মুসা বিন নুসাইর সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর ভূমিকা: মুসা বিন নুসাইর ছিলেন একজন
বিখ্যাত যোদ্ধা। ইয়ামেনের অধিবাসী মুসা বিন নুসাইর মিসরের শাসনকর্তা আব্দুল আজিজ কর্তৃক
আফ্রিকার গভর্নর নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে খলিফা আল ওয়ালিদ ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে তাকে উত্তর
আফ্রিকার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। মুসা বিন নুসাইরের নির্দেশ এবং তারিক বিন জিয়াদের
নেতৃত্বে মুসলমানরা স্পেন জয় করেন এবং ইউরোপের মাটিতে পদার্পণ করেন।
মুসা বিন নুসাইর: নিম্নে মুসা বিন নুসাইর
সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১. পরিচয়: মুসা বিন নুসাইরের
প্রাথমিক জীবন সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। তবে তার পিতা ছিলেন খলিফা মুয়াবিয়া
(রা.) এর একজন সাহিব উল শুরতা বা পুলিশ প্রধান।
২. উত্তর আফ্রিকার শাসনকর্তার পদ লাভ:
মুসা
বিন নুসাইর মিসরের | শাসনকর্তা আব্দুল আজিজ কর্তৃক আফ্রিকার গভর্নর নিযুক্ত হন।
৩. উত্তর আফ্রিকার মুসলিম শাসন: শাসনকর্তা
নিযুক্ত হওয়ার পর মুসা বিন নুসাইর বার্বার ও বাইজান্টাইনদের দমন করে মরক্কো ও তাঞ্জিয়ারসহ
সমগ্র উত্তর আফ্রিকায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
৪. ভূমধ্যসাগরে মুসলিম আধিপত্য: মুসা বিন নুসাইর
৭১১ খ্রিস্টাব্দে মের্জকা ও সার্ডিনিয়াতে নৌবাহিনী প্রেরণ করেন। তিনি এই অঞ্চলের তিনটি
দ্বীপ জয় করেন। তাকে এ ক্ষেত্রে তারিক বিন জিয়াদ সাহায্য করেন।
৫. স্পেন বিজয়ে অবদান : খলিফা আল ওয়ালিদের
অনুমতিক্রমে মুসা বিন নুসাইর ৭১১ খ্রিস্টাব্দে তার সহযোদ্ধা তারিক বিন জিয়াদের নেতৃত্বে
স্পেনে অভিযান পরিচালনা করেন। তারিক বিন জিয়াদের সাফল্যের পর তিনি ৭১২ খ্রিস্টাব্দে
বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে স্পেনে আসেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন অঞ্চল অধিকার করেন।
৬. মৃত্যু : মুসা বিন নুসাইরের
শেষ জীবন ছিল খুব কষ্টের। তারিক বিন জিয়াদের প্রতি অন্যায় আচরণের ফলে তার সমস্ত সম্পত্তি
বাজেয়াপ্ত করা হয় ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। অবশেষে ৭১৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ
করেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা
যায় যে, ইসলামের ইতিহাসের একজন 'বিখ্যাত সমরকুশলী মুসা বিন নুসাইর ইউরোপ ও আফ্রিকাতে
মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য দেখান। যদিও তার পরবর্তী জীবন ছিল খুব
কষ্টের। তারপরও মুসা বিন নুসাইর তার বীরত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের জন্য ইসলামের ইতিহাসে
বিখ্যাত হয়ে আছেন।