হজের ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

হজের ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম হজ। পবিত্র ঘর কাবাকে কেন্দ্র করে আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভের জন্য মুসলিমগণ অত্যন্ত ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে যেসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তাকে হজ বলা হয়। হজ দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত। এটি বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন। সামাজিক শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায় হজের গুরুত্ব অপরিসীম।

Table of Contents

হজের ধর্মীয় গুরুত্ব: 

নিম্নে হজের ধর্মীয় গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলো:

১. আল্লাহর নির্ধারিত ফরজ ইবাদত: সালাত, সাওম, জাকাত ইত্যাদির মতো হজও একটি ফরজ ইবাদত। যদি কোনো সক্ষম ব্যক্তি হজ আদায় না করে তাহলে সে গুনাহগার হবে। হজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।


২. ক্ষমা লাভ: যে ব্যক্তি হজব্রত পালন করে আল্লাহ তায়ালা তার সব গুনাহ মাফ করে দেন এবং সে নবজাতকের ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে যায়। এ সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, পানি যেমন ময়লা আবর্জনা ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়, হজও তদ্রূপ গুনাহ ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়।

৩. ধর্মীয় বিশ্বাস দৃঢ়করণ: হজ ধর্মীয় বিশ্বাসকে বলিষ্ঠ ও সুদৃঢ় করে। হজ পালনকালে স্বচক্ষে আল্লাহর সব নিদর্শন অবলোকন করলে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর প্রতি তার বিশ্বাস সুদৃঢ় হয়।

হজের সামাজিক গুরুত্ব: 

নিম্নে হজের সামাজিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলো:


১. ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রতকরণ: হজ দেশ, ভাষা ও বর্ণের সীমানা পেরিয়ে আদর্শিক ভ্রাতৃত্ববোধকে জাগ্রত করে। এ ইবাদতের প্রতিটি কার্যক্রম পালনের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বের মুসলিম একটি অখণ্ড ভ্রাতৃসংঘ ও উম্মত হিসেবে গড়ে ওঠে।

২. সম্প্রীতি আদানপ্রদান: হজের মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিমের মধ্যে ভাবের আদানপ্রদান হয়। অবাধ মেলামেশার সুবাদে তাদের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে ওঠে।

৩. শৃঙ্খলাবোধের উন্মেষ: সারা বিশ্বের লাখ লাখ মুসলিম হজের প্রতিটি অনুষ্ঠান পালনের সময় এক অপূর্ব শৃঙ্খলা ও নিয়মতান্ত্রিকতার পরিচয় দেয়, যা পরবর্তীতে সুশৃঙ্খলভাবে চলতে তাদের সহায়তা করে।


৪. ত্যাগের মহান শিক্ষা: হজ পালনকারী ব্যক্তি বিভিন্ন আমলের মাধ্যমে ত্যাগের মহান শিক্ষা লাভ করে থাকেন। ফলে আল্লাহর দিন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জানমাল কুরবানি করতে তারা প্রস্তুত হয়।

পরিশেষে বলা যায় যে, মহান আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভের পন্থাগুলোর অন্যতম পবিত্র হজ পালন করা। মানুষ হজ পালনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ে মক্কা নগরীতে গমন করে। হজ পালনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও - সান্নিধ্য লাভ করা যায় এবং মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। হজের ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post