধ্যে একটি হলো আস সাবিয়া বা সপ্তম ইমামে বিশ্বাসী।
এরাই ইতিহাসে ইসমাইলীয় নামে পরিচিত। ইসমাইলীয়রা অপেক্ষাকৃত সহিংস ও বিপ্লবী। যারা বিশ্বাস
করে যে, পৃথিবীর অনাচার দূর করার জন্য, ইমাম মাহদির আবির্ভাব ঘটবে।