ফারাক্কা
ব্যারেজ শুধু বাংলাদেশের জন্যই বিপদজনক নয়। খোদ ভারতেরও গলার কাঁটা। এই ব্যারেজ
নিয়ে ভারতে আজও চলছে বহুবিধ আলাপ। তবুও
কোন এক বিশেষ কারণে ব্যারেজটিকে রেখে দিয়েছে ভারত সরকার। একে অনেকেই তুলনা করছে
নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার মত।
পশ্চিমবঙ্গের হুগলি নদীতে পলি জমার সমস্যা মোকাবেলার নাম করেই ফারাক্কা ব্যারেজ তৈরি করা হয়েছিল। ব্রিটিশ রাজ থেকে মুক্তি পাওয়ার কয়েক বছর পরই বুদ্ধিটি মাথায় আসে। কারণ হিসেবে দেখানো হয় ১৯৫০-৬০ দশকে নদীর তলদেশে প্রচুর পরিমাণে পলি জমা হয়ে কলকাতা বন্দরের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়াকে।
তবে এই ব্যারেজ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশের নদীগুলোর পানি প্রবাহ কমে যায় বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে নদীগুলো প্রায় শুকিয়ে যায়। যার ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলে মরুকরণ শুরু হয়েছে। এতে ফসল উৎপাদনের সংকট দেখা দেয় এবং পুরো অঞ্চলে পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটে।
ফারাক্কা ব্যারেজের প্রভাবে নদীর নিচু অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে যায় এবং বন্যা ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যা বাংলাদেশের কৃষি এবং বাস্তুতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
নীতিশ কুমার দাবি করেন ফারাক্কা ব্যারেজের কারণে গঙ্গায় বিপুল পরিমাণ পলি জমা হয়েছে যা বিহারকে প্রতি বছর বন্যার মুখে ফেলে দিচ্ছে। যদিও তিনি বাংলাদেশের ক্ষতির বিষয়টি রাজনৈতিক কারণে সরাসরি উল্লেখ করেননি।
ফারাক্কা ব্যারেজের বিরোধিতা শুধু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী করেননি ভারতের সাধারণ জনগণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণে নিবেদিত অ্যাক্টিভিস্টরাও এই বিষয়ে সোচ্চার। নমর্দা নদী বাঁচাও আন্দোলনের নেত্রী মেধা পাটকর এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যদি একটি বাঁধের প্রভাব ধ্বংসাত্মক হয় তবে সেটি ডি-কমিশন করা উচিত। তার বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, ফারাক্কা ব্যারেজের নেতিবাচক প্রভাব শুধু বাংলাদেশের নয় ভারতের নিজস্ব অঞ্চলেও প্রকটভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে।