শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি ?। শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি এর পূর্বের গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে?

 

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি

ভূমিকা:

আন্তর্জাতিক সমাজ ও রাজনীতি একটি গতিশীল বিষয়। নিয়তই পরিবর্তিত হচ্ছে গোটা বিশ্বব্যবস্থা। ঊনবিংশ শতকের তুলনায় বিংশ ও একবিংশ শতকের আন্তর্জাতিক রাজনীতির গতিপ্রকৃতি যথেষ্ট পরিমাণে পরিবর্তিত হয়েছে। ঊনবিংশ শতকে যে শক্তি-সাম্য ধারণাটি অপরিহার্য ছিল, বর্তমানে সময়ের পরিবর্তনে এই ব্যবস্থা পূর্বের গুরুত্ব অনেকটা হারিয়েছে। 

বিশেষত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আফ্রিকা ও অন্যান্য অঞ্চলে বহু নতুন রাষ্ট্রের আবির্ভাব, বিংশ শতকের নব্বইয়ের দশকে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের অবসান, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন ও দ্বিমেরু বিশ্বব্যবস্থার অবলুপ্তির পর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যে তত্ত্বটি একসময় ব্যাপক গুরুত্ব লাভ করেছিল, সময়ের পরিবর্তনে সেই তত্ত্বই আজ তার গুরুত্ব হারাতে বসেছে। কিন্তু বর্তমান বিশ্বরাজনীতি বিশ্লেষণ করলে আমরা একথা বলতে পারি যে এই তত্ত্বটি একেবারে অকার্যকর নয়।

Table of Contents

শক্তির ভারসাম্যের তত্ত্ব:

'Balance of Power' বা শক্তির ভারসাম্য-এর মূল কথা হলো সাম্যাবস্থা বা Equilibrium; যা সাধারণত দাঁড়িপাল্লা দিয়ে বর্ণনা করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তির ভারসাম্য বলতে বুঝায়, স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে এমন এক ধরনের সাম্যাবস্থা, যেখানে কোনো একক শক্তি বা শক্তির সমবায়কে এমন ক্ষমতাসম্পন্ন হতে দেয়া যায় না, যাতে অন্যদের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

Quincy Wright বলেন, "শক্তির ভারসাম্য হলো এমন একটি ব্যবস্থা যা প্রতিটি রাষ্ট্রের মধ্যে এমন বিশ্বাস সৃষ্টি করে, কোনো রাষ্ট্র আগ্রাসী হয়ে উঠলে তাকে অন্যান্য রাষ্ট্রের অপরাজেয় জোটের সম্মুখীন হতে হবে।"

Prof. Sidney B. Fay বলেন, "শক্তি-সাম্যের অর্থ হলো রাষ্ট্রীয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শক্তির এমন একটি সঠিক সাম্যাবস্থা, যা যেকোনো একটিকে বাধা দেবে এমন অধিক শক্তিশালী হতে, যাতে সে অপরের উপর তার ইচ্ছাকে জোর করে চাপিয়ে দিতে না পারে।"

Prof. Frankly-এর মতে, "শক্তি-সাম্য বলতে ভারসাম্যমুখী একটি প্রবণতাকে বোঝায়।"

Ernest Hass-এর মতে শক্তির ভারসাম্য বলতে আটটি ভিন্ন অর্থ বুঝায়। যথা-

ⅰ) Balance means the distribution of power

ii) Balance means equilibrium

iii) Balance meaning hegemony

iv) Balance meaning stability and peace

v) Balance means instability and war

vi) Balance meaning power politics

vii) Balance as implying a universal law of history

viii) Balance as a system and guide to policy making.

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে শক্তির ভারসাম্য তত্ত্বের গুরুত্বঃ

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তির ভারসাম্য তত্ত্বটি ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত ব্যবস্থা। অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত শক্তির ভারসাম্য যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। তখন এ তত্ত্ব বিশ্বশান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হতো।

সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড ম্যাকমিলান বলেন, "ভিয়েনা চুক্তি (Treaty of Vienna, 1815) থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আরম্ভকাল পর্যন্ত বিগত শতাব্দীতে বিশ্বশান্তি যে মোটামুটিভাবে অক্ষুণ্ণ ছিল, তার পেছনে শক্তির ভারসাম্যের যথেষ্ট অবদান ছিল।"

কিন্তু কালের বিবর্তনের ফলে জাতিসংঘের মতো সর্বজনস্বীকৃত সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থা গড়ে ওঠার ফলে বর্তমানে শক্তির ভারসাম্য তত্ত্বের গুরুত্ব পূর্বের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। বিশ্ব জনমত আজ এ তত্ত্বের যৌক্তিকতা ও অসারতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হল:

১. বিশ্ব সংস্থা 'জাতিসংঘের' উদ্ভব:

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বরাজনীতিতে আবির্ভাব ঘটে জাতিসংঘ নামক আন্তর্জাতিক সংস্থার, যা বর্তমানকাল পর্যন্ত একমাত্র বৈধ ও সর্বজনস্বীকৃত বিশ্ব সংস্থা। এই সংস্থার উদ্ভবের ফলে বিশ্বরাজনীতিতে একটি নতুন ধারার সূচনা হয়। ফলে শক্তির ভারসাম্য নীতির কার্যকারিতা পূর্বের তুলনায় হ্রাস পায়। জাতিসংঘ কর্তৃক 'যৌথ নিরাপত্তা' Collective Security ব্যবস্থা ও সব দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের নীতির ফলেও এই তত্ত্ব বর্তমানে গুরুত্ব হারাচ্ছে।

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি

২. জাতীয়তাবাদী ধারণার অবসানঃ

জাতীয়তাবাদী ধারণার সঙ্গে শক্তির ভারসাম্য ধারণাটিও জড়িত। জাতীয়তাবাদ ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য রাষ্ট্রসমূহ বিভিন্ন মৈত্রীজোট ও প্রতি মৈত্রীজোটে অংশগ্রহণ করত এবং এভাবেই শক্তির ভারসাম্য রক্ষা হতো। কিন্তু বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ও সার্বভৌমত্বের ধারণা ম্লান হতে চলেছে। বিশ্বব্যাপী চলছে বিশ্বায়নের ধারণা। তাই মানুষ এখন ক্ষুদ্র গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য ধারণা হ্রাস পেতে চলেছে।

৩. আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন মেরুকরণঃ

ষোড়শ শতাব্দী থেকে শুরু করে স্নায়ুযুদ্ধের সময় পর্যন্ত আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বিমেরুবাদের ভিত্তিতে শক্তির ভারসাম্য রক্ষিত হয়ে আসছিল।  অধ্যাপক মর্গেনথু এ প্রসঙ্গে বলেন, "ষোড়শ শতাব্দীর পর এটা বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় সমর্থ হয়েছে, কারণ তখন তারা হয় মৈত্রীজোট নতুবা প্রতি মৈত্রীজোটে একত্রে যোগদান করতে পারত।"

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি

কিন্তু ইনিস ক্লড আমাদেরকে দেখিয়েছেন যে, 'যুদ্ধকে ঠেকিয়ে রাখা অথবা দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর স্বাধীনতা রক্ষা করার ব্যাপারে শক্তি-সাম্য ব্যবস্থার রেকর্ড তেমন ভালো নয়। 

স্নায়ুযুদ্ধের সময় এবং বিশেষ করে এরপর বিশ্বের রাজনীতির নতুন মেরুকরণ ঘটেছে। জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা গড়ে উঠেছে। দ্বিমেরুবাদের অবসানের পর বিশ্বব্যবস্থায় কার্যত বহুমেরু প্রকৃতির শক্তির উদ্ভব ঘটেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন ও পরিবর্তিত এ মেরুকরণ শক্তির ভারসাম্য তত্ত্বকে অনেকটাই অকার্যকর করেছে।

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি

৪. নতুন আন্তর্জাতিক আইনঃ

বহু মেরুকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক রাজনীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনের উৎকর্ষ কিছুটা হলেও সাধিত হয়েছে। বিশ্বের মানুষ আজ জাতীয়তার বেড়াজাল ছিন্ন করে আন্তর্জাতিকতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আঞ্চলিকতা তথা জোট ও প্রতিজোট রক্ষার স্বার্থে যে সব আইন প্রচলিত ছিল, বর্তমানকালে তা পরিবর্তিত হয়ে একক বিশ্বব্যবস্থার উপযোগী হয়ে উঠছে। এই একক বিশ্বব্যবস্থার জন্যই নতুন আন্তর্জাতিক আইন তৈরি হচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক আইনের এ বাস্তবতা শক্তির ভারসাম্যের ধারণাটিকে অনেকটাই নিষ্প্রভ করেছে।

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি

৫. জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনঃ

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন শক্তির ভারসাম্য নীতির বিরোধী। এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় মূলত স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে। শক্তির ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে তখন রাষ্ট্রসমূহ হয় সমাজতান্ত্রিক না হয় পুঁজিবাদী শিবিরে যোগদান করত। সাধারণত নিজেদের পক্ষে দরকষাকষি করে লাভজনক শিবিরে যোগদান করত। 

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি
আর এ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হলো কোনো জোট বা শক্তির অন্তর্ভুক্ত না হয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নীতিতে অটল থাকা। স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো আজ নিজস্ব স্বতন্ত্র স্বাধীনতা নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়। আর এই বাস্তবতাই শক্তির ভারসাম্য তত্ত্বের গুরুত্ব দিন দিন কমিয়ে দিচ্ছে।

৬. শক্তি পরিমাপের অসুবিধা:

শক্তি একটি পরিবর্তনশীল প্রত্যয়। এ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রীয় শক্তির পরিমাণ অনুমান করা কষ্টকর বিষয়। আর সে কারণেই একটি রাষ্ট্র শক্তি-সাম্য অর্জন করেছে কি না তাও পরিমাপ করা যায় না। Nicholas J. Spykman বাস্তব দিক বিচার করে বলেন যে, "রাষ্ট্রসমূহ সেই শক্তি-সাম্যে আগ্রহী যা তাদের অনুকূলে থাকে। তাদের প্রধান লক্ষ্য সাম্যাবস্থা নয়, বরং সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা।" এই জন্য কোনো রাষ্ট্রের বা জোটের শক্তির পরিমাপ করা যেমন অসুবিধা, তেমনি এর গুরুত্ব ও হ্রাস পাচ্ছে।

৭. স্বনির্ভরতা অর্জন:

বিশ্বের প্রত্যেকটি স্বাধীন রাষ্ট্র চায় স্বনির্ভরতা অর্জন করতে। বিশেষ করে এই স্বনির্ভরতা অর্জনের মূল লক্ষ্য থাকে বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক মারণাস্ত্রের মাধ্যমে নিজের বা নিজেদের শক্তি অর্জনের মাধ্যমে। আর এজন্য বিশ্বের বহু রাষ্ট্রই বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কৌশলগুলো আয়ত্তে এনেছে। তাই বর্তমানে রাষ্ট্রগুলো ক্ষমতা খর্ব করে সাম্য আনার ব্যাপারে তেমন আগ্রহী নয় এবং দিন দিন এর ফলে শক্তির ভারসাম্য তত্ত্বটি গুরুত্ব হারাচ্ছে।

৮. আদর্শগত দ্বন্দ্বঃ

বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো আদর্শগত দ্বন্দ্ব। অতীতে আমরা দেখতে পাই আন্তর্জাতিক রাজনীতি জাতীয়তাবাদী চেতনা দ্বারা পরিচালিত হতো। কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আদর্শগত উপাদান এতই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, আদর্শ আজ জাতীয়তাবাদের স্থান দখল করে নিয়েছে।  আর আদর্শবাদী জাতিগুলোই আজ বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কাজেই শক্তির ভারসাম্যের গুরুত্ব অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

৯. বিশ্ব জনমতের প্রভাবঃ

বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় 'বিশ্ব জনমত' একটি শক্তিশালী উপাদান। আধুনিককালে কোনো রাষ্ট্রই বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করতে পারে না। পরপর দুটি বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা ও বড় যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করে এখন বিশ্বের প্রতিটি মানুষই যুদ্ধের ভয়াবহতা সম্পর্কে রীতিমতো আতঙ্কগ্রস্ত। তাই দেখা যায় কোনো রাষ্ট্র যদি আগ্রাসী হতে চায়, তাহলে তাকে নিজ দেশ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতিকূল জনমতের সম্মুখীন হতে হয়। এই কারণেও এই তত্ত্বটির গুরুত্ব হ্রাস পাচ্ছে।

১০. অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব:

বর্তমান বিশ্বে চলছে 'Globalization'-বা বিশ্বায়ন। এর মূল লক্ষ্য হলো এক বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠা করা এবং এর মূল চালিকাশক্তি হলো অর্থনীতি। বর্তমান আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অস্ত্র প্রতিযোগিতা পূর্বের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছে। অর্থনৈতিক শক্তি সেই স্থান দখল করে নিয়েছে। 

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি

তাই বৃহৎ রাষ্ট্রগুলো সামরিক প্রতিযোগিতার পথ ছেড়ে অর্থনৈতিক প্রাধান্য বিস্তারের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এখন বৃহৎ শক্তিগুলোর লক্ষ্য হলো শিল্পক্ষেত্রে জাপানসহ অগ্রসরমান দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা। আর অর্থনৈতিক প্রাধান্যের ক্ষেত্রে শক্তির ভারসাম্যকে গুরুত্ব দেয়া হয় না।

শক্তির ভারসাম্য তত্ত্ব কি

উপসংহার:

সুপ্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য শক্তির ভারসাম্যকে একটি ইতিবাচক উপায় হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে সময়ের পরিবর্তনে এর প্রকৃতিতেও পরিবর্তন সূচিত হয়। সময় পরিক্রমায় আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ক্ষমতার ভারসাম্য কিরূপ হবে গবেষকগণের তা বিবেচনার বিষয়। বিশেষ করে নব্বইয়ের দশকে স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের ফলে শক্তির ভারসাম্যে সূচিত হয়েছে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন।

বর্তমানকালে জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রের উদ্ভব এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের কারণে শক্তির ভারসাম্যের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেয়েছে। স্বতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষায় শক্তি-সাম্যের পরিবর্তে অন্য কোনো পদ্ধতির অনুসন্ধান প্রয়োজন। এটি গণতন্ত্রবিরোধী, জনকল্যাণমূলক অর্থনীতি এবং শক্তির পথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই সামরিক অস্ত্রশস্ত্রের মাধ্যমে শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার ধারণা এখন সেকেলে। 

অর্থনীতিই নিয়ন্ত্রণ করছে বর্তমান বিশ্বরাজনীতিকে। তাই মনে করা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অর্থনৈতিক জোট বা রাষ্ট্রীয় শক্তিশালী অর্থনীতির মাধ্যমেই অপর রাষ্ট্র বা জোটের কর্তৃত্বকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং অর্থনীতিই সৃষ্টি করবে শক্তির ভারসাম্য

 

Post a Comment

Previous Post Next Post