‘দি ডে অফ দি ডিস' কি?

‘দি ডে অফ দি ডিস' কি?

 

দি ডে অফ দি ডিচ' কী?

অথবা, খন্দক বা পরিখা দিবস বলতে কী বুঝ?

উত্তর ভূমিকা: আমির প্রথম হাকামের রাজত্বকালের একটি কলঙ্কজনক ঘটনা হলো খন্দক বা পরিখা দিবস। ইংরেজিতে একে বলা হয় 'দি ডে অফ দি ডিচ'। স্পেনের রাজধানী টলেডোর নওমুসলিম ও খ্রিস্টানগণ আমির প্রথম হাকামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে আমিরও অত্যন্ত কৌশলে তাদের দমন করার জন্য বিশ্বাসঘাতকতার আশ্রয় নিয়ে তাদের হত্যা করে পরিখা বা দীঘিতে নিক্ষেপ করেছিলেন বলে ঐ দিনকে পরিখা দিবস বলা হয়।



'দি ডে অফ দি ডিচ': প্রাক-মুসলিম যুগে স্পেনের রাজধানী ছিল টলেড়ো। স্পেনের এই দ্বিতীয় বৃহত্তম ও বর্ধিষ্ণু শহরটির অধিবাসীর অধিকাংশই ছিল নবদিক্ষিত মুসলিম বা বার্বার। নওমুসলিমরা সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারত না বলে তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। ফলে তারা খ্রিস্টান রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এই মুসলিম ও খ্রিস্টানদের সমর্থনে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ওবায়দা বিন হামিদ টলেডোতে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। প্রথম হাকাম বিচলিত হয়ে আলভিরার গভর্নর ইউসুফ বিন আমরুসকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের নির্দেশ দেন। যুদ্ধে বিদ্রোহীদের নিরস্ত্র করা হয় এবং ওবায়দা বিন হামিদ নিহত হন। টলেডোতে আমিরের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলেও নওমুসলিমরা বিদ্রোহ করতে থাকে। কবি গারবি এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন কিন্তু তার মৃত্যুর পর ইউসুফ বিন আমরুস তথায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় সফল হন। বারংবার বিদ্রোহ করার ফলে যে রাজনৈতিক অচলাবস্থা দেখা দেয় তা সমূলে উৎপাটন করার জন্য ইউসুফ বিন আমরুস একটি ফন্দি বের করেন। তার এ ফন্দি অনুযায়ী আমিরজাদা দ্বিতীয় আব্দুর রহমান টলেডোতে ৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে আগমন করলে তার সম্মানে টলেডোতে বিশিষ্ট নাগরিকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে কৌশলে তাদের হত্যা করে একটি পরিখাতে নিক্ষেপ করা হয়। তাদের সংখ্যা ৭০০ থেকে ৫,০০০ হতে পারে। এই নৃশংস হত্যাকে 'দি ডে অফ দি ডিচ' বলা হয়। এই ঘটনার পর ৭ বছর টলেডোতে কোনো বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়নি।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, আমির হাকাম একজন মহানুভব আমির ছিলেন। কিন্তু পরিখা বা খন্দকের ঘটনা তার রাজত্বকালের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। তা সত্ত্বেও বলা যায় তৎকালীন যুগে টলোডো ছিল বৃহত্তম বিদ্রোহের নগরী। তাই তিনি বিদ্রোহ দমনের জন্য এই নৃশংস পরিকল্পনা গ্রহণ করতে বাধ্য হন। তিনি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে হলেও টলেডোতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন।

Post a Comment

Previous Post Next Post