আইয়ামে জাহেলিয়া শব্দের অর্থ কী? আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

 

আইয়ামে জাহেলিয়া শব্দের অর্থ কী? আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

আইয়ামে জাহেলিয়া শব্দের অর্থ কী?  আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর। 

ভূমিকা: 

মানবজাতির ইতিহাসে আইয়ামে জাহেলিয়া একটি সংকটময় ঐতিহাসিক অধ্যায়। এ সময় বিভিন্ন পাপাচার, ব্যভিচার, দুর্নীতি, কুসংস্কার, অনাচার, অরাজকতা, ঘৃণ্য আচার- অনুষ্ঠান, সমাজব্যবস্থাকে কলুষিত করেছিল। সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক অরাজকতা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুপ্রবেশ করায় এ যুগের অধিকাংশ বৈশিষ্ট্যই ইসলামের বিপরীত ।

আইয়ামে জাহেলিয়া শব্দের অর্থ কী?  


ইসলামের আবির্ভাবের পূর্ববর্তী যুগকে আইয়ামে জাহেলিয়া বলা হয়। আইয়াম' শব্দের অর্থ যুগ বা সময় এবং জাহেলিয়া' শব্দের অর্থ অজ্ঞতা, বর্বরতা, অন্ধকার, তমসা ইত্যাদি। সুতরাং আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে অজ্ঞতার যুগ, বর্বরতার যুগ, অন্ধকার যুগ ইত্যাদিকে বুঝায় । এ যুগে আরবরা সভ্যতা, সংস্কৃতি ও কৃষ্টি থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল আইয়ামে জাহেলিয়া যুগের সময়কাল সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক নিকলসন বলেন, ইসলামের আবির্ভাবের পূর্ববর্তী এক শতাব্দীকালকে আইয়ামে জাহেলিয়া বলে অভিহিত করা হয়। [Ref. A Literary History of the Arabs] 

ঐতিহাসিক P. K. Hitti নিকলসনের অভিমতকে সমর্থন করে বলেন যে, নবি, ঐশী কিতাব, ধর্মীয় চেতনার অবর্তমানে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়তপ্রাপ্তির এক শতাব্দী পূর্বে (৫১০-৬১০ খ্রি.) আরব জাতির যে রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক অধঃপতন ঘটে, একেই অজ্ঞতার যুগ বলা হয়।

প্রকৃত অর্থে অন্ধকার যুগ বলতে আরবের এমন এক সময়কালকে বুঝায়, যে সময়ে আরবে আইনের শাসন ছিল না, কোনো নবির আবির্ভাব ঘটেনি, আরববাসীরা নানা ধরনের কুসংস্কার, অনাচার, ব্যভিচার, দ্বন্দ্ব কলহ ও রক্তপাতে লিপ্ত ছিল। তাদের সদ্‌গুণের চেয়ে অসদ্‌গুণের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। পবিত্র কোরআনেও একাধিকবার আইয়ামে জাহেলিয়ার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু এ অজ্ঞতার বিস্তৃতি সমগ্র আরবে হয়েছিল কি না তা জানা যায়নি । সম্ভবত অজ্ঞতার যুগের বিস্তৃতি মধ্য আরবের হেজাজ এবং এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল।

আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগের কতিপয় বৈশিষ্ট্য: নিম্নে আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগের কতিপয় বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো:

১. ত্রুটিপূর্ণ সামাজিক অবস্থা:

আইয়্যামে আরবের সামাজিক অবস্থা ভয়াবহ ও জঘন্য ছিল। বংশগত ও গোত্রগত আভিজাত্য, অহংকার, ঈর্ষা ও বিদ্বেষ সমাজজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। এসময় আভিজাত্যের দম্ভ, আত্মম্ভরিতা, পরশ্রীকাতরতা, চরিত্রহীনতা, পরনিন্দা, পরচর্চা ইত্যাদি আরবজাতির চরিত্রকে কলুষিত করে। অন্যের কুৎসা রটনা করে তারা পরম আত্মতৃপ্তি লাভ করতো।

২. নবি ও আসমানি কিতাবশূন্য যুগ:

মানুষের হেদায়াত স্বরূপ আল্লাহতালা যুগে যুগে বহু নবি-রাসূল প্রেরণ করেছেন এবং দিকনির্দেশনামূলক আসমানি গ্রন্থ নাজিল করেছেন। হযরত ইসা (আ.)-এর ওপর ইঞ্জিল কিতাব নাজিল হয়। ইসা (আ.)-এর তিরোধানের পর দীর্ঘদিন কোনো নবির আবির্ভাব হয়নি ও কিতাব নাজিল হয়নি। নবিশূন্য ও কিতাব শূন্য অবস্থায় আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগে মানুষ নানা ধরনের অন্যায় ও পাপাচারমূলক কাজে লিপ্ত হয়।

৩. কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজ:

ইসলামপূর্ব যুগে আরবের লোকেরা অতিমাত্রায় কুসংস্কারাচ্ছন্ন ছিল। সে সময় কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে তারা কোনো কাজ শুরু করার পূর্বে তীরের সাহায্যে গ্রীম দেবমূর্তির সাথে পরামর্শ করে নিত। কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার কবরের পাশে তার উট কিংবা ঘোড়া বেঁধে রাখা হতো এবং ধারণা করা হতো সে এক সময় কবর থেকে উঠে উট অথবা ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে অজ্ঞাত গন্তব্যে যাত্রা করবে।

৪. নিষ্ঠুরতা:

আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগে আরব সমাজ নিষ্ঠুরতায় ভরপুর ছিল। কোনো ব্যক্তি সুদের টাকা প্রদানে ব্যর্থ হলে তাকে উটের সাথে বেঁধে দেওয়া হতো। অভিজাত আরবরা নিছক খেলাচ্ছলে নারীদেরকে ঘোড়ার লেজের সাথে বেঁধে ঘোড়া ছুটিয়ে দিত। এতে হতভাগা নারীর মৃত্যু হলে তা প্রত্যক্ষ করে তারা আনন্দোল্লাস করতো। এছাড়া কেউ কেউ কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে জীবিত কবর দিত ।

৫. রাজনৈতিক অনৈক্য:

আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগে আরবদের মাঝে রাজনৈতিক ঐক্য বলতে কিছুই ছিল না। সমগ্র আরব ই রাজনৈতিকভাবে শতবিভক্ত ছিল। কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা এবং সংবিধানবিহীন এ সমাজ ছিল বিশৃঙ্খলায় ভরপুর। মনগড়া মতবাদের ছায়ায় আদিম যুগের বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ গোত্রীয় শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছিল।

৬. সামাজিক অনাচার:

আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগে আরবের অধিবাসীদের জীবন অনাচার, পাপাচার, দুর্নীতি, কুসংস্কার, অরাজকতা, ঘৃণা ইত্যাদি নিন্দনীয় কার্যকলাপে পরিপূর্ণ ছিল। মদ্যপান, জুয়াখেলা, চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ গ্রহণ তাদেরকে সর্বস্বান্ত করে তুলেছিল। ঐতিহাসিক খোদাবক্স এ সম্পর্কে বলেন, "War, women and wine were the three absorbing passions of the Arabs. [The Arab Civilization, P-121]

৭. পৌত্তলিকতা:

পৌত্তলিক আরবরা বিভিন্ন মূর্তির উপাসনা করতো। আরব বেদুইনরা মনে করতো কৃষিক্ষেত্র ও মরুভূমির ভিন্ন ভিন্ন অধিষ্ঠাত্রী দেবী আছে। তারা বিভিন্ন জড় পদার্থ, বৃক্ষ, কূপ, প্রস্তর, গুহা, বালির স্তূপ, টিলা, পাহাড় ইত্যাদির পূজা করতো। আরবরা লাত, মানাত ও উজ্জা আল্লাহর তিনজন কন্যা হিসেবে মনে করতো। উজ্জা মক্কাবাসীর নিকট সর্বাধিক সমাদৃত দেবী ছিল । অধিষ্ঠাত্রী দেবীর প্রধান আচার অনুষ্ঠান ছিল নরবলি । 

৮. সাহিত্য চর্চা:

আইয়্যামে জাহেলিয়ার যুগে আরবের লোকেরা কাসিদা বা গীতিকবিতা রচনা করে অশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেছিল । প্রাচীন আরবগণ বাগ্মিতা ও গীতিকাব্য রচনায় বিশেষ পারদর্শী ছিল। তবে লিখন পদ্ধতির সুষ্ঠু বিকাশ লাভ না করতে পারায় জাহেলিয়া যুগের সাহিত্যে গদ্য রচনার সংখ্যা ছিল অপ্রতুল। তবে বংশবৃত্তান্ত, গোত্রকলহ ও যুদ্ধবিগ্রহের ইতিহাসে এর কিছুটা দৃষ্টান্ত রয়েছে।

 ৯. কাব্যচর্চা:

জাহেলিয়া যুগের সংস্কৃতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল কাব্যচর্চা। কবিরা সমাজে বিশেষ মর্যাদা লাভ করতো। তাদের বিখ্যাত কবিতাগুলো কাসিদা নামে পরিচিত ছিল। তাদের কাব্যচর্চার বিষয়বস্তু ছিল নারী, বংশগৌরব, বীরত্বগাথা, যুদ্ধবিগ্রহের ঘটনাবলি, অতিথিপরায়ণতা, প্রেম কাহিনি ইত্যাদি । 

১০. কন্যাসন্তানের জীবন্ত সমাধি:

জাহেলিয়া যুগে আরবদের সবচেয়ে নির্মম, নিষ্ঠুর ও লোমহর্ষক কাজ ছিল কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবর দান । কারো গৃহে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে তার মুখমণ্ডল বিবর্ণ হয়ে যেত। মানসম্মান রক্ষা এবং অভাবের তাড়না নিরসনের জন্য অধিকাংশ সময় তাদের করুণ আর্তনাদ সত্ত্বেও কন্যাসন্তানকে জীবন্ত কবরস্থ করা হতো। কন্যাসন্তান জন্ম হওয়া তাদের জন্য লজ্জা, অভিশাপ ও দুর্ভাগ্যের কারণ হিসেবে বিবেচিত হতো ।

১১. ব্যভিচার:

প্রাক ইসলামি যুগে নারীরা ইচ্ছা অনিচ্ছায় ব্যভিচার ও পতিতাবৃত্তিতে লিপ্ত হতো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুরুষরা সন্তান লাভের আশায় স্ত্রীকে অন্য পুরুষের সাথে অবৈধ মিলনের অনুমতি দিত।

উপসংহার:

উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনায় প্রতিয়মান যে, তৎকালীন সময়ে আরব সমাজ অধঃপতনের সর্বনিম্ন স্তরে উপনীত হয়েছিল । এ সময় সমগ্র আরব সমাজ অত্যন্ত বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ছিল, সেখানে কোনো নীতি নৈতিকতা এবং মনুষ্যত্বের বালাই ছিল না। এ কারণেই এ যুগের নামকরণ করা হয়েছে আইয়ামে জাহেলিয়া ।


প্রাক ইসলামি আরবের সামাজিক অবস্থা:


প্রাক ইসলামি আরবের সামাজিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয় । নিম্নে আইয়ামে জাহেলিয়া যুগের সামাজিক অবস্থা আলোচনা করা হলো:

১. সামাজিক স্তর: 

জাহেলিয়া যুগে আরব সমাজে গোত্রভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।গোত্রভিত্তিক আরব সমাজের দুটি পৃথক স্তর ছিল । এরা ছিল ১. মরুবাসী বেদুইন ও ২. শহরবাসী আরব। এ দু শ্রেণির আরববাসী মক্কা, মদিনা, তায়েফ প্রভৃতি স্থানে বসতি গড়ে তোলে।  তাদের উভয়ের জীবনযাত্রা পৃথক হলেও তাদের সামাজিক রীতিনীতি, ধ্যানধারণা প্রায় একই ছিল ।

২. নারীর অবস্থা: 

অন্ধকার যুগে আরব সমাজে নারীর কোনো সামাজিক মর্যাদা ছিল না। এ যুগে নারীকে শুধু ভোগের সামগ্রী মনে করা হতো। পিতামাতা বা স্বামীর সম্পত্তি থেকে নারীকে বঞ্চিত করা হতো। এ সময় একজন পুরুষ একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করতো এবং একজন নারী একাধিক পুরুষ বা স্বামী গ্রহণ করতো । এছাড়া অবৈধ প্রণয়ের মতো ঘৃণ্য কাজেও পুরুষরা লিপ্ত থাকত । 

৩. কন্যাসন্তানকে জীবন্ত হত্যা: 

আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়াকে আরবরা দুর্ভাগ্যজনক ও অপমানকর মনে করতো। দারিদ্র্যের ভয়ে বা অপমান ও অভিশাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা কন্যাসন্তানকে জীবিত কবর দিতেও কুণ্ঠাবোধ করতো না ।

৪. জুয়াখেলা ও মদ্যপান:

প্রাক ইসলামি যুগে আরব সমাজে জুয়াখেলা ও মদ্যপান ছিল তাদের বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম। এ সময় আরবদের মাঝে জুয়াখেলা চরম আকার ধারণ করে। আরবরা জুয়াখেলায় তাদের স্ত্রীদের পর্যন্ত ব্যবহার করতো। যারা ঘৃণ্য জুয়াখেলা ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকত তাদেরকে আরবরা কৃপণ বলে মনে করতো। মদ ও নর্তকী নিয়ে তারা বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করতো। এজন্য ঐতিহাসিক খোদাবক্স বলেছেন, আরববাসীরা সুরা, নারী ও যুদ্ধে লিপ্ত থাকত। [Ref. The Arabs Civilization]

৫. দাসপ্রথা:

প্রাক ইসলামি যুগে আরব সমাজে দাসপ্রথার ব্যাপক প্রচলন ছিল। দাসদের সামাজিক অধিকার বা ব্যক্তি স্বাধীনতা বলতে কিছু ছিল না। এসময় দাসদাসীদের পণ্যের মতো হাটবাজারে কেনাবেচা করা হতো। দাসদাসীদের ওপর মালিকরা অমানবিক নির্যাতন করতো। দাসীদের উপপত্নী হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। এমনকি তাদের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল। কারো বিনা অনুমতিতে দাসদাসীর মধ্যে বিবাহ হলে তাদের যে সন্তান হতো তার ওপর তাদের কোনো অধিকার থাকত না। সন্তানটি সরাসরি তাদের প্রভুর মালিকানায় চলে যেত ।

৬.কৌলীন্য প্রথা: 

প্রাক ইসলামি যুগে আরব সমাজে বংশগত কৌলীন্য প্রথা অনেক প্রকট ছিল। কৌলীন্য প্রথার কারণে অহংকার, হিংসা, বিদ্বেষ সমাজের সর্বত্র একচেটিয়াভাবে বিরাজমান ছিল । এ প্রসঙ্গে মওলানা আকরাম খাঁ বলেন, প্ৰাক ইসলামি যুগে সেখানে যে বংশগত ও গোত্রগত কৌলীন্য প্রথার প্রভাব অপ্রতিহতভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল সে সম্বন্ধে কোনোই সন্দেহ নেই। এ বংশ মর্যাদা নিয়ে বিভিন্ন লোকের মধ্যে অহংকার, ঘৃণা ও হিংসা বিদ্বেষ যথেষ্টরূপে বিদ্যমান ছিল।

৭. ব্যভিচার: 

জাহেলিয়া যুগে অনাচার, ব্যভিচার ও নৈতিক অবক্ষয় সমাজকে কলুষিত করে তোলে। এসময় কোনো কোনো গোত্রে স্বামীরা স্ত্রীদের নিকট থেকে পুত্রসন্তান লাভের আশায় অন্য পুরুষের সাথে অবৈধ কাজে লিপ্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। এছাড়া স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা স্ত্রীকে নিকটবর্তী কোনো আত্মীয়ের সাথে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হতো।

৮. লুটতরাজ: 

জাহেলিয়া যুগে আরবরা লুটতরাজ, রাহাজানি করে সমাজে ত্রাসের সৃষ্টি করে। তারা জোরপূর্বক দারিদ্রের সম্পদ আহরণ করে লুটপাট চালাত। ঐতিহাসিক P. K. Hitti এ সমস্ত বেদুইনদের 'স্থলদস্যু' বলে অভিহিত করেছেন।

৯. কুসংস্কার: 

প্রাক ইসলামি যুগের সমাজব্যবস্থায় আরবরা নানা ধরনের কুসংস্কারে নিমজ্জিত ছিল। তারা বহু দেব-দেবীর পূজা করতো। তাদের মধ্যে কুসংস্কারের প্রভাব এতো বেশি ছিল যে, তারা যেকোনো কাজ শুরুর পূর্বে তীরের সাহায্যে দেবমূর্তির সাথে পরামর্শ করতো। এছাড়া আরব দেবতার সন্তুষ্টির জন্য তারা প্রায় পূজার বেদিতে নরবলি দিত।

১০. অতিথিপরায়ণতা: 

জাহেলিয়া যুগের আরববাসীদের মধ্যে অসদ্‌গুণাবলির আধিপত্য থাকলেও তাদের মাঝে কিছু কিছু ভালো গুণও ছিল। এ ভালো গুণাবলির মধ্যে আরবদের আতিথেয়তা ছিল অন্যতম । তাদের নিকট অতিথি শত্রু হলেও তারা পরম যত্নে অতিথিকে সমাদৃত করতেন। তাদের অতিথিপরায়ণতাকে কেন্দ্র করে অনেক কল্পকাহিনি লিখিত হয়েছিল ।

১১. চারিত্রিক দোষ ও গুণ: 

জাহেলিয়া যুগের মানুষের মধ্যে হিংসা, পরনিন্দা, অহংকার, নিষ্ঠুরতা, খুন, রাহাজানি, লুটতরাজ প্রভৃতি দোষের সমাবেশ ছিল। অপরদিকে, তারা ছিলেন অসীম সাহসী, স্বাধীনচেতা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের অধিকারী, সরল ও উদার। কাব্যচর্চা, বাগ্মিতা, আতিথেয়তা প্রভৃতি গুণের সমাবেশ তাদের মাঝে পূর্ণ মাত্রায় ছিল। আশ্রয় প্রার্থীকে আশ্রয় দান, ক্ষুধার্তকে অন্নদান, অত্যাচারিতকে সাহায্য করা তারা নিজদের মৌলিক দায়িত্ব মনে করতো।

উপসংহার:

উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্রাক ইসলামি যুগে আরবদের সামাজিক ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছিল । তাদের সামাজিক ও চারিত্রিক অধঃপতন আরব সমাজের ক্রমবিকাশের ধারাকে প্রতিহত করেছিল। নারীর প্রতি অবহেলা, দাসদাসী নির্যাতন, কৌলীন্য প্রথা, পালকপুত্র প্রথা, হত্যা, রাহাজানি প্রভৃতি অসামাজিক কার্যকলাপে আরব সমাজ কলুষিত হয়ে পড়েছিল। ফলে প্রাক ইসলামি যুগের এ সময়কালটিকে যথার্থই আইয়ামে জাহেলিয়া বা অন্ধকারযুগ বলা হয়ে থাকে ।

প্রাক ইসলামি আরবের রাজনৈতিক অবস্থা

প্রাক ইসলামি আরবের রাজনৈতিক অবস্থা: নিম্নে প্রাক ইসলামি আরবের রাজনৈতিক অবস্থা আলোচনা করা হলো:

১. গোত্রভিত্তিক সমাজব্যবস্থা:

প্রাক ইসলামি যুগে আরবদের রাষ্ট্রীয় জীবনের মূলভিত্তি ছিল গোত্রভিত্তিক সমাজব্যবস্থা । এ সময় কেন্দ্রীয় শাসনের অভাবে মরুবাসী আরব বেদুইনদের মধ্যে গোত্রশাসন প্রাধান্য লাভ করে । আরবরা বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত ছিল । যেমন বনু তাঘলিব, বনু বকর ইত্যাদি। এসময় গোত্রগুলোকে কাবিলা এবং গোত্রের অংশকে কাওম বলা হতো ।

২. গোত্র প্রধান:

গোত্রীয় শাসন পরিচালনার জন্য প্রত্যেক গোত্রে একজন দলপতি বা গোত্র প্রধান থাকত । এ গোত্রপতিদের উপাধি ছিল শেখ। সাহস, বিচারবুদ্ধি, পদমর্যাদা, বয়স, আর্থিক সচ্ছলতা, অভিজ্ঞতা প্রভৃতির ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শেখ নির্বাচিত হতো ।

৩. গোত্রপ্রীতি:

গোত্রীয় সদস্যদের মধ্যে গোত্রপ্রীতি, সম্ভাব ও ঐক্যের বন্ধন বজায় ছিল। গোত্রের প্রত্যেক সদস্য একে অপরকে যেকোনো বিপদে সাহায্য করতো। এমনকি তারা গোত্রের জন্য নিজেদের স্ত্রী-সন্তানদের পর্যন্ত বিসর্জন দিতে পারতো। মরুবাসী বেদুইনদের এ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে গোত্রপ্রীতি বা আসাবিয়া বলা হতো।

৪. গোত্রীয় সংঘাত:

জাহেলিয়া যুগে আরবে কোনো কেন্দ্রীয় শাসন না থাকায় গোত্রগুলোর মধ্যে কোনো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তাদের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট আইন বা অনুশাসন ছিল না। ফলে অতি সামান্য বিষয় নিয়ে গোত্রগুলোর মধ্যে সংঘাত তৈরি হতো। খুনের বদলে খুন' ছিল গোত্রগুলোর প্রধান স্লোগান। গোত্রীয় সংঘাত, যুদ্ধসমূহ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অজ্ঞতার যুগে চলতে থাকতো। ঐতিহাসিক গিবনের মতে, আরবে প্রায় ১৭০০ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।

৫. শাসনব্যবস্থা:

এ সময় মক্কার শাসনব্যবস্থা পরিচালনার জন্য সমগ্র শাসনব্যবস্থাকে পাঁচটি দফতরে বিভক্ত করা হয়। যথা: ক. হিজাবা- কাবাগৃহ আবৃতকরণ, খ. শিফায়া- তীর্থযাত্রীদের পানি সরবরাহ, গ. রিফাদা- তীর্থযাত্রীদের অভ্যর্থনা জানান, ঘ. নায়সি-সৌর ও চান্দ্রবছরের মধ্যে পঞ্জিকার সামঞ্জস্য বিধান দপ্তর এবং ঙ. লিওয়া- যুদ্ধের পতাকা উত্তোলন ।

৬. দারুন নদওয়া:

প্রাক ইসলামি আরবে আল মালা নামক একটি মন্ত্রণা পরিষদ ছিল। এ মন্ত্রণা পরিষদের নাম ছিল দারুন নদওয়া। এ পরিষদের কাজ ছিল বিভিন্ন কুরাইশ গোত্রের মধ্যে মৈত্রী জোট রক্ষা করে ভারসাম্য বজায় রাখা। এ পরিষদ মক্কার প্রশাসন ব্যবস্থা তদারকি করতো। পরিষদটির কোনো কার্যনিবাহী ক্ষমতা ছিল না ।

৭. বৈদেশিক আক্রমণ:

প্রাক ইসলামি যুগে আরবদেশের ওপর রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক প্রভাব ছিল উল্লেখযোগ্য। এর ফলে দুই পরাশক্তি রোম ও পারস্যের সাথে আরবের প্রায়ই দ্বন্দ্ব সংঘর্ষ এবং যুদ্ধ লেগেই থাকত ।

উপসংহার:

উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, পরিশেষে বলা যায় যে, ইসলামপূর্ব আরব জাহানের সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের অনাচার, ব্যভিচার, মদ, জুয়া, ধর্ষণ, ঘৃণ্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান, বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য, কুসংস্কার ও অসামাজিক কার্যাবলি বিদ্যমান ছিল। আরবের এরূপ অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে একজন মহান নেতার আবির্ভাব প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক P. K. Hitti যথার্থই বলেন, একজন মহান ধর্মীয় ও জাতীয় নেতার অভ্যুদয়ের সময় উপযোগী ছিল, মঞ্চও প্রস্তুত হয়েছিল।" (Ref. History of the Arabs, P-108]

প্রাক ইসলামি যুগে আরবের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা 

প্রাক ইসলামি যুগে আরবের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থা: নিম্নে প্রাক ইসলামি যুগে আরবের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অবস্থার বর্ণনা দেওয়া হলো:

প্রাক ইসলামি যুগে আরবের ধর্মীয় অবস্থা:

মরুবাসী বেদুইনদের কোনো বিশেষ ধরনের ধর্মবিশ্বাস ছিল না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, মরুবাসী আরবগণ অবিশ্বাস ও ভণ্ডামিতে না আত্মনিয়োগ করেছেন। 

ঐতিহাসিক P. K. Hitti বলেন, ব্যাবিলনবাসীদের মতো র পৌত্তলিক আরবগণের কোনো পুরাণতত্ত্ব, ধর্মতত্ত্ব বা বিশ্বোৎপত্তির  কোনো তত্ত্ব ছিল না। [Ref. History of the Arabs]।

প্রাক ইসলামি আরবে ৫ ধর্মের মানুষ বসবাস করত।   নিম্নে প্রাক ইসলামি যুগে আরবের ধর্মীয় অবস্থা বর্ণনা করা হলো:


১. জড়বাদী বা পৌত্তলিকতা:

প্রাক ইসলামি যুগে পৌত্তলিক আরবরা বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করতো। পৌত্তলিকতা ছিল তাদের সর্বজনীন ধর্ম। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক মুর বলেন, অধিকাংশ আরবগ ছিলেন পৌত্তলিক, তাদের ধর্ম ছিল পৌত্তলিক এবং বিশ্বাস ছিল আল্লাহর পরিবর্তে অদৃশ্য শক্তির কুহেলিকাপূর্ণ ভীতিতে ।

প্রাক ইসলামি যুগে আরবরা মনে করতো যে, দেবতাদের পূজা দ্বারা খুশি করতে পারলে সমস্ত বিপদ, আপদ, মহামারি, অসুখবিসুখ প্রভৃতি থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব। তৎকালীন সময়কার দেবদেবীর মধ্যে আরবদের নিকট সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় দেবদেবী ছিল আল মানাহ, আল লাত ও আল উজ্জা। এদেরকে আল্লাহর তিনটি কন্যা' বলা হতো। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আরবের লোকেরা উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক সৃষ্টিকর্তার জন্য বাকি অর্ধেক দেবতাদের জন্যে রাখত।

২. প্রকৃতি পূজারকঃ

তার বিভিন্ন উপাদানকে প্রজা করত কুয়া, উট, চাঁদ, সূর্য ইত্যাদি। মুক্ত মরুপ্রান্তরে বসবাস করে আরববাসীরা সৌরজগতের প্রতি গভীরভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।  তারা সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহ, চন্দ্র, নক্ষত্র, তারকা প্রভৃতির দেবতা মেনে পূজা করতো। বিশেষ করে দক্ষিণ আরবের স্বাধীন রাজ্যগুলোতে সূর্য ও চন্দ্র দেবতার পূজা প্রচলিত ছিল।

৩. ইহুদিঃ 

প্রাক ইসলামি যুগে দক্ষিণ আরবের হিমারীয় রাজা ইহুদি ধর্মের প্রবর্তন করে। এ সময় ইহুদিরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাস করলেও তারা জড়বাদে আসক্ত হয়ে পড়ে। তাদের পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, নিয়ন্ত্রণকর্তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা ছিল না। তারা বিশ্বজগতের স্রষ্টা সম্বন্ধে সঠিক ধারণা দিতে অক্ষম ছিল এবং ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে বৈষম্য ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছিল ।

৪. খ্রিস্টধর্ম:

প্রাক ইসলামি আরবে ইহুদি ধর্মের মতো খ্রিস্টধর্মও প্রচলিত ছিল। ঐতিহাসিক মুর বলেন, ধর্মীয় ক্ষেত্রে আরব ভূমি খ্রিস্টধর্ম প্রবর্তনের প্রচেষ্টায় ঘন ঘন আন্দোলিত হয়।

৫. হানাফি সম্প্রদায়:

আরবের কুসংস্কার ও অনাচারপূর্ণ পরিবেশে এক শ্রেণির লোক মূর্তিপূজার বিরোধিতা করে একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী। হয়ে ওঠে। ইতিহাসে এদেরকে হানাফি সম্প্রদায় বলা হয় । 

প্রাক ইসলামি যুগে আরবের সাংস্কৃতিক অবস্থা

প্রাক ইসলামি যুগে আরবের সাংস্কৃতিক অবস্থা: নিম্নে প্রাক ইসলামি যুগে আরবের সাংস্কৃতিক অবস্থা বর্ণনা করা হলো:

১. সাহিত্য চর্চা:

সাহিত্য চর্চায় আরবরা ব্যাপক সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়েছিল। আরবদের সাহিত্য ছিল মূলত মৌখিক। আরব নরনারীরা প্রায় সকলেই সাহিত্য চর্চার প্রতি অনুরাগী ছিলেন। ঐতিহাসিক P. K. Hitti বলেন, পৃথিবীতে সম্ভবত অন্য কোনো জাতি আরবদের ন্যায় সাহিত্য চর্চায় এত বেশি স্বতঃস্ফূর্ত একাগ্রতা প্রকাশ করেনি এবং লিখিত ও কথিত শব্দ দ্বারা আবেগাচ্ছন্ন হয়নি। 

২. গীতিকাব্য:

৫২২-৬২২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে আরবে অসংখ্য গীতিকাব্য রচিত হয়। এ সময় আরব সংস্কৃতির রা ঐতিহ্যবাহী এ আরবি গীতিকাব্য সমসাময়িক ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য ছিল। গীতিকাব্যগুলোর বিষয়বস্তু ছিল যুদ্ধের ঘটনা, বংশগৌরব, বীরত্বপূর্ণ কাহিনি, যুদ্ধের বিবরণ, উটের বিস্ময়কর গুণাবলি ছাড়াও নারী প্রেম, যৌন সম্পর্কিত ইত্যাদি বিষয়। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক P. K. Hitti বলেন, কাব্যপ্রীতিই ছিল বেদুইনদের সাংস্কৃতিক সম্পদ।

৩. সাবআ মুয়াল্লাকাত:

প্রাক ইসলামি আরবে কবিদের মধ্যে মক্কার অদূরে ওকাজ নামক স্থানে অনুষ্ঠিত মেলায় কবিতার প্রতিযোগিতা হতো। সোনালি হরফে লিখিত ৭ জন শ্রেষ্ঠ কবির কবিতা কাবার দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো। এ ঝুলন্ত ৭টি কবিতাকে সাবআ মুয়াল্লাকাত বা সাতটি ঝুলন্ত কবিতা বলা হতো।

৪. বিজ্ঞানচর্চা:

প্রাক ইসলামি যুগে আরবরা সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি বিজ্ঞানচর্চাও করতো। তারা চিকিৎসাবিদ্যা, রসায়ন শাস্ত্র, বায়ুপ্রবাহের দিক নির্ণয়, জ্যোতির্বিদ্যা, পশু চিকিৎসা এবং বৃষ্টিপাতের সময় নির্ণয়ে পারদর্শী ছিল।

৫. কাব্যচর্চা:

প্রাক ইসলামি যুগে আরব সংস্কৃতির গৌরবময় যুগে কাব্যচর্চা ছিল অন্যতম সাহিত্য চেতনা প্রকাশের মাধ্যম। এ সময় উন্নত লিখন পদ্ধতির অভাবে কবিরা কবিতাগুলো পাঠ করে শুনাতেন। কবিদের বিখ্যাত কবিতাগুলোকে কাসিদা বলা হতো। ঐতিহাসিক P. K. Hitti বলেন, এ যুগের কবিতাগুলো ছন্দ এবং বিশদ ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে ইলিয়াড ও ওডিসিকে অতিক্রম করেছে।

৬. ওকাজ মেলা:

প্রাক ইসলামি যুগে আরবদের সাংস্কৃতিক জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ওকাজ মেলা। ওকাজ মেলায় বহু দূরদূরান্ত থেকে আরবরা সাহিত্য, কবিতা, গীতিকাব্য, প্রতিযোগিতার জন্য আগমন করতো। প্রতি হজের মৌসুমে কয়েকদিন ধরে ওকাজ মেলা চলত। ঐতিহাসিক, P. K. Hitti এ মেলাকে Academic Franchaise বলে অভিহিত করেন।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post