খন্দকের যুদ্ধ। খন্দকের যুদ্ধের কারণ, ঘটনা ও ফলাফল আলোচনা কর
ভূমিকা :
ইসলামের
সূচনা পর্বে যে কয়টি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে খন্দক যুদ্ধ অন্যতম। তবে
এ যুদ্ধ ইতিহাসে বিভিন্ন নামে পরিচিত। খন্দক বা পরিখা খনন করে মদিনা রক্ষা করার
ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে এটিকে পরিখা বা খন্দক যুদ্ধ বলা হয়। আল কোরআনে এ
যুদ্ধকে ‘আহজাব যুদ্ধ’ বলা হয়েছে। মক্কার কুরাইশ, বেদুইন' ও ইহুদিদের সম্মিলিত বাহিনী মুসলমানদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার জন্য মদিনা
আক্রমণ করতে চাইলে মুহম্মদ (সা.) সালমান ফারসির পরামর্শে মদিনার অরক্ষিত সীমানায়
খন্দক বা খাল খনন করে যে যুদ্ধ পরিচালনা করেন ইতিহাসে তাই ‘খন্দক
যুদ্ধ' নামে পরিচিত ।
খন্দক যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল : খন্দক যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল নিম্নে আলোচনা করা হলো :
খন্দক যুদ্ধের কারণ :
৬২৭
খ্রিস্টাব্দে মক্কার কুরাইশ, বেদুইন
ও মদিনার ইহুদিদের সম্মিলিত বাহিনীর সাথে মুসলমানদের সংঘটিত খন্দক বা আহজাব
যুদ্ধের কারণসমূহ নিম্নে বর্ণনা করা হলো :
১. মুসলিম উম্মাহকে ধ্বংস করার ইচ্ছা:
ওহুদ
যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী সাময়িক পরাজিত হলেও তাদের নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। ওহুদের
সাময়িক বিপর্যয় কাটিয়ে ইসলামের ব্যাপক প্রসার ঘটে। মক্কার কুরাইশরা মুসলমানদের
সমূলে ধ্বংস করার জন্য জোট গঠন করে। ফলে খন্দক যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে।
২. মুসলমানদের ঐক্য:
ওহুদ
যুদ্ধে সাময়িক বিপর্যয়ের পর মুসলমানরা ভেঙে পড়েনি বরং তারা এ বিপর্যয় থেকে
শিক্ষাগ্রহণ করে ইসলাম প্রচারে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। মুসলমানদের এ সংঘবদ্ধতা
কুরাইশদের ভীত করে তোলে। ফলে তারা ইসলামকে পরাজিত করার জন্য জোট গঠন করে।
৩. কুরাইশদের প্রস্তুতি:
কুরাইশরা
ওহুদ যুদ্ধে বিজয়ী হলেও এ যুদ্ধের মাধ্যমে মূলত তাদের আশানুরূপ সাফল্য অর্জিত
হয়নি। কেননা ওহুদ যুদ্ধে জয়ের মধ্য দিয়েও তাদের বাণিজ্যপথের দখল ও রাজনৈতিক
নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। তাই তারা মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য একটি যুদ্ধের
প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে।
৪. ইহুদিদের উসকানি:
ওহুদ
যুদ্ধের পর মদিনার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অপরাধে ইহুদি গোত্র বনু নাজিরকে মদিনা
থেকে বহিষ্কার করা হয়। বনু কুরাইজা মদিনা থেকে বহিষ্কৃত হয়ে খাইবারের ওয়াদি উল
কুরা ও সিরিয়ার বাণিজ্য পথসহ বিভিন্ন স্থানে বসতি স্থাপন করেন। এ ইহুদিরা
পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ ও শাসকবর্গকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে উসকানি দিতে থাকে। ফলে
অনেক গোত্র মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে ।
৫. মুসলিম যাত্রীদের হয়রানি:
মদিনার
মুসলমানগণ নিজেদের ব্যবসায়িক ও বিভিন্ন প্রয়োজনে 'দুমাতুল জান্দালের' পথ দিয়ে চলাফেরা করতো। কিন্তু 'দুমাতুল জান্দালের' শাসকবর্গ ইহুদিদের প্ররোচনায়
মুসলমানদের হয়রানি শুরু করলে স্বাভাবিকভাবেই যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে ।
৬. মুসলমানদের শক্তি বৃদ্ধি:
ওহুদ
যুদ্ধে মুসলমানরা মুহম্মদ (সা.)- এর নির্দেশ অমান্য করে পরাজিত হলেও এ যুদ্ধের
শিক্ষা নিয়ে তারা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে থাকে।
মুসলমানদের এ শক্তি বৃদ্ধিতে মক্কার কুরাইশরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তারা
নিজেদের সামাজিক, ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক
সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে শেষবারের মতো মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের
সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করলে যুদ্ধ আসন্ন হয়ে পড়ে।
খন্দক যুদ্ধের ঘটনা :
৬২৭ খ্রিস্টাব্দে মার্চ মাসে আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে কুরাইশ, ইহুদি ও বেদুইনদের ১০,০০০ সৈন্যের সম্মিলিত বাহিনী মদিনা আক্রমণ করে। শত্রু বাহিনীর আগমনের সংবাদ শুনে মহানবি (সা.) ৩,০০০ সৈন্যের বাহিনী তৈরি করেন । এত বিশাল কুরাইশ বাহিনীকে কীভাবে মোকাবিলা করবেন সেই পরামর্শ করলে সালমান ফারসি মদিনার অরক্ষিত সীমান্তে গভীর পরিখা খননের পরামর্শ দেন। সালমান ফারসির পরামর্শে মহানবি (সা.) সাহাবিদের নিয়ে ছয় দিনে পরিখা বা গর্ত খনন করেন । তিনি শিশু ও নারীদের নিরাপদ দুর্গে আশ্রয় দিয়ে সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন উপদলে বিভক্ত করে নগর রক্ষার দায়িত্ব দেন । অবশেষে ৬২৭ খ্রিস্টাব্দের ৩১ মার্চ যুদ্ধ শুরু হয় । কুরাইশ বাহিনী যুদ্ধে মুসলমানদের এ অভিনব কৌশল দেখে বিস্মিত হয়ে পড়ে। তারা তিন সপ্তাহ মদিনা অবরোধ করে রেখে মদিনায় ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে হতাশা নিয়ে ফিরে যায় ।
খন্দক যুদ্ধের ফলাফল : খন্দক যুদ্ধের ফলাফলসমূহ নিম্নে বর্ণনা করা হলো :
১. রক্তপাতহীন যুদ্ধ:
খন্দক যুদ্ধে ত্রিশক্তি বিপুল প্রস্তুতি নিয়ে মদিনা আক্রমণ করে। ফলে সেখানে অনেক রক্তপাত হওয়া ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু মহানবি (সা.) হযরত সালমান ফারসির পরামর্শে পরিখা খনন করে অভিনব পদ্ধতিতে প্রতিরোধ করেন। ত্রিশক্তি ২৭ দিন মদিনা অবরোধ করে রেখে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায় । ফলে এ যুদ্ধ বিনা রক্তপাতে শেষ হয় ।
২. ত্রিশক্তি জোটে ভাঙন:
খন্দক যুদ্ধে মক্কার কুরাইশ, মদিনার ইহুদি ও বেদুইনরা সম্মিলিতভাবে মদিনা আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলমানদের অভিনব যুদ্ধ কৌশলের কারণে ত্রিশক্তি জোট পরাজিত হলে তাদের মধ্যে ভাঙন দেখা দেয়। কেননা অবরোধ চলাকালীন সময়েই আবু সুফিয়ানের সাথে গাতফান গোত্র ও বনু কুরাইজা গোত্রের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ফলে এ ঐক্য জোটে ভাঙন দেখা দেয় ।
৩. ইহুদিদের শাস্তি প্রদান:
খন্দক
যুদ্ধে বনু কুরাইজা গোত্র, মুসলমানদের বিপক্ষে
কুরাইশদের সাথে গোপন ষড়যন্ত্র ও সাহায্য করে। এ যুদ্ধে কুরাইশ বাহিনী পরাজিত হলে
মুহম্মদ (সা.) বনু কুরাইজা গোত্রকে শাস্তি দিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন । ইহুদিদের
অনুরোধে মহানবি (সা.) সাদ বিন মুয়াজকে বিচারক নিযুক্ত করেন। সাদ ইহুদি ধর্মগ্রন্থ
অনুসারে বনু খোরায়জা গোত্রের পুরুষদের হত্যা, মহিলা ও বালক
বালিকাদের দাসদাসী হিসেবে ব্যবহার এবং তাদের ধনসম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার রায় দেন।
এ রায় সম্পর্কে ঐতিহাসিক আমির আলি বলেন, “বর্তমানকালে এ
শাস্তি অত্যন্ত কঠোর বলে মনে হবে; কিন্তু সে সময় প্রচলিত
যুদ্ধের প্রথা অনুসারে তা বিধিসম্মত ছিল।
৪. কুরাইশদের সামরিক শক্তি হ্রাস:
খন্দক যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর কুরাইশদের সাথে মিত্রদের সম্পর্ক ভেঙে গেলে তাদের সামরিক শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়াও যুদ্ধে কুরাইশদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ নষ্ট হওয়ায় তারা আর যুদ্ধ করার মতো শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি।
৫. ইসলামের আধিপত্য বিস্তার:
খন্দক যুদ্ধের পর ইসলাম ব্যাপক গতি লাভ করে। এ সময়
মুহম্মদ (সা.) মদিনার বাইরে ইসলামের বিস্তারসাধনে সচেষ্ট হন। ফলে অল্পদিনে ইসলাম
সারা আরবে বিস্তার লাভ করে। Prof.
S. M. Imamuddin বলেন, “শান্তি স্থাপন হলে ইসলাম ধর্ম প্রচারের কাজ সহজ হয়ে পড়ে।”
৬. মদিনা রাষ্ট্রের ভিত্তি সুদৃঢ়:
খন্দক
যুদ্ধে সম্মিলিত বাহিনী মূলত মদিনাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল । কিন্তু তারা ব্যর্থ
হওয়ায় মদিনার মর্যাদা বৃদ্ধি পায় । মদিনা আর কখনও কোনো শত্রু দ্বারা আক্রান্ত
হয়নি। ফলে মদিনা রাষ্ট্রের ভিত্তি সুদৃঢ় হয়।
৭. মুহম্মদ (সা.)-এর কৃতিত্ব বৃদ্ধি:
খন্দক
যুদ্ধে মহানবি (সা.) অভিনব যুদ্ধ কৌশল অবলম্বন করে সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত
করেছিলেন। ফলে আশেপাশের বহু গোত্র ও রাষ্ট্রপ্রধানরা মুহম্মদ (সা.)-কে রাসুল
হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
আর মদিনা রাষ্ট্রকে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারায় মদিনাবাসীও মহানবি
(সা.)-কে সাদরে তাদের একচ্ছত্র অধিপতি হিসেবে মেনে নেয়। ‘ক্যামব্রিজ হিস্ট্রি অব ইসলাম' গ্রন্থে বলা হয়েছে,
“এ অবরোধের ব্যর্থতা মুহম্মদ (সা.)-এর জন্য এক বিরাট বিজয় ছিল।”
খন্দক যুদ্ধে মুসলমানদের জয়লাভের কারণ :
খন্দক যুদ্ধে মুসলমানদের জয়লাভের কারণসমূহ নিম্নরূপ :
১. পরিখা খনন:
খন্দক যুদ্ধে আরবের সম্মিলিত বাহিনী মদিনা
আক্রমণ করে। এই বিশাল বাহিনীকে সম্মুখ যুদ্ধে মোকাবিলা করা কঠিন ছিল। তাই সালমান
ফারসির পরামর্শে মদিনার অরক্ষিত সীমান্তে মহানবি (সা.) পরিখা খনন করেন। মহানবি
(সা.) সাহাবিদের সাথে নিয়ে মাত্র ৬ দিনে পরিখা খনন শেষ করেন। কুরাইশদের সম্মিলিত
বাহিনী পরিখা খননের এই অভিনব কৌশল দেখে বিস্মিত হয়। তারা মদিনা আক্রমণে ব্যর্থ
হয়ে মদিনার বাইরে অবস্থান করে। ফলে মুসলমানদের দ্বারা বিজয় সম্ভব হয় ।
২. প্রতিকূল আবহাওয়া:
কুরাইশদের
সম্মিলিত বাহিনী পরিখা পার হতে না পেরে মদিনার বাইরে অবস্থান করে। তারা ২৭ দিন
মদিনা অবরোধ করে রাখে । অবশেষে ঝড়, বৃষ্টি, ধুলা, বায়ু প্রভৃতি
প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তাদের তাঁবু উড়ে যায়। ফলে তারা মদিনা আক্রমণ না করে
ফিরে যায় ।
৩. খাদ্য সংকট:
ত্রিশক্তি ২৭ দিন মদিনা অবরোধ করে রাখে । এই
সময়ে তাদের নিকট গচ্ছিত খাদ্য ফুরিয়ে যায়। তাদের ঘোড়াগুলো মারা যায়। এভাবে রসদ
শেষ হয়ে গেলে তারা মদিনা আক্ৰমণ না করে ফিরে যায়।
৪. ত্রিশক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব:
খন্দক যুদ্ধে মক্কার কুরাইশদের সাথে মদিনার
ইহুদি ও বেদুইনরা সম্মিলিতভাবে মদিনা আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলমানরা পরিখা খনন করে
অভিনবভাবে প্রতিরোধ করলে তারা আশাহত হয়। আশাহত হয়ে এই ত্রিশক্তির মাঝে
অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ফলে তারা মদিনা আক্রমণ না করে ফিরে যায় ।
৫. মুসলমানদের ইমানের দৃঢ়তা:
মুসলমানরা 'খন্দক যুদ্ধে কঠোর পরিশ্রম করে পরিখা খনন করে। তারা ত্রিশক্তির এত বিশাল বাহিনীর কাছে হতাশ না হয়ে সাহসিকতার সাথে পরিস্থিতির মোকাবিলা করে ইমানের দৃঢ়তার পরিচয় দেয়। ফলে এ যুদ্ধে বিজয় লাভ মুসলমানদের জন্য সহজ হয়ে যায়।
খন্দক যুদ্ধকে পরিখা বা আহজাব যুদ্ধ বলার কারণ :
খন্দক যুদ্ধকে দুটি নামে অভিহিত করা হয় ।
প্রথমত খন্দক বা পরিখার যুদ্ধ আর দ্বিতীয়ত আহজাব বা সম্মিলিত বাহিনীর যুদ্ধ।
১. খন্দক যুদ্ধকে আহজাব যুদ্ধ বলার কারণ:
পবিত্র
কোরআনে খন্দক যুদ্ধকে আহজাব যুদ্ধ বলা হয়েছে। আরবি ‘হজব’ শব্দের বহুবচন আহজাব। অর্থ দলসমূহ, জোটবদ্ধ হওয়া ইত্যাদি। খন্দক যুদ্ধে মুসলমানদের বিরুদ্ধে মক্কার কুরাইশদের
সাথে মদিনার ইহুদি বনু নাজির ও বনু কাইনুকা গোত্র যোগদান করেছিল। অন্যদিকে,
মদিনার উপত্যকায় বসবাসরত বেদুইনদের বনু সুলাইম, গাতফান, বনু আসাদ প্রভৃতি দল যোগদান করেছিল। কুরাইশ,
ইহুদি ও বেদুইনদের সম্মিলিত বাহিনী এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল বিধায়
এ যুদ্ধকে আহজাবের বা সম্মিলিত বাহিনীর যুদ্ধ বলা হয় ।
২. খন্দক যুদ্ধকে পরিখার যুদ্ধ বলার কারণ:
আহজাব যুদ্ধের আরেকটি নাম হলো খন্দক যুদ্ধ। ফারসি খন্দ শব্দ থেকে খন্দক এসেছে। এর অর্থ হলো পরিখা। আরবি ভাষায় পরিখার প্রতিশব্দ হলো খন্দক । এ যুদ্ধ কুরাইশদের সম্মিলিত বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য মহানবি (সা.) সালমান ফারসির পরামর্শে।
মদিনার
অরক্ষিত সীমান্তে পাঁচ হাত প্রশস্ত ও পাঁচ হাত গভীর পরিখা খনন করেছেন। ঐতিহাসিক P. K. Hitti
বলেন, “পারস্যবাসী সালমান ফারসির পরামর্শে
মুহম্মদ (সা.) মদিনার অরক্ষিত সীমান্তে পরিখা খনন করেন।” আরবি
ভাষায় পরিখার প্রতিশব্দ খন্দক হওয়ার কারণে এ যুদ্ধকে খন্দক যুদ্ধ বলা হয় ৷
ইংরেজি ভাষায় খন্দক যুদ্ধকে বলা হয় 'Battle of the Confederates'
বা সম্মিলিত বাহিনীর যুদ্ধ। কুরাইশরা ২৭ দিন মদিনা অবরোধ করে
রেখেছিল বলে এটি ‘মদিনা অবরোধ' নামেও
পরিচিত।
উপসংহারঃ
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, খন্দক বা আহজাব যুদ্ধ ছিল আরবের কাফেরদের ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার সর্বশেষ
সম্মিলিত প্রচেষ্টা। মুসলমানদের অভিনব যুদ্ধ কৌশলের কারণে সম্মিলিত বাহিনী পরাজিত
হয় । সম্মিলিত বাহিনী পরাজিত হওয়ার মাধ্যমে তারা আর কখনও মদিনা আক্রমণের সাহস
পায়নি। ফলে ইসলাম নির্বিঘ্নে সারা বিশ্বে দ্রুত প্রসার লাভ করে এবং মদিনার মুসলিম
রাষ্ট্র সুগঠিত আকার ধারণ করতে সমর্থ হয়।