বঙ্গোপসাগরে ভারতের দাদাগিরি শেষ। বাংলাদেশে নিয়ে চীন-মার্কিন টানাটানি

 

বঙ্গোপসাগরে ভারতের দাদাগিরি শেষ।  বাঙ্গলাদেশ নিয়ে চীন-মার্কিন টানাটানি

সেন্ট মার্টিন এর নিয়ন্ত্রণ চাই আমেরিকা। ক্ষমতায় থাকাকালীন বেশ কয়েকবার এমন অভিযোগ করেছেন ভারতে আশ্রিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি না মানায় আওয়ামীলীগ নেত্রীকে সারানোর ষড়যন্ত্রে কলকাঠি নেড়েছে ওয়াশিং।  ৫ ই আগস্ট এর আগে ও পরে নানা সময়ে উঠে এসেছে এমন গুঞ্জন।

স্বৈরাচারী নেত্রীকে সমর্থনে ভারতের কপাল পুড়লেও ব্যাপক হারে বাড়ছে চীনের সুযোগ।  এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে পরাশক্তি গুলোর অতি আগ্রহ কিভাবে সামাল দেবে বাংলাদেশ। ভৌগলিক দিক থেকে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেন্ট মার্টিনের অবস্থান?

চীনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান তৈরিতে বঙ্গোপসাগরে মার্কিনীদের প্রয়োজন সামরিক ঘাঁটি।  ২০০৪ সালে গ্লোবাল ডিফেন্স পোস্টাল রিভিউ পরিকল্পনা গ্রহণের পর থেকে ইন্দো প্যাসিফিকে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের সুযোগ খুজছে পেন্টাগন। এমন তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ইউরেশিয়া টাইমস।

বাংলাদেশে নিয়ে চীন-মার্কিন টানাটানি


কিছু পর্যবেক্ষকের ধারণা মূলত চীনের ওপর নজরদারীর জন্যই মালাক্কা প্রণালীর নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।  সেক্ষেত্রে আরব সাগর আন্দামান
 ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগর হতে পারে আদর্শ জায়গা। যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরে ঘাটি স্থাপন করতে পারলে চীনের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারির সহজ সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবে।   

সামরিক দিক দিয়ে মার্কিনিরা এই দেশে পা রাখতে পারলে বেইজিং এর বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে গড়ে তুলতে পারবে একটি শক্তিশালী অবস্থান।  বঙ্গোপসাগরে ঘাটি স্থাপন করা গেলে সেখান থেকেই যুক্তরাষ্ট্র নজর রাখতে পারবে চীনের 60 ভাগ বাণিজ্যের পথের উপর। সম্প্রতি ইউএস নেভাল ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।  

বাংলাদেশের সাথে ভারতের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে হাসিনা সরকারের উপরে নাখোশ ছিল চীন। তবে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে গেছে বেইজিং। দিল্লির আপত্তি সত্ত্বেও ঢাকার অন্যতম বড় বাণিজ্য সহযোগি পরিণত হয়েছে চীন।


২০২৩ সালে প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান অনুসারে বাংলাদেশের চলমান রয়েছে অন্তত ২৫ টি  চীনা প্রকল্প। এই মধ্যে ৯ টি  বৃহৎ প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ ৮৯.৮ বিলিয়ন ডলার। সরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি বাংলাদেশে ব্যাপক হারে বেড়েছে চীনা বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ। 

বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের উপকূল ঘেঁষে অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের ভৌগোলিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্ব খুব একটা  বেশি না এমনটাই মনে করেন অনেক বিশ্লেষক।  তবে সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গোপসাগরের পুরো অঞ্চল জুড়ে চীনের আধিপত্য ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।  যার ফলে চীন বিরোধী সকল পক্ষের কাছে বৃদ্ধি পেয়েছে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব।

বাংলাদেশে নিয়ে চীন-মার্কিন টানাটানি
অন্যদিকে পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা ওয়াশিংটন নয়া দিল্লির  মাঝে বন্ধুত্ব থাকলেও এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি জোরালো হলে ধীরে ধীরে কমতে থাকবে ভারতের আধিপত্য।

বিশ্বের ৮০ টি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে ৮০০ টিরও বেশি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।  মিত্র দেশের রাজনীতিতে নাক গলানোর পেছনে এসব ঘাঁটির থাকে বিশেষ ভূমিকা। হাসিনার পতনের পর থেকেই শীতল হয়ে উঠছে ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্ব।  সেই শূন্যতা পূরণে শীঘ্রই নড়েচড়ে বসবে চীন।  

বঙ্গোপসাগরে মার্কিন ঘাঁটি  নিয়ে পুরনো গুঞ্জন  সামনে এলেও আমেরিকার পক্ষ থেকে এখনো দেখা যায়নি কোন রকম তৎপরতা।  তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিটি পদক্ষেপে বাংলাদেশকে থাকতে হবে অত্যন্ত সতর্ক।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post