ইরানের
প্রতিশোধের আগুন যখন ইজরাইলের উপর ক্রমশ
ঘনিয়ে আসছে তখন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মনে বাসা বেধেছে কঠিন এক আতঙ্ক।
ইরানের এই প্রতিশোধের মূল লক্ষ্য হতে পারে তার নিজের ছেলে। যিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে
বসবাস করছেন।
সম্প্রতি
ইরান থেকে বিভিন্ন হুমকি এসেছে যেখানে ইজরাইল নেতৃত্ব এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের
লক্ষ্যবস্তু করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এই হুমকির কেন্দ্র বিন্দুতে আছে
নেতানিয়াহুর ছেলে ইয়াইর। তিনি ফ্লোরিডা
অঙ্গরাজ্যের মিয়ামিতে বসবাস করছেন।
নেতানিয়াহুর
উদ্বেগ শুধু ব্যক্তিগত নয় এটি একটি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় হিসেবেও দেখা হচ্ছে। ইসরায়েলি
সংবাদ মাধ্যম ওয়ালার বরাতে বুধবার আল মায়াদিন জানিয়েছে যে, নেতানিয়াহু মার্কিন সরকারের কাছে সরাসরি তার ছেলের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য
আবেদন করেছেন।
৩৩ বছর
বয়সী ইয়াইর ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ফ্লোরিডায় বসবাস করছেন। এই সময়ে ইজরায়েলি সরকারের
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিষেবা সিনবেত তার সুরক্ষার জন্য দায়িত্ব পালন করছে। এই সুরক্ষা
ব্যবস্থা অত্যন্ত ব্যয়বহ। প্রতিবছরে এই সুরক্ষার পেছনে প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন
ডলার খরচ হচ্ছে।
নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে ইজরায়েলী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের
মহাপরিচালক ইয়োসি শেলী সম্প্রতি নেতানিয়াহুর অনুরোধে
সিনবেতের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সাথে যোগাযোগ করেছেন। এটি একটি
অভ্যন্তরীণ উচ্চপর্যায়ের কমিটি যারা প্রধানত উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা
সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।।
একমাত্র ইরানের প্রতিশোধের আশঙ্কা নয় বরং সাম্প্রতিককালে মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনও এ ধরনের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলছে। সিনবেতের উপদেষ্টা কমিটি ইয়াইরের নিরাপত্তা বৃদ্ধির ন্যায্যতা প্রমাণের জন্য গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে ব্যস্ত।
তাদের
অনুমান ইরানের প্রতিশোধের অংশ হিসেবে বিদেশে থাকা ইসরায়েলি নেতৃত্বের পরিবার পরিজন
এবং তাদের সম্পদ লক্ষ্য বস্তু হতে পারে। এই ধরনের প্রতিশোধ মূলক হামলা কেবলমাত্র ইসরায়েলের
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নয় বরং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে।
এই ঘটনার
ফলে শুধু ইজরায়েল নয় মার্কিন প্রশাসনও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। নেতানিয়াহুর জন্য এটি শুধুমাত্র একটি নিরাপত্তা সংকট নয় বরং
এটি তার নেতৃত্বের ক্ষমতা এবং পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্বের একটি বড় পরীক্ষা।
ইজরায়েলি জনসাধারণ ও পরিস্থিতির প্রতি গভীর দৃষ্টি রাখছে এবং এর ফলে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক
অবস্থানের উপরও এর প্রভাব পড়তে পারে।