বদর আল জামালির পরিচয় দাও।
অথবা, আর্মেনীয় উজির বদর আল জামালি সম্পর্কে
কী জান?
উত্তর ভূমিকা: ফাতেমি খলিফা আল হাকিমের পরবর্তী খলিফাদের নাবালকত্বের সুযোগে উজির, প্রধানমন্ত্রী ও খলিফাদের মাতার অভিভাবকত্বে সমস্ত ফাতেমি সাম্রাজ্য যখন পতনোন্মুখ তখন খলিফা আল মুসতানসিরের অনুরোধে বদর আল জামালির প্রধান উজির পদ গ্রহণ ফাতেমি সাম্রাজ্যের ইতিহাসে আশীর্বাদস্বরূপ ছিল। তিনি পতনোন্মুখ সাম্রাজ্যকে নবজীবন দান করে এক নব যুগের সূচনা করেন।
বদর আল জামালি: ১০৪৭ খ্রিস্টাব্দের দিকে বিভিন্ন নগর যখন ফাতেমি খলিফা আল মুসতানসিরের আনুগত্য অস্বীকারকরতে শুরু করে এবং ইফ্রিকিয়ার জিরি বংশীয় মুইজ ইবনে বাদিস ফাতেমিদের অধীনতাপাশ ছিন্ন করে খলিফা আল মুসতানসিরের নামে খুতবা পাঠ বন্ধ করে আব্বাসি খলিফা আল কায়িমকে ইসলামি জগতের খলিফা বলে ঘোষণা করেন, বার্বার ও তুর্কিগণের দ্বন্দ্ব যখন সমস্ত সাম্রাজ্যকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দেয়, সমস্ত শাসনযন্ত্র যখন বিকল হয়ে পড়ে এবং দেশের অধিকাংশ অঞ্চল ধ্বংস হওয়ার পথে দাঁড়ায় তখন খলিফা আল মুসতানসির আক্রার শাসনকর্তা বদর আল জামালিকে তার উ সাহায্যার্থে আহ্বান করে তাকে পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রদান করেন। দায়িত্ব গ্রহণ করে তিনি রাজ্যে শাসন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। লোকদের দুঃখদুর্দশা লাঘব করেন এবং খলিফার পূর্ণ কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি দামেস্ক পুনরাধিকার করতে অসমর্থ হলেও ফিনিশীয় উপকূলবর্তী নগরসমূহ পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হন। তাকে ফাতেমি প্রশাসনের জন্য দ্বিতীয় ইউসুফ বলা হয়। অতঃপর ১০৯৪ খ্রিস্টাব্দে বদর আল জামালি মৃত্যুবরণ করেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা
যায় যে, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিভিন্ন কারণে ফাতেমি শাসন যখন পতনের দ্বারপ্রান্তে ঠিক
তখনই খলিফা আল মুসতানসির বদর আল জামালিকে আমন্ত্রণ করেন। বদর আল জামালি খলিফা কর্তৃক
দায়িত্ব গ্রহণ করে ফাতেমি সাম্রাজ্যেকে সাময়িক পতন থেকে রক্ষা করে এ সাম্রাজ্যেকে আরও
কিছু দিন দীর্ঘায়িত করেন।