আল-হাকিমকে 'খামখেয়ালী শাসক' বলা হয় কেন?

আল-হাকিমকে 'খামখেয়ালী শাসক' বলা হয় কেন?

 আল হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলা হয় কেন?

অথবা, কোন কার্যাদির জন্য আল হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলা হয়?

উত্তর ভূমিকা: খলিফা আল হাকিম জটিল ও রহস্যময় চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে অনেক ঐতিহাসিকের অভিযোগ। নিজ হাতে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি শাসনবিষয়ক কতকগুলো বিধান ও নির্দেশনা জারি করেন। যেগুলোর কারণে তাকে খামখেয়ালি শাসক বলে বিবেচনা করা হয়।

আল হাকিমকে খামখেয়ালি শাসক বলার কারণ: খলিফা আল হাকিমের কিছু বিধি ও দিকনির্দেশনার কারণে তাকে খামখেয়ালি শাসক বলা হয়। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো-


১.খলিফাকে সম্বোধনের ক্ষেত্রে আমিরুল মোমেনিন বলা।

২. দিনের পরিবর্তে রাতকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করে রাতের বেলায় রাজকার্য পরিচলনাসহ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান খোলা 'রাখা ও ক্রয়-বিক্রয় করা। অবশ্য দুবছর পর তিনি রাতে কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

৩. নিজে রাতে নগর পরিভ্রমণে বের হওয়া এবং রাস্তাগুলো আলোকিত ও সুসজ্জিত করা।

৪. কুকুর ও শূকর ইত্যাদি অপবিত্র প্রাণী হত্যার নির্দেশ দান।

৫. মদ্যপান ও এর যেকোনো ধরনের ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ বলে ঘোষণা।

৬. রাতে মহিলাদের ঘরের বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি এবং তাদের জন্য বহির্গমন জুতা তৈরি না করতে চর্মকারদের নির্দেশ দান।


৭. ইহুদি ও খ্রিস্টান নাগরিকদের তাদের ধর্মীয় নিদর্শন রূপে যথাক্রমে ঘণ্টা ও ক্রুশ পরা বাধ্যতামূলক করা।

৮. কুরবানি ছাড়া গরু জবাইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা।

সবশেষে খলিফা তার প্রণীত আইন ও শাসনবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা ও নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি। এসব কারণে তাকে খামখেয়ালি শাসক হিসেরে অভিহিত করা হয়।


উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ঐতিহাসিকগণ খলিফা আল হাকিমকে তার উদ্ভট, নিষ্ঠুর ও অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপের জন্য খামখেয়ালি শাসক' বলে অভিহিত করেন। কিন্তু পরবর্তীতে তার প্রজাহিতৈষী ও জ্ঞানবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতায় তাকে ভিন্নরূপে পাওয়া যায়।

Post a Comment

Previous Post Next Post