আজ জোহরা প্রাসাদের বর্ণনা দাও।
অথবা, আজ জোহরা প্রাসাদের পরিচয় দাও।
অথবা, আজ জোহরা প্রাসাদ সম্পর্কে একটি
টীকা লেখ।
উত্তর ভূমিকা : শিল্পকলা ও সংস্কৃতির
পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তৃতীয় আব্দুর রহমানের যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। তার আমলে স্থাপত্য শিল্পের
চরম বিকাশ ঘটে। তিনি কর্ডোভার জামে মসজিদ পুননির্মাণ করেন। এছাড়াও তিনি বহু স্থাপত্যিক
নিদর্শন নির্মাণ করেন। তার অনন্য কীর্তি হলো আজ জোহরা প্রাসাদ নির্মাণ।
আজ জোহরা প্রাসাদ: নিম্নে আজ জোহরা প্রাসাদের
বর্ণনা উল্লেখ করা হলো-
১. নির্মাণ পটভূমি: তৃতীয় আব্দুর
রহমান তার পত্নী আজ জোহরার অনুরোধে তারই নামে এ প্রাসাদ নির্মাণ করেন। ৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের
অক্টোবর মাসে কর্ডোভার ৩ মাইল উত্তরে Hill of the Bride এর পাদদেশে এর নির্মাণ কাজ
শুরু করেন।
২. নির্মাণকাল: ৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে
আজ জোহরা প্রাসাদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সুদীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বার্ষিক আয়ের এক-তৃতীয়াংশ
প্রতিবছর ব্যয় করেও এর সমাপ্তি দেখে যেতে পারেন নি। পরবর্তীতে তার পুত্র দ্বিতীয় হাকাম
এর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন।
৩. নির্মাণ সামগ্রী ও কারিগর: তিনি এ প্রাসাদ
নির্মাণে ১০,০০০ কারিগর নিযুক্ত করেন। এটা নির্মাণে তিনি মূল্যবান পাথর, সাদা মার্বেল,
মনিকাঞ্চন, হীরামুক্তা প্রভৃতি ব্যবহার করেন। সুদূর আলমেরীয়া ও তারাগোনা থেকে মূল্যবান
প্রস্তর সংগ্রহ করেন।
৪. নির্মাণ পদ্ধতি: আজ জোহরা প্রাসাদ নির্মাণ পদ্ধতি ছিল খুবই চিত্তাকর্ষক। মনি-মুক্তাখচিত স্তম্ভরাজি ও অপূর্ব নকশা সংবলিত কাঠের বীম, মার্বেল ও স্ফটিক পাথরে নির্মিত স্তম্ভের ওপর বৃত্তাকার গম্বুজ, চৌবাচ্চা, ঝরনা, গজদণ্ড ও আবলুস কাঠের গবাক্ষ ছিল সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো। এ প্রাসাদের ফটকে সম্রাজ্ঞী আজ জোহরার একটি ভাস্কর্য ছিল।
উপসংহার: পরিশেষে বলা
যায় যে, ৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত আজ জোহরা প্রাসাদ স্থাপত্য শিল্পের অপূর্ব নিদর্শন।
সুন্দর ও সুরম্য পরিবেশ, রাজকীয় আড়ম্বর ও জাঁকজমক এবং স্থাপত্য কৌশল ও অলঙ্করণের দিক
দিয়ে নিঃসন্দেহে অতুলনীয়। এ প্রাসাদ এখনো বিশ্ববাসীকে তার সৌন্দর্যের মাধ্যমে বিমোহিত
করে।