হিলফুল ফুজুল কি ? হিলফুল ফুজুল গঠনের পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর।

হিলফুল ফুজুল কি ? হিলফুল ফুজুল গঠনের পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর।

হিলফুল ফুজুল কি? হিলফুল ফুজুল গঠনের পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর।

ভূমিকা :

হযরত মুহম্মদ (সা.) বাল্যকাল থেকেই জাহেলি যুগের অন্যায়, অবিচার দেখে ব্যথিত হতেন। তিনি জাহেলি যুগের অন্যায়, জুলুম, নির্যাতন ইত্যাদির অবসানে সর্বদা চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। মহানবি (সা.)-এর ১৫ বছর বয়সে অন্যায়ভাবে মক্কার কুরাইশ ও কায়েস গোত্রের মাঝে যুদ্ধ বাধে। এ যুদ্ধেয় ভয়াবহতা মহানবি (সা.)-কে দারুণভাবে ব্যথিত করে। মহানবি (সা.) এসব অন্যায়, অবিচার প্রতিহত করার জন্য মক্কার যুবকদের নিয়ে হিলফুল ফুজুল নামে একটি শান্তি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন ।

 হিলফুল ফুজুল কি

মহানবি (সা.) ১৫ বছর বয়সে মক্কার দুই গোত্র বনু কুরাইশ ও বনু কায়েসের মাঝে ওকাজ মেলায় সামান্য জুয়াখেলা, ঘোড়দৌড়, কবিতা প্রতিযোগতিা নিয়ে ভয়াবহ এক অন্যায় যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এ অন্যায় যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে এর প্রতিকারের জন্য মহানবি (সা.) মক্কার যুবকদের নিয়ে হিলফুল ফুজুল নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন ।


হিলফুল ফুজুল কি : নিম্নে হিলফুল ফুজুল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. পরিচয় : হিলফুল ফুজুল হলো মক্কার কুরাইশ বংশের যুবকদের একটি সংগঠনের নাম। যারা সমাজে গরিব, দুর্বল ও অসহায় মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হন । ৫৮৫ মতান্তরে ৫৯০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এ সংগঠন দীর্ঘ ৫০ বছর স্থায়ী ছিল ।

২. নামকরণ : চারজন বিশিষ্ট সদস্য ফজল, ফাজেল, ফজায়েল ও মোফাজ্জলের নামানুসারে এ সংগঠনের নামকরণ করা হয় । এ সংগঠনের সদস্যরা ছিলেন নিঃস্বার্থ উৎসাহী যুবক ।

৩. গঠনের কারণ : জাহেলি যুগে মক্কার বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য সামান্য বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগে যেত। যেটি অনেক সময় যুদ্ধে রূপ নিত। ওকাজ মেলায় জুয়াখেলা, ঘোড়দৌড় ও কবিতা প্রতিযোগিতার ন্যায় সামান্য বিষয় নিয়ে বনু কুরাইশ ও বনু কায়েস গোত্রের মধ্যে অন্যায়ভাবে হারবুল ফুজ্জার সংঘটিত হয়েছিল। এ অন্যায় যুদ্ধ মহানবি (সা.)-এর মনে দারুণভাবে আঘাত হানে। সমাজের দুর্বল, দরিদ্র, অসহায় ও নির্যাতিত মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মহানবি (সা.) মক্কার নিঃস্বার্থ ও উৎসাহী কিছু যুবকদের নিয়ে অন্যায় প্রতিরোধে এক সংগঠন গড়ে তোলেন । ইতিহাসে এ সংগঠন হিলফুল ফুজুল নামে পরিচিত।

৪. ‘হারবুল ফুজ্জার' বা অন্যায় যুদ্ধ কি ছিল?

মহানবি (সা.)-এর মাত্র ১৫ বছর বয়সে ৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে ওকাজ মেলায় জুয়াখেলা, ঘোড়দৌড়, কাব্য প্রতিযোগিতা ইত্যাদি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বনু কুরাইশ ও বনু কায়েসের মধ্যে অন্যায় যুদ্ধ শুরু হয়। মহানবি (সা.) পিতৃব্য আবু তালেবের সাথে বাণিজ্য শেষে সিরিয়া থেকে ফেরার কিছুদিন পর এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মহানবি (সা.) এ যুদ্ধে কুরাইশদের পক্ষে তীর ধনুক কুড়িয়ে দিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মক্কার দুই গোত্রের মধ্যে যেহেতু সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তাই ইতিহাসে এ যুদ্ধকে ‘হারবুল ফুজ্জার' বা অন্যায় যুদ্ধ বলা হয়। এ যুদ্ধে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই গোত্রের বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ।

অতএব বলা যায় যে, হিলফুল ফুজুল ছিল ইতিহাসের সর্বপ্রথম সংগঠন যা জাহেলি যুগের অন্যায় অবিচারের প্রতিরোধের জন্য গঠিত হয়েছিল।  এ সংগঠনের উৎসাহী যুবক সদস্যরা সমাজের অন্যায় প্রতিরোধে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গিয়েছেন ।

হিলফুল ফুজুলের কার্যক্রম কী ছিল?

মহানবি মুহম্মদ (সা.) জাহেলি যুগের অন্যায়, অবিচার রোধ করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য মক্কার উৎসাহী ও স্বেচ্ছাসেবী যুবকদের নিয়ে হিলফুল ফুজুল গঠন করেন। তিনি হিলফুল ফুজুলের মাধ্যমে সমাজের সব রকম বৈষম্য দূর করে সেখানে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। হিলফুল ফুজুল তার পাঁচ দফা কর্মসূচি গঠনের মাধ্যমে অসহায় ও আর্তমানবতার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন ।

হিলফুল ফুজুলের কর্মসূচি :

মহানবি (সা.)-এর পনেরো বছর বয়সে মক্কার কুরাইশ ও কায়েস গোত্রের মধ্যে ওকাজ মেলায় জুয়াখেলা, ঘোড়দৌড় ও কবিতা প্রতিযোগিতার মতো সামান্য বিষয় নিয়ে রক্তক্ষয়ী এক অন্যায় যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। হারবুল ফুজ্জারে অংশগ্রহণ করে মহানবি (সা.) কুরাইশদের পক্ষে তীর কুড়িয়ে দেন।

এ অন্যায় যুদ্ধের ভয়াবহতা মহানবি (সা.)-এর মনে দারুণভাবে দাগ কাটে । তিনি  অসহায় মানুষের মুক্তির চিন্তা করে মক্কার স্বেচ্ছাসেবী উৎসাহি যুবকদের নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নেন।  অবশেষে ফজল, ফাজেল, ফজায়েল ও মোফাজ্জল এই চারজন প্রজ্ঞাশীল সদস্যদের নামানুসারে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে এর নামকরণ করেন হিলফুল ফুজুল। এ সংগঠন তার পাঁচদফা কর্মসূচির মাধ্যমে দীর্ঘ ৫০ বছর মানবতার সেবা করে স্থায়ী ছিল।

মহানবি (সা.) কর্তৃক ৫৮৫ মতান্তরে ৫৯০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হিলফুল ফুজুল যে পাঁচ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করে বা হিলফুল ফুজুল এর নীতিগুলো কি কি ছিল  তা নিম্নে দেওয়া  হলো :

১. দেশে আইনকানুন বাজয় রাখবেন ।

২. আরবের গোত্রসমূহের মধ্যে সব প্রকার অন্যায় ও রক্তক্ষয়ী ' যুদ্ধ বন্ধ করে সম্প্রীতি স্থাপনের চেষ্টা করবেন।

৩. মজলুম জনগণকে জালিমের হাত থেকে রক্ষা করবেন।

 ৪. সমস্ত অন্যায়, অবিচার অবসানের জন্য চেষ্টা করবেন।

৫. বিদেশি বণিকদের ধনপ্রাণের নিরাপাত্তা বিধানে চেষ্টা করবেন। মহানবি (সা.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই হিলফুল ফুজুলই ছিল বিশ্ব ইতিহাসে সর্বপ্রথম কল্যাণকর সংগঠন ।

 হিলফুল ফুজুল গঠনের পটভূমি :

মহানবি (সা.) পিতৃব্য আবু তালেবের সাথে সিরিয়া থেকে বাণিজ্য সফর শেষে মক্কায় ফিরে দেখেন ওকাজ মেলায় ঘোড়দৌড়, জুয়াখেলা ও কাব্য প্রতিযোগিতা নিয়ে এক ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। জিলক্বদ মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ থাকার পরও সংঘটিত হয়েছিল বিধায় এ যুদ্ধকে অন্যায় যুদ্ধ বা ‘হারবুল ফুজ্জার' বলা হয়। কুরাইশ ও বনু কায়েসের মধ্যে সংঘটিত এ যুদ্ধ পাঁচ বছর স্থায়ী হয়েছিল । এ যুদ্ধে অনেকে প্রাণ হারায় ।

মহানবি (সা.) এ যুদ্ধে কুরাইশদের পক্ষে তির কুড়িয়ে দেন। মহানবি (সা.) সরাসরি এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার কারণে যুদ্ধের ভয়াবহতা স্বচক্ষে দেখতে পান । হারবুল ফুজ্জারের এ ভয়াবহতা মহানবি (সা.)-এর মনে দারুণভাবে দাগ কাটে। তিনি অস্থির হয়ে গরিব, দুর্বল, অসহায় এবং মজলুম সন্তানকে জালিম ও সব ধনীদের হাত থেকে রক্ষা করার এবং আরবে শান্তি প্রতিষ্টার জন্য একটি শান্তি কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নেন । যা ইতিহাসে হিলফুল ফুজুল নামে পরিচিত ।

i. হিলফুল ফুজুল গঠন : মহানবি (সা.) হারবুল ফুজ্জারের পর মানবতার মুক্তির জন্য আরবের উদ্যোগী, পরোপকারী ও নিঃস্বার্থ যুবকদের নিয়ে ৫৮৫ মতান্তরে ৫৯০ খ্রিস্টাব্দে হিলফুল ফুজুল নামে একটি শান্তি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। যা ইতিহাসের প্রথম ‘শান্তি সংঘ' নামে পরিচিত ।

ii. হিলফুল ফুজুলের নামকরণ : হিলফুল ফুজুলের সদস্যদের মধ্যে ফজল, ফাজেল, ফাজায়েল ও মোফাজ্জেল এ চারজন বিশিষ্ট সদস্যের নাম থেকেই হিলফুল ফুজুল নামের উৎপত্তি ।

হিলফুল ফুজুলের গুরুত্ব :

মহানবি (সা.) ৫৮৫ মতান্তরে ৫৯০ খ্রিস্টাব্দে আরবের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কিছু উদ্যোগী ও নিঃস্বার্থ যুবকদের নিয়ে হিলফুল ফুজুল নামে একটি শান্তি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন।  আরব সমাজের সব অন্যায় প্রতিরোধ করে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় এ সংঘের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। নিম্নে হিলফুল ফুজুলের গুরুত্ব তুলে ধরা হলো :

১. দয়ালু মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ :

হযরত মুহম্মদ (সা.) ছিলেন দয়ালু মানব। মানুষের দুঃখ তাঁকে সর্বদা ব্যথিত করতো। তিনি দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দুঃখ লাঘবের চেষ্টা করতেন। হারবুল ফুজ্জারে অন্যায়ভাবে কুরাইশ ও বনু কায়েসের অনেকে নিহত হয়। এ অন্যায় যুদ্ধের ভয়াবহতা মহানবি (সা.)- এর মনে দারুণভাবে দাগ কাটে। মহানবি (সা.) মানুষের এ দুঃখ লাঘবের জন্য মক্কার নিঃস্বার্থ উদ্যোগী যুবকদের নিয়ে হিলফুল ফুজুল গঠন করেন। হিলফুল ফুজুল গঠনের মাধ্যমে এর সদস্যরা সমাজের আর্ত মানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেন । যেটি মহানবি (সা.)-এর দয়ালু মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ

 ২. কলহ বিবাদ নিরোধ :

জাহেলি যুগে আরব সমাজে কলহবিবাদ ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। সমাজের লোকজন সর্বদা একে অন্যের সাথে কলহবিবাদে লিপ্ত থাকত। সাধারণ কলহবিবাদ কখনও কখনও ভয়াবহ যুদ্ধের রূপ ধারণ করতো। মহানবি (সা.) সমাজের কলহবিবাদ নিরসনের জন্য হিলফুল ফুজুল গঠন করেন । হিলফুল ফুজুলের সদস্যদের সক্রিয় ভূমিকায় সমাজের কলহবিবাদ হ্রাস পায়। সমাজের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারে। অতএব সমাজের কলহবিবাদ নিরসনে ‘হিলফুল ফুজুলের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।

৩. মহানবি (সা.)-এর গণতান্ত্রিক মনের বহিঃপ্রকাশ :

 মুহম্মদ (সা.) ছিলেন মানবতার বন্ধু। সমাজের সব মানুষের কল্যাণসাধন ছিল তাঁর একান্ত ধ্যান জ্ঞান ও কাজ । সমাজের সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের অধিকার গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠায় তিনি সর্বদা নিয়োজিত ছিলেন। মহানবি (সা.) ৫৯০ খ্রিস্টাব্দে হিলফুল ফুজুল গঠন করে আরবের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পান। তাই বলা যায়, হিলফুল ফুজুল ছিল মহানবি (সা.)-এর গণতান্ত্রিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ।

৪. সাংগঠনিক দক্ষতা :

আল্লাহ তাআলা, হযরত মুহম্মদ (সা.)- কে বিশ্বে নেতৃত্ব দানের জন্য সৃষ্টি করেছিলেন। বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সাংগঠনিক দক্ষতা প্রয়োজন ছিল । মহানবি (সা.) ‘হরবুল ফুজ্জারের' ভয়াবহতা দেখে মর্মাহত হন। তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য চিন্তা করেন। আর এজন্য তিনি আরবের নিঃস্বার্থ উদ্যমী যুবকদের সংঘটিত করে হিলফুল ফুজুল নামে শান্তি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। মহানবি (সা.) হিলফুল ফুজুল গঠন করার মাধ্যমে মানুষের কল্যাণে যুব সমাজকে নেতৃত্ব প্রদান করে একত্রিত করেন। এতে মহানবি (সা.)-এর নেতৃত্বের গুণাবলির বহিঃপ্রকাশ ঘটে । হিলফুল ফুজুল সফলভাবে গঠন করার মাধ্যমে মহানবি (সা.) ভবিষ্যতে বিশ্ব নেতৃত্ব প্রদানের গুণাবলি অর্জন করেন। যা তাঁকে পরবর্তীতে বিশ্ব নেতার আসনে আসীন করে।

৫. কর্তব্য সচেতনতা সৃষ্টি :

জাহেলি যুগে আরববাসী অন্যের - ওপর কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন ছিল না। মহানবি (সা.) হিলফুল ফুজুল গঠন করে এর সদস্যদের সমাজের মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্বন্ধে ধারণা প্রদান করেন। ফলে সমাজের মানুষের মাঝে দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি হয়।

৬. অত্যাচার দমন :

জাহেলি যুগে আরববাসীরা অন্যায়ভাবে একে অপরকে অত্যাচার করতো। মহানবি (সা.) হিলফুল ফুজুল গঠন করে অত্যাচারীদের বাধাদান ও অত্যাচারিতকে সাহায্য দানের প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে। ফলে সমাজ থেকে অত্যাচারের অবসান ঘটে । সমাজের মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে ।

৭. গোত্রীয় সম্প্রীতি সৃষ্টি :

জাহেলি যুগে আরবের গোত্রগুলোর মধ্যে সর্বদা বিরোধ লেগে থাকত। সামান্য বিষয় নিয়ে গোত্রগুলোর মধ্যে যুদ্ধ পর্যন্ত লেগে যেত। হিলফুল ফুজুল গঠনের মাধ্যমে হযরত মুহম্মদ (সা.) আরবের গোত্রগুলোর মাঝে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি স্থাপনের চেষ্টা করেন। ফলে গোত্রীয় কলহবিবাদ ভুলে আন্তঃগোত্রীয় সম্প্রীতি স্থাপিত হয়। অতএব সমাজ ভয়াবহ গোত্রীয় কলহ ও যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পায় ।

৮. বিদেশিদের নিরাপত্তা লাভ :

জাহেলি যুগে আরবে বাইরের দেশের বণিকরা ব্যবসা বাণিজ্য করতে আসলে আরবরা তাদের সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠন করতো। ফলে বিদেশি বণিকরা বাণিজ্য করতে আসতে ভয় পেত। মহানবি (সা.) হিলফুল ফুজুল গঠন করে বিদেশিদের ধনসম্পদ, প্রাণ, মানসম্ভ্রম ইত্যাদি রক্ষার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেন। ফলে বিদেশি বণিকরা বাণিজ্যের জন্য আসা শুরু করে। এতে অল্পদিনে আরবের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি সাধিত হয় ।

হিলফুল ফুজুল অর্থ কি: হিলফুল ফুজুল অর্থ  শান্তি সংঘ।

হিলফুল ফুজুল কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়: হিলফুল ফুজুল ৫৮৫ সালে মতান্তরে ৫৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়

হিলফুল ফুজুল কত বছর স্থায়ী ছিল-হিলফুল ফুজুল ১৫ বছর স্থায়ী ছিল

হিলফুল ফুজুল কে প্রতিষ্ঠা করেন-হিলফুল ফুজুল মহানবি (সা.) প্রতিষ্ঠা করেন

হিলফুল ফুজুল এর কয়টি উদ্দেশ্য ছিলহিলফুল ফুজুল এর কয়টি উদ্দেশ্য ছিল ৫ টি।


উপসংহার:

উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, হিলফুল ফুজুল গঠন ছিল জাহেলি আরবের অন্যায়, অত্যাচারের বিরুদ্ধে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবি (সা.)-এর অভাবনীয় উদ্যোগ। এর মাধ্যমে মহানবি (সা.) আরবের নিঃস্বার্থ উদ্যোগী যুবকদের একত্রিত করেন। হিলফুল ফুজুল গঠনের মাধ্যমে একদিকে যেমন আরবের সমাজ থেকে অন্যায় অবিচারের অবসান ঘটে। অন্যদিকে, এর মাধ্যমে মহানবি (সা.) পরবর্তীতে বিশ্ব নেতায় পরিণত হন ।


Post a Comment

Previous Post Next Post