কায়রোর আল আজহার মসজিদ সম্পর্কে একটি টীকা লিখ।

কায়রোর আল আজহার মসজিদ সম্পর্কে একটি টীকা লিখ।

কায়রোর আল আজহার মসজিদ সম্পর্কে একটি টীকা লেখ।

অথবা, আল আজহার মসজিদের পরিচয় দাও।

উত্তর ভূমিকা: মিসরের সভ্যতা-সংস্কৃতির ইতিহাসে আল আজহার মসজিদ একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। ফাতেমি আমলে দশম শতকের শেষার্ধে নির্মিত এ মসজিদটি সহস্রাধিক বছর ধরে বহু খলিফা দ্বারা বার বার পুনঃনির্মাণ ও পরিবর্ধন লাভ করেছে।


কায়রোর আল আজহার মসজিদ: ফাতেমি খলিফাগণ জ্ঞানবিজ্ঞান ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ফাতেমি খলিফা আল মুইজের সেনাপতি জাওহার আল সিকিলি ৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে। মিসর জয় করে ফুসতাত নগরীর পাশে আল কাহিরায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। যা ইতিহাসে আল আজহার মসজিদ নামে খ্যাত। মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ৯৭২ খ্রিস্টাব্দে। আল আজহার মসজিদটি প্রায় আয়তাকারে নির্মিত হয়েছিল। এর উত্তর-পশ্চিম দেয়ালের পরিমিতি ছিল ২৭৮ ফুট বা ৮৪.৭৫ মিটার, দক্ষিণ-পূর্ব দেয়ালের পরিমিতি প্রায় ২৮০ ফুট বা ৮৫.২০ মিটার, উত্তর-পূর্ব দেয়ালের পরিমিতি ২২৬ ফুট বা ৬৯.০০ মিটার এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দেয়ালের পরিমিতি প্রায় ২২৩ ফুট বা ৬৮.১৫ মিটার। স্থাপত্যের দিক দিয়ে আল আজহার মসজিদ একটি আদর্শ মসজিদ। এ মসজিদে জুল্লাহ, মিহরাব, সাহন, রিওয়াক, যিয়াদা, অজুখানা, গম্বুজ, খিলান, স্তম্ভ ও ট্রানসেপ্ট বিদ্যমান ছিল। এ মসজিদের অলংকরণসমূহ পলেস্তরায় নির্মিত, মিহরাব, কিবলা প্রাচীর এবং উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম দেয়ালে এবং সাহনের পরবর্তী খিলান শ্রেণির শেষাংশের স্থানে এ অলংকরণ বিদ্যমান রয়েছে। অলংকরণ নকশাসমূহের অধিকাংশই দুই, তিন অথবা পাঁচ পত্রবিশিষ্ট আবর্তিত লতাপাতা দ্বারা সংযোজিত করা হয়েছে। কুফি, লিপিমালাকেও অলংকরণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় এটির সংস্করণ করা হয়। ফাতেমি খলিফা আল আজিজ মসজিদটির ছাদ এক হাত উঁচু করেন। আইয়ুবি সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি মসজিদটির মিনার উঁচু করেন। মামলুক সুলতান রুকনুদ্দিন বাইবার্স একটি কাঠের নকশাকৃত মিহরাব সংযোজন করেন। ফাতেমি খলিফা আল আজিজ ৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেন। আবু ইয়াকুব প্রতি শুক্রবার এখানে শিক্ষকতা করতেন। বর্তমানে মসজিদটি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় নামেই পরিচিত।


উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বিশ্ববিখ্যাত আল আজহার মসজিদ শুধু ধর্মীয় ক্ষেত্রেই নয়, শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশেও এর কালজয়ী ভূমিকা রয়েছে। ফাতেমি খলিফা আল মুইজ কর্তৃক নির্মিত এ মসজিদটি যুগ যুগ ধরে জ্ঞানবিজ্ঞানের অগ্রগতিতে ভূমিকা পালন করে চলেছে।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post