উপসংস্কৃতির কি? বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতি কী? বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।শহুর বা নগর সংস্কৃতি কি.


উপসংস্কৃতির কি? বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতি কী? বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।শহুর বা নগর সংস্কৃতি কি.

উপসংস্কৃতির কি? বাংলাদেশের কতিপয় উপসংস্কৃতি সম্পর্কে লেখ।

আধুনিক 'সংস্কৃতি' সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উপসংস্কৃতি। বিশ্বের সর্বত্রই এরূপ উপসাংস্কৃতিক বিষয় রয়েছে। সমাজবিজ্ঞানীরা সমরূপ সংস্কৃতির মধ্যস্থিত পার্থক্য নির্ণয়ে এরূপ উপসংস্কৃতি, প্রতিসংস্কৃতি প্রভৃতির ধারণা ব্যবহার করেছেন। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির জীবনধারায় স্বাতন্ত্র্যতা বা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এই স্বাতন্ত্র্য্যতাই হলো উপসংস্কৃতি ।

উপসংস্কৃতি কি:


উপসংস্কৃতি কি:

উপসংস্কৃতি বলতে সাধারণত বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত একটি ক্ষুদ্রতর সংস্কৃতিকে বুঝায় । অন্যভাবে বলা যায় উপসংস্কৃতি হচ্ছে বৃহত্তর সমাজের বিশেষ শ্রেণি বা গোষ্ঠীর নির্দিষ্ট ক্ষুদ্র পরিসর বিশিষ্ট্য সংস্কৃতি এ সংস্কৃতি মূল বা বৃহৎ সংস্কৃতি থেকে স্বতন্ত্র হওয়ার দরুনই চিহ্নিত হয়ে থাকে।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা:

মনীষী ডেভিড ড্রেসলার  এর ভাষায়, প্রধান বা প্রাধান্য বিস্তারকারী সংস্কৃতি ও অন্যান্য উপসংস্কৃতি হতে উপসংস্কৃতিকে ভাষা, পরিচ্ছদ, খাদ্য, বিশেষ ধারাসমূহ এরূপ বৈশিষ্ট্য থেকে পৃথক করা হয়।

Collins Dictionary Sociology এর সংজ্ঞানুযায়ী, উপসংস্কৃতি হচ্ছে যেকোনো বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও আদর্শের ব্যবস্থা, সেগুলো কোনো বিশেষ সংস্কৃতির মধ্যস্থিত মর্যাদাপূর্ণ সংখ্যালঘিষ্ঠ জনগণ কর্তৃক অংশীদারিত্ব ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা হয়। সমাজবিজ্ঞানী জেরি এবং জেরি

মনীষী ডানকান মিচেল (D. Mitchel) এর কথায়, "A sub- culture is generally taken to mean a section of national culture." অর্থাৎ, উপসংস্কৃতি বলতে সাধারণত বুঝায় জাতীয় সংস্কৃতির একটি অংশ।

সমাজবিজ্ঞানী সাদারল্যান্ড, উডওয়ার্থ, ম্যাক্সওয়েল এর সংজ্ঞানুযায়ী "উপসংস্কৃতিকে একটি এককরূপে বর্ণনা করে বলেন,"


বাংলাদেশের কতিপয় উপসংস্কৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

বাংলাদেশে সংস্কৃতি বলতে গ্রামীণ ও শহরে সংস্কৃতিকে বুঝায়। এর বাইরে কতিপয় উপসংস্কৃতি বিদ্যমান রয়েছে। এগুলো মূল সংস্কৃতির বাইরে। বাংলাদেশের প্রধান প্রধান উপসংস্কৃতি হলো হিজড়া সংস্কৃতি, উপজাতীয় সংস্কৃতি, অপরাধ সংস্কৃতি, বেদে সংস্কৃতি, ধনী সংস্কৃতি, কিশোর অপরাধ সংস্কৃতি, ভাষাগত সংস্কৃতি, পেশাগত সংস্কৃতি প্রভৃতি।

 

বাংলাদেশের কতিপয় উপসংস্কৃতি: নিম্নে বাংলাদেশের কতিপয় উপসংস্কৃতি উল্লেখ করা হলো


১. উপজাতীয় সংস্কৃতি:

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের উপজাতির বসবাস বয়েছে। এদের মধ্যে চাকমা, গারো, সাওতাল, অন্যতম। প্রত্যেক উপজাতির রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। এরা সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করে । প্রতিটি উপজাতির রয়েছে স্বতন্ত্র জীবনধারা।

২. হিজড়া সংস্কৃতি:

হিজড়া সম্প্রদায় আমাদের জাতিসত্তারই একটি অংশ। তারা আমাদের মতো সাধারণ মানুষ হলেও ভিন্ন লিঙ্গের কারণে স্বতন্ত্র মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এরা সম্মিলিতভাবে বসবাস করে এবং গান ও পথনাট্যের মাধ্যমে হাটবাজারে গিয়ে অথবা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বতন্ত্র অভিনয়ের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অর্থ উপার্জন করে 

৩. বেদে সংস্কৃতি:

বেদেরা ছিন্নমূল জীবনের অধিকারী। এদের স্থায়ী কোনো বাড়িঘর নেই। এরা সাপ খেলা, বানর খেলা, তন্ত্রমন্ত্র ও বিভিন্ন তাবিজকবচ বিক্রি করে জীবন নির্বাহ করে। দারিদ্রপীড়িত বেদে সম্প্রদায় আমাদের উপসংস্কৃতির অংশ। সারা বছর এরা জীবিকার তাগিদে দেশের এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে গমন করে ।

৪. মূল সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্য আনয়ন:

উপসংস্কৃতি সমাজের মূল সংস্কৃতির সাথে সংশ্লিষ্ট থাকে। উপসংস্কৃতির সদস্যরা মূল সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয় না। তারা নিজেদের মূল্যবোধ এবং আচার আচরণ বজায় রেখেই উপসংস্কৃতি চর্চা করে।

৫. সংস্কৃতি সমৃদ্ধশালীকরণ:

উপসংস্কৃতি সমাজের মানুষের সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধশালী করে। সমাজের মানুষের ভাষা, পোশাক পরিচ্ছদ, খাদ্য, উৎসব, অনুষ্ঠান, খেলাধুলা প্রভৃতি উপসংস্কৃতি সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধশালী করে। উপসংস্কৃতি মূল সংস্কৃতিতে বৈচিত্র্য আনয়ন কর।

৬. আচরণের পার্থক্য নির্দেশ:

উপসংস্কৃতি সমাজ অভ্যন্তরেই মানুষের আচরণের পার্থক্য নির্দেশ করে। উপসংস্কৃতির আচরণ মূল সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন হওয়ায় সামাজিক আচরণে পার্থক্য আনয়ন প্রভাব বিস্তার করে থাকে।

৭. সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসে সহায়তা:

উপসংস্কৃতিকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত বা শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। সমাজস্থ স্তরায়িত উপসংস্কৃতি, পেশা ও বৃত্তিধারীদের উপসংস্কৃতি, উপজাতির সংস্কৃতি, সমাজবিচ্যুত ও অপরাধীদের সংস্কৃতি, শিল্পী, কবি সাহিত্যিকদের সংস্কৃতিকে বিভিন্ন শ্রেণিবিন্যাসে সহায়তা করে উপসংস্কৃতি ।


পরিশেষে বলা যায় যে, উপর্যুক্ত উপসংস্কৃতি ছাড়াও আমাদের দেশে আরও যেসব উপসংস্কৃতির প্রচলন রয়েছে সেগুলো হলো নৃত্যশিল্পীদের সংস্কৃতি, পতিতাদের সংস্কৃতি, কবি, সাহিত্যিক সংস্কৃতি। এসব সংস্কৃতি উপসংস্কৃতিরই অংশ। উপসংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত সদস্যরা নিজেদের মাঝে একই ধরনের আদর্শ ও মূল্যবোধ অনুসরণ করে এবং তারা একই ধরনের বিশ্বাসে বিশ্বাসী, যা বৃহত্তর সমাজ হতে বিভিন্ন মাত্রায় পৃথক হয়ে থাকে ।


বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতি কী? বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।

বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতি কী? বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।

মানুষের যাবতীয় ভাবগত ও বস্তুগত বিষয়সমূহ যেগুলো দৈনন্দিন জীবনযাপন ও সৃষ্টিশীলতার জন্য অপরিহার্য তাই সংস্কৃতি। সংস্কৃতির উপাদানগুলো হলো জ্ঞানগত উপাদান, বিশ্বাস, আদর্শ ও মূল্যবোধ, সংকট, আচরণের অ আদর্শিক উপায়। সংস্কৃতি যখন বাস্তব রূপ ধারণ করে তখন সেটি সংস্কৃতির বস্তুগত উপাদান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

বস্তুগত সংস্কৃতি কি: 

 মানুষের তৈরিকৃত দ্রব্যের সম্মিলিত ফসল হলো বস্তুগত সংস্কৃতি। অর্থাৎ যে সংস্কৃতিকে দেখা যায়, স্পর্শ করা যায় এবং যার অবস্থিতি আছে তাই বস্তুগত সংস্কৃতি । উদাহরণ: ঘরবাড়ি, দালানকোঠা, ব্যবহারিক আসবাবপত্র, পোশাক পরিচ্ছদ ইত্যাদি বস্তুগত সংস্কৃতি।

অবস্তুগত সংস্কৃতি কি: 

মানুষের মন থেকে সৃষ্ট সকল সংস্কৃতি হলো অবস্তুগত সংস্কৃতি। অর্থাৎ অবস্তুগত সংস্কৃতিকে দেখা বা স্পর্শ যায় না, কিন্তু অনুভব করা যায়। উদাহরণ: সাহিত্য, ধর্ম, দর্শন, জ্ঞান, শিল্পকলা, সংগীত, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, আইন ইত্যাদি অবস্তুগত সংস্কৃতি।


বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য


বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য: বস্তুগত সংস্কৃতি ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য পরিক্ষিত হয়। যা নিম্নে আলোচনা করা হলো-

১. প্রভাবগত পার্থক্য:

বস্তুগত সংস্কৃতি মানুষের জীবনধারণের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে সংযুক্ত থাকে। যেমন বাড়িঘর, পোশাক পরিচ্ছদ প্রভৃতি। অপরদিকে, অবস্তুগত সংস্কৃতি মানুষের জীবনকে পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে মাত্র। যেমন সংগীত, সুর, সাহিত্য প্রভৃতি।

২. পরিমাপগত পার্থক্য:

বস্তুগত সংস্কৃতির অগ্রগতিকে সহসা পরিমাপ করা যায়। পক্ষান্তরে, অবস্তুগত সংস্কৃতির উন্নতি বা মানকে সর্বক্ষেত্রে পরিমাপ করা যায় না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, হস্তচালিত তাঁতের চেয়ে যন্ত্রচালিত তাঁতের আবেদন বেশি এবং উৎপাদন ক্ষমতার পার্থক্য লক্ষ করা যায়।

৩. ভাবগত পার্থক্য:

বস্তুগত সংস্কৃতি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তুর বৈষয়িক দিকের মধ্যে নিহিত থাকে। অপরদিকে বস্তুর ভাবগত দিকের মধ্যে নিহিত থাকে অবস্তুগত সংস্কৃতি।


৪. উপলব্ধিগত পার্থক্য:

বস্তুগত সংস্কৃতি চোখে দেখা যায় এবং স্থানান্তর করা যায়। অপরদিকে, অবস্তুগত সংস্কৃতি চোখে দেখা যায় না এবং 'স্থানান্তর করা যায় না। মূলত বস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যেই অবস্তুগত সংস্কৃতি লুকায়িত অবস্থায় বিরাজমান থাকে।

৫. প্রক্রিয়াগত পার্থক্য: 

বস্তুগত সংস্কৃতিতে অধিক সক্রিয়ভাবে সঞ্চালন প্রক্রিয়া ঘটে। অন্যদিকে, অবস্তুগত সংস্কৃতিতে তা ঘটে না।

৬. পরিবর্তনগত পার্থক্য: 

বস্তুগত সংস্কৃতি মানুষের বাহ্যিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। পক্ষান্তরে, অবস্তুগত সংস্কৃতি মানুষের মানসিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।

৭. চাহিদাগত পার্থক্য:

বস্তুগত সংস্কৃতির চাহিদা ও আবেদন অবস্তুগত সংস্কৃতির চাহিদা ও আবেদনের চেয়ে অধিক ও ব্যাপক ।

৮. উপাদানগত পার্থক্য:

বস্তুগত সংস্কৃতির উপাদান ক্রমান্বয়ে সঞ্চিত হয়। তাই দ্রুতগতিতে আবিষ্কার ও উদ্ভাবন সম্ভব হয়। অপরদিকে, অবস্তুগত সংস্কৃতির উপাদান ক্রমান্বয়ে সঞ্চিত হয় না বলে আবিষ্কার ও উদ্ভাবন দ্রুতগতিতে সম্ভব হয় না ।

৯. আকৃতিগত পার্থক্য:

বস্তুগত সংস্কৃতি বস্তুতান্ত্রিক ও বিজ্ঞানসম্মত প্রাকৃতিক অংশ হিসেবে আকারে বৃহৎ এবং ত্বরিত গতিসম্পন্ন হয়। অপরদিকে, অবস্তুগত সংস্কৃতিতে অবস্তুতান্ত্রিক অংশ বস্তুতান্ত্রিক অংশ হতে আকারে ছোট ও গতিতে মন্থর হয়।


উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য থাকলেও এরা পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক এবং এদের মধ্যে সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য । সমাজবিজ্ঞানী অগবার্ন সংস্কৃতির বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানগুলোকেই সংস্কৃতির বিষয়বস্তু হিসেবে ব্যবহার করেছেন। বস্তুগত সংস্কৃতি অপেক্ষাকৃত অধিক সুনির্দিষ্ট কিন্তু অধিক অনিশ্চিত। অপরদিকে, বস্তুগত সংস্কৃতির ধারণা অধিক অনিশ্চিত এবং স্বল্প স্পষ্ট ।

শহুর বা নগর সংস্কৃতি বলতে কি বুঝ?


শহুর বা নগর সংস্কৃতি বলতে কি বুঝ?

নগর বা শহর হচ্ছে সংস্কৃতি বিকাশের প্রাণকেন্দ্র। মূলত গ্রাম হচ্ছে সংস্কৃতির জন্মভূমি আর শহর হচ্ছে এর পরিচর্যা ও বিকাশ কেন্দ্র। বাংলাদেশে শহর সংস্কৃতি সর্বদিকে ছড়িয়ে রয়েছে। বিশেষ করে শহর এলাকার মানুষেরা এ ধরনের সংস্কৃতিতে জীবনযাপন করে। বাংলাদেশের শহরসমূহে গ্রামে উদ্ধৃত সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে। এই সংস্কৃতিতে রয়েছে মানুষের আবহমানকালের সংস্কৃতি থেকে ভিন্নতর আধুনিক সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ।

শহুর বা নগর সংস্কৃতি কি: 

শহুর সংস্কৃতি হচ্ছে নগর বা শহর সমষ্টি (Urban Community) জনগণের নিজস্ব সংস্কৃতি বা জীবনপ্রবাহ। শহরের বা নগরের মানুষের জীবনযাত্রার ভাবগত ও বস্তুগত বিষয়াদি অপরিহার্যতাকেই নগরসংস্কৃতি বলে । প্রাচীনত্ব ও ঐতিহ্য থেকে আধুনিকতায় উত্তরণ, গ্রামীণ সংস্কৃতি থেকে নাগরিক সংস্কৃতিতে রূপান্তর, বিভিন্ন পারস্পরিক সম্পর্ক, ধারা বা আদান- প্রদানে সংস্কৃতি বিকশিত, পরিশীলিত ও পরিবর্তিত রূপ ধারণ বাংলাদেশের শত্রুর সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য ও লক্ষণীয় প্রবণতা ।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা:

অধ্যাপক আর. বি. মণ্ডল (Prof R. B. Mondal) বলেন, "অর্থাৎ, নগর সংস্কৃতি হলো নগর জীবনে এতদ্ব্যতীত মানুষের নগর কেন্দ্রের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন কুশলতার কাণ্ডজ্ঞান বিশিষ্ট্য নানা দিকের সমষ্টি।

Wikipedia এর সংজ্ঞানুযায়ী, নগর সংস্কৃতি হচ্ছে শহরের সংস্কৃতি। সমগ্র বিশ্বের শহরের অতীত বর্তমানে পরিব্যাপ্ত সংস্কৃতির উপাদান ও আচার ব্যবহার নয়তো বা গ্রামীণ অঞ্চলের সংস্কৃতি হতে তুলনীয়।

এল. মামফোর্ড (L. Mumford) বলেন, "Industrialization is key to the present urban culture and city civilization."

সমাজবিজ্ঞানী রিচার্ড জে. গিলান এবং এন লিভিং তাদের Sociology নামক গ্রন্থে ছয়টি উপাদান কথা উল্লেখ করেন, যে উপদানগুলোর সমন্বয়ে নগর সংস্কৃতি তৈরি হয়। উপদানগুলো হচ্ছে বিশ্বাস, মূল্যবোধ, আদর্শ, প্রতীক, ভাষা এবং প্রযুক্তি।


পরিশেষে বলা যায় যে, নাগর সংস্কৃতির অস্তিত্ব প্রাচীন কৃষিব্যবস্থার মধ্যেও থাকতে পারে। নগরায়ণ হটা প্রাচীন ও আধুনিক উভয়ই হতে পারে। বর্তমানে নগর সংস্কৃতির অত্যাবশ্যকীয় বিষয় হলো শিল্পায়ন। বাংলাদেশের শহর বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ছড়িয়ে রয়েছে। আধুনিক ও সনাতন সংস্কৃতির সংমিশ্রণে গড়ে ওঠেছে।


Post a Comment

Previous Post Next Post