মার্কসীয় নারীবাদ কী? মার্কসীয় নারীবাদ সমালোচনাসহ বিশ্লেষণ কর।
মার্কসীয় নারীবাদ :
মার্কসীয় নারীবাদ
পরিবার,
পুরুষতন্ত্র শ্রেণি ইত্যাদি আলোচনার মাধ্যমে নারীর অবস্থান ও
নারীমুক্তির উপায় সম্পর্কে বর্ণনা করে। এঞ্জেলস কর্তৃক রচিত 'The Orgin of
the Family Property and the State' গ্রন্থটিতে মার্কসীয় নারীবাদ সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। মূলত মার্কসীয়
নারীবাদ নিম্নোক্ত মূলনীতিতে বিশ্বাস করে।
১. অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিবারের
(Rarity) অস্তিত্ব অগ্রহণযোগ্য।
পরিবারের তথাকথিত আর্থিক ভিত্তি ধ্বংস করে প্রেমপ্রীতি ভালোবাসার ভিত্তিতে পরিবারকে
পুনর্গঠন করতে হবে।
২. মার্কসীয় নারীবাদ মনে করে নারীকে
কলকারখানায়, অফিস-আদালতে কর্মগ্রহণ করে অর্থনৈতিক
স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে।
৩. নারীর অর্থনৈতিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক
স্বাধীনতা নারীমুক্তির পূর্বশর্ত।
৪. গৃহকর্ম ও সন্তান পালন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সামাজিকভাবে সংগঠিত করতে হবে। সমাজ গৃহকর্ম ও সন্তান পালন অধিগ্রহণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত সেবা শিল্পে পরিণত করতে হবে।
সুতরাং মার্কসের নতুন সমাজব্যবস্থা
নারীর প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে। নারীর ওপর পুরুষের কর্তৃত্ব বা শাসন বিলুপ্ত হবে।
নারী হবে মুক্ত ও স্বাধীন। নারী ও পুরুষ সকলে পরস্পর মিলে এমন সামাজিক কাঠামো এবং সামাজিক
ভূমিকা গড়ে তুলবে, যার ফলে নারী ও পুরুষ
সকলে নিজ নিজ মানবিক সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনে সক্ষম হবে।
মার্কসীয় নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :
কার্ল মার্কসের আদর্শকে কেন্দ্র করে
যে নারীবাদী তত্ত্ব গড়ে উঠেছে তা মার্কসীয় নারীবাদ হিসেবে পরিচিত। মার্কসীয় নারীবাদীরা
নারীবাদের ব্যাখ্যায় মার্কসের ঐতিহাসিক দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদী ব্যাখ্যা প্রয়োগ করেন
এবং নারী নিপীড়নের কারণের সাথে উৎপাদনের সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন।
মার্কসীয় নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ
নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
১. মার্কসীয় নারীবাদ পরিবারের পুরুষতান্ত্রিক
আর্থিক ভিত্তি ধ্বংস করে নারীকে পাবলিক সেক্টরে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রদানে বিশ্বাসী
।
২. মার্কসীয় নারীবাদের মূল লক্ষ্য
হলো লিঙ্গভিত্তিক অসমতা দূর করে একটি শোষণহীন এবং শ্রেণিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
৩. মার্কসীয় নারীবাদ নারীর গৃহশ্রমের
আর্থিক মূল্য নির্ধারণে বদ্ধপরিকর।
৪. মার্কসীয় নারীবাদ পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থা
উচ্ছেদ করে নারীকে ভোগ্যপণ্য হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে চায় ।
মার্কসীয় নারীবাদের বৈশিষ্ট্য :
মার্কসীয় নারীবাদ বিশ্লেষণ করলে নিম্নোক্ত
বৈশিষ্ট্যসমূহ স্পষ্ট হয়ে ওঠে-
১. মার্কসীয় নারীবাদ পুরুষতন্ত্রের
বিলুপ্তির মাধ্যমে নারীমুক্তির কথা বলে।
২. মার্কসীয় নারীবাদ পুঁজিবাদী ব্যবস্থার
অবসান চায় ।
৩. মার্কসীয় নারীবাদ নারীর সন্তান
লালনপালনের দায়িত্ব সমাজের ওপর অর্পণ করে নারীকে মুক্ত রাখতে চায়।
৪. মার্কসীয় নারীবাদ নারীমুক্তির
জন্য সর্বহারার একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠার প্রয়াসী।
৫. মার্কসীয় নারীবাদ সামাজিক তথা
রাষ্ট্রীয় উৎপাদনে নারীকে অন্তর্ভুক্তিকরণের মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রদানে
বিশ্বাসী।
৬. মার্কসবাদী নারীবাদ পরিবার প্রথারও
উচ্ছেদ কামনা করে।
মার্কসীয় নারীবাদের সমালোচনা :
মার্কসবাদ পুঁজিবাদী বিশ্বে সবচেয়ে ঘৃণিত মতবাদ। ফলে একবিংশ শতাব্দীর এ পুঁজিবাদকেন্দ্রিক গণতান্ত্রিক বিশ্বে মার্কসীয় নারীবাদ বিভিন্ন সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। নিম্নে মার্কসীয় নারীবাদের সমালোচনাসমূহ উল্লেখ করা হলো :
প্রথমত, মার্কসীয় নারীবাদ মনে করে সম্পত্তির রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক
মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হলে পিতৃতন্ত্রের অবসান ঘটবে। কিন্তু বাস্তবে তা প্রযোজ্য নয়।
কেননা যারা ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিক নয় সেই সর্বহারা শ্রেণির পুরুষের মধ্যেও পিতৃতান্ত্রিক
মনোভাব বজায় থাকতে পারে ।
দ্বিতীয়ত, মার্কসবাদীরা মনে করে শ্রেণিগত ব্যবধান দূর হলে এবং নারীরা শ্রমশক্তিতে
পরিণত হলে ধীরে ধীরে নারীমুক্তি সম্ভব হবে। কিন্তু তাদের এ ধারণা ভুল। কেননা মার্কসবাদের
আদর্শে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে নারীরা পুরুষতন্ত্রের অধীনেই থেকে যাচ্ছে।
তৃতীয়ত, মার্কসীয় নারীবাদে পুঁজিপতি বা বুর্জোয়া শ্রেণির শোষণের ওপর
যতটা গুরুত্বারোপ করা হয়েছে ততটা পুরুষ কর্তৃক নারী শোষণকে ভাবা হয়নি। অর্থাৎ পুরুষতন্ত্রকে
ততটা গুরুত্ব প্রদান করা হয়নি।
চতুর্থত, অনেক তাত্ত্বিকই মনে করেন যে, মার্কসবাদ নারীর পারিবারিক নির্যাতনের যথাযথ কারণ ও প্রতিকার নির্ণয়ে ব্যর্থ হয়েছে।
জিডি হার্টম্যান তাই বলেন, “নারীরা কেন পরিবার
এবং পরিবারের বাইরের জগতে অধস্তন ভূমিকা পালন করে এ ব্যাপারে মার্কসীয় নারীবাদীরা
সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি"।
পঞ্চমত, মার্কসীয় নারীবাদ বলতে সমগ্র মানবজাতির (নারী- পুরুষ) মুক্তির
কথা বলেছেন; কিন্তু আধুনিক নারীবাদীরা নারীমুক্তি
বলতে পুরুষের নিপীড়ন থেকে নারীকে মুক্ত করার কথা বলেছেন। বস্তুত পুরুষশ্রেণি বিলুপ্ত
হলেই যে নারীরা মুক্তি পাবে তা সর্বাংশে সঠিক নয়।
ষষ্ঠত, মার্কসবাদীরা নারীর শ্রমকে গুরুত্ব প্রদান করলেও গৃহশ্রমকে ততটা
গুরুত্ব প্রদান করেনি বলে আধুনিক নারীবাদীরা মনে করেন।
সপ্তমত, মার্কসবাদী নারীবাদীরা বিবাহ তথা পরিবারকে নারী অধীনতার একটি
প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং এর উচ্ছেদ কামনা করেন। কিন্তু মানবসভ্যতার
অব্যাহত অস্তিত্বের জন্য বিবাহ ও পরিবার প্রথা অত্যাবশ্যকীয় ।
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, মার্কসীয় নারীবাদ বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছে। বিভিন্ন মতবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে, মার্কসীয় নারীবাদের বিরুদ্ধেও তেমনি সমালোচনা রয়েছে। তবে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য এখনও মার্কসবাদ শক্তিশালী ও কার্যকর। তবে নারী আন্দোলনে ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় মার্কসীয় মতবাদও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
নারীবাদ ও মার্কসবাদের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনা কর।
কার্ল মার্কস একটি শ্রেণিহীন শোষণমুক্ত মানবসমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে তার যাপিত জীবনের যে ধারণা ও তত্ত্বের অবতারণা করেন তার সমষ্টিই মার্কসবাদ হিসেবে পরিচিত। মার্কসবাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা। নারীবাদীরাও সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার কথা বলে। এদিক থেকে নারীবাদ ও মার্কসবাদের একটা সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়।
নারীবাদ ও মার্কসবাদের সম্পর্ক :
নারীবাদ ও মার্কসবাদের উভয় মতাদর্শই
বৈষম্যমূলক সমাজ উচ্ছেদ করে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী । তাই বলা যায়, নারীবাদ ও মার্কসবাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। নিম্নে
নারীবাদ ও মার্কসবাদের সম্পর্ক তুলে ধরা হলো :
নারীবাদ ও মার্কসবাদের সাদৃশ্য :
নারীবাদ ও মার্কসবাদের মধ্যে যেসব
ক্ষেত্রে সাদৃশ্য রয়েছে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১. উভয় আন্দোলনই মনে করে শোষণই বৈষম্যের
জন্মদাত্রী ।
২. উভয় মতবাদই শ্রেণিহীন ও বৈষম্যহীন
সমাজ প্রতিষ্ঠার আলোচনা করে।
৩. নারীবাদ নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর
করে সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে চায়। অপরদিকে, মার্কসবাদও পুঁজিবাদী মুনাফা কেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থার মূলোৎপাটন করে একটি কল্যাণমূলক
সমাজ গঠন করতে চায়।
৪. উভয় মতবাদই মনে করে মানবসমাজে
যে বৈষম্য বিদ্যমান তা প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়নি পুঁজিবাদী পুরুষতান্ত্রিক সমাজই
তাদের নিজেদের স্বার্থে এ বৈষম্য গড়ে তুলেছে।
৫. মার্কস যেমন মানুষ কর্তৃক মানুষের শোষণের কথা বলে তা দূর করতে চেয়েছেন, নারীবাদী দার্শনিকরাও ঠিক তেমনি পুরুষ কর্তৃক নারীর শোষণের কথা বলে তা দূর করে লিঙ্গভিত্তিক সমতা আনয়নের কথা বলেছেন।
৬. নারীবাদ নারী-পুরুষকে যেমন সমান চোখে দেখে ঠিক তেমনি মার্কসবাদেও নারী-পুরুষে কোনো পার্থক্য নিরূপণকরা হয় না।
৭. উভয় মতবাদই সম্পদের সুসম বণ্টনের
জন্য আন্দোলনরত।
৮. উভয় মতবাদই গড়ে উঠেছে শিল্পোন্নত
পুঁজিবাদী দেশগুলোর গর্ভ থেকে। অর্থাৎ তাদের (পুঁজিবাদী দেশগুলোর) শোষণই নারীবাদ ও
মার্কসবাদ বিকাশে সহায়তা করেছে।
১৯. মার্কস ও এঞ্জেলস উভয়ই পুঁজিবাদকে
নারী নিপীড়নের মূল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। নারীবাদীরাও তেমনটিই উল্লেখ করেন ।
১০. মার্কসবাদের মূল মর্মবাণী 'শোষণহীন সমাজ' বা 'শ্রমবিভাগমুক্ত শ্রেণিহীন-রাষ্ট্রহীন' সাম্যবাদী সমাজের সঙ্গে নারীবাদের কোনো বিরোধ নেই ।
১১. নারী বলেই তারা দুর্বল ও শোষিত
একথা মার্কসবাদীরা মানতে নারাজ । নারীবাদীরাও ঠিক এরূপ মনে করেন।
নারীবাদ ও মার্কসবাদের বৈসাদৃশ্য :
নারীবাদ ও মার্কসবাদের মধ্যে উপযুক্ত সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও নারীমুক্তি ও মানবমুক্তির প্রশ্নে উভয় মতবাদের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, যা নিম্নে তুলে ধরা হলো :
১. বিদ্যমান সমাজতান্ত্রিক সমাজে উৎপাদন
ক্ষেত্রের শোষণ উচ্ছেদকেই পারিবারিক ক্ষেত্রে শোষণ উচ্ছেদের সমার্থক বলে চালিয়ে দেওয়ার
অতি উৎসাহী মার্কসবাদী প্রোপাগান্ডা চালানো হয় । এদিক থেকেও নারীবাদের সঙ্গে মার্কসবাদের
মতপার্থক্য রয়েছে । তবে একথা সত্য যে, মার্কসবাদীরা সব ধরনের শোষণ ও ক্ষমতা বৈষম্যের চূড়ান্ত অবসান কামনা করেন ।
২. মার্কসবাদ মতে ব্যক্তিগত সম্পত্তি
থেকেই সব শোষণ- পীড়নের সৃষ্টি । তাই এ সম্পত্তি ব্যবস্থা বিলুপ্ত করলেই নারী নিপীড়নও
শেষ হওয়ার কথা; কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন বা চীনে তার
প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে কারণে আধুনিক নারীবাদী তাত্ত্বিকরা সম্পত্তির উচ্ছেদ নয়, বরং সম্পত্তিতে নারীর অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতেই বেশি প্রতিজ্ঞ
।
৩. নারীবাদ পুরুষতন্ত্রের বিলোপ সাধনের
ওপর বেশি জোর দেওয়ার পক্ষে। কিন্তু মার্কসবাদী বিশ্লেষকরা পুরুষতন্ত্রকে অতটা গুরুত্ব
প্রদান করেন না। নারীবাদীদের মতে, পুরুষতন্ত্রের বস্তুগত
ভিত্তি আছে যার মধ্য দিয়ে পুরুষরা পরস্পর ঐক্যবদ্ধ হয়ে নারীর ওপর নির্যাতন চালায়
।
৪. নারীমুক্তিকে মার্কসবাদীরা সবসময়
মানবমুক্তির তথা নারী ও পুরুষ উভয়ের মুক্তির অংশ হিসেবে মনে করেন। কিন্তু আধুনিক নারীবাদীরা
নারীমুক্তিকে পুরুষের প্রভুত্ব থেকে নারীর মুক্তি হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত। তাই তারা সবসময়
নারীমুক্তিকে একটি স্বাধীন ও ‘অটোনোমাস' (Autonomous) আন্দোলন হিসেবে দেখতে চান।
৫. লিভিয়া সার্জেন্ট সম্পাদিত 'ওমান অ্যান্ড রেভ্যুলিউশন এ ডিসকাশন অব দ্য আনহ্যাপি ম্যারেজ
অব মার্কসিজম অ্যান্ড ফেমিনিজম' শীর্ষক গ্রন্থে বলা
হয়েছে উনিশ শতকে নারীমুক্তি আন্দোলনের সঙ্গে মার্ক্স-এঙ্গেলসের যুক্ত হওয়ার সুযোগ
থাকলেও তারা তাতে যুক্ত হননি, নারী অধিকারের সঙ্গে তারা সমাজতন্ত্রের তেমন
যোগাযোগ খুঁজে পাননি। মার্কস পুঁজিবাদ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তার যে নিয়ম, প্রবণতা, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার
কথা বলেছেন, তাতেও যে নারীবাদীরা বিভ্রান্ত হয়েছেন
তা বুঝা যায় শ্রমশক্তিতে নারীর অন্তর্ভুক্তি ও নারীর গৃহকাজের মূল্য সম্পর্কে আলোচনার
মাধ্যমে।
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা
যায় যে,
বিদ্যমান সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তনের প্রয়োজন যারাই অনুভব করেছে বা
করেন,
তাদেরই মতাদর্শ হিসেবে মার্কসবাদকে ধর্তব্যের মধ্যে আনতে হয়।
কারণ বিদ্যমান সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তনের জন্য এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী মতাদর্শিক
দিকনির্দেশনা মার্কসীয় বিশ্লেষণ পদ্ধতি থেকেই পাওয়া যায় এবং দেশে দেশে বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ ও শ্রেণি নিপীড়নের
বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর জোড়ালো কণ্ঠ মার্কসবাদীদেরই।