বায়োমেট্রিক্স কি? বায়োমেট্রিকস এর বৈশিষ্ট্য, প্রকারভেদ ও ব্যবহার

বায়োমেট্রিক্স কি? বায়োমেট্রিকস এর বৈশিষ্ট্য,  প্রকারভেদ ও ব্যবহার


বায়োমেট্রিক্স কি? বায়োমেট্রিকস এর বৈশিষ্ট্য,  প্রকারভেদ ও ব্যবহার

বায়োমেট্রিক্স কি

গ্রিক শব্দ "bio" অর্থ life এবং "metric" অর্থ to measure-এই দুটো মিলে হয়েছে Biometrics. বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি যেখানে বায়োলজিক্যাল ডেটা মাপা ও বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত করা যায়। ব্যক্তি শনাক্তকরণ এবং কোনো সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের কাজে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে মানুষের বায়োলজিক্যাল ডেটা কম্পিউটারের ডেটাবেজে সংরক্ষিত করে রাখা হয় এবং পরবর্তীতে এসব ডেটা নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিলিয়ে দেখে বৈধতা নির্ণয় করা হয়।

 

বায়োমেট্রিক্স এর প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্যঃ


দেহের গঠনগত ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি নিম্নোক্ত প্রকারের হতে পারে।

 

১। দেহের গঠনগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি :

চোখের আইরিস ও রেটিনা (Iris & Retina) চোখের মণির চারপাশে বেষ্টিত রঙিন বলয় বিশ্লেষণ করে যে পদ্ধতিতে শনাক্তকরণ করা হয় তাকে আইরিস শনাক্তকরণ পদ্ধতি বলে। চোখের পেছনের রেটিনা বা অক্ষিপটের মাপ বিশ্লেষণ করে শনাক্তকরণের পদ্ধতিকে রেটিনা শনাক্তকরণ পদ্ধতি বলে।  সুবিধা : (১) শনাক্তকরণে খুব অল্প সময় প্রয়োজন। (২) মানুষের চোখের আইরিস (Iris) হলো একটি আদর্শ অঙ্গ যা স্বচ্ছ পর্দা দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে, ফলে এর কোনো ক্ষয় নেই ৷ (৩) শনাক্তকরণে ফলাফল সুক্ষ্ণতা ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা হাতের আঙুলের ছাপ থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি।  অসুবিধা :  (১) আইরিস এবং রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। (২) বেশি মেমরি প্রয়োজনে হয়। (৩) চোখের চশমা ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে শনাক্তকরণ করা যায় না। (৪) আইরিস রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতি এক নয়।  DNA (ডিএনএ) : DNA (ডিএনএ) :  DNA হচ্ছে জেনেটিক কোডের সংক্ষিপ্ত নাম। এর পুরো নাম Deoxyribo Neucleic Acid এটি মূলত অক্সিজেন, কার্বন, নাইট্রোজেন এবং হাইড্রোজেন এর দ্বারা গঠিত মাইক্রোমলিকিউল। এটি রাসায়নিক তথ্যের অনুবর্তী কিতার মতো বস্তু। আমাদের দেহকোষ বা সেলের নিউক্লিয়াসে এর অবস্থান। নিউক্লিয়াস এসিড নামে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণু বা মলিকিউল দিয়ে ডিএনএ তৈরি। আমাদের ডিএনএ এসব ক্ষুদ্রতর অণু একটি সুনির্দিষ্ট ধারাক্রমে সাজানো থাকে। ঠিক যেমনটি সাজানো থাকে একটি বাক্যে একর পর এক অক্ষর।  DNA-কে বংশ বিস্তারের ব্লু প্রিন্ট বলা যেতে পারে। ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুর মিশ্রণের সময় শুক্রাণুর মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ বাদ যায়, এবং শুধু মায়ের মাইটোকন্ড্রিয়াল DNA স্থান পায়।  সুবিধা : (১) DNA ফিঙ্গারপ্রিন্টিং তৈরি ও শনাক্তকরণের জন্য কিছু সময় লাগে। (২) পদ্ধতিগত কোনো ত্রুটি না থাকলে শনাক্তকরণের সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ।  অসুবিধা : (১) প্রফাইলিং করার সময় সংকরায়ন ও প্রোষিং পদ্ধতির ত্রুটি DNA আলেখনের ত্রুটির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। (২) তুলনামূলক খরচ বেশি। (৩) সহোদয় সমভেদের ক্ষেত্রে DNA ফিঙ্গারপ্রিন্টিং সম্পূর্ণ এক হয়।  ২। আচরণগত বৈশিষ্ট্য : স্বাক্ষর (Signature) :  স্বাক্ষরের আকার, লেখার গতি, সময় এবং কলমের চাপকে পরীক্ষা করে ব্যবহারকারীর স্বাক্ষর শনাক্তকরণ করা হয়। এ পদ্ধতিতে একটি টেবলেট পিসি ও বিশেষ ধরনের একটি কলম ব্যবহার করা হয়। ব্যাংক, বিমা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বাক্ষর শনাক্তকরণের কাজে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।  কী-স্ট্রোক (Key-stroke) :  'কী স্ট্রোক' হচ্ছে বিস্তারিত সময় জ্ঞানের তথ্য বিবরণী। যখন কোনো ব্যক্তি কম্পিউটার কীবোর্ডে কাজ করে, তখন প্রত্যেক ‘কী’তে চাপ দিয়ে ছেড়ে দিলে তা সঠিক বিবরণ দেয়।  শিরা (Vain) : হাত ও শিরার প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে ব্যবহারকারী শনাক্ত করা হয়।  গলার আওয়াজ বা কণ্ঠস্বর (Voice) : প্রত্যেক মানুষের কণ্ঠের ধ্বনির বৈশিষ্ট্য, সুরের উচ্চতা, সুরের মূর্ছনা, স্পন্দনের দ্রুততা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে শনাক্তকরণ করা হয়।  বায়োম্যাট্রিক্স-এর কাজ :  কোনো ব্যক্তি শনাক্তকরণ (Identification) এবং তার সত্যাসত্য নির্ধারণ (Verification) কাজে ব্যবহার করা হয় ।  ব্যক্তি শনাক্তকরণ (Identification) :  বায়োম্যাট্রিক্স প্রযুক্তিতে ব্যক্তির অদ্বিতীয় কোনো বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করে তা ঐ ব্যক্তির নামের বিপরীতে সিস্টেমের কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। এক্ষেত্রে সিস্টেমের প্রসেসিং ক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে বেশি প্রয়োজন হয়, যাতে সময়মতো অনেক ব্যক্তির রেকর্ডের সংগ্রহ থেকে সহজেই কাঙ্ক্ষিত কোনো ব্যক্তির রেকর্ড খুঁজে বের করা যায়। গতানুগতিক পদ্ধতিতে টোকেন নির্ভর শনাক্তকরণ পদ্ধতি যেমন পাসপোর্ট, লাইসেন্স, আইডি কার্ড, ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় এবং জ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে ইউজেরনাম, পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বায়োম্যাট্রিক্স পদ্ধতিতে মানুষের কোনো অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে শনাক্তকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যা টোকেন নির্ভর বা জ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ।    ব্যক্তির সত্যাসত্য নির্ধারণ (Verification) :   এই পদ্ধতিতে পূর্বে থেকেই কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে সংরক্ষিত মানুষের কোনো অদ্বিতীয় এক বা একাধিক বায়োম্যাট্রিক্স বৈশিষ্ট্যের সাথে পরীক্ষাধীন ব্যক্তির বর্তমান বায়োম্যাট্রিক্স ডেটার তুলনা করে ব্যক্তির সত্যাসত্য নির্ধারণ করা হয়। গতানুগতিক এবং জ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে একজন ব্যক্তিকে তার লাইসেন্স, পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড ইত্যাদি বহন করতে হয় এবং ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর মনে রাখতে হয়। বায়োম্যাট্রিক্স পদ্ধতিতে অধিক গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।


মানুষের চেহারা

আঙ্গুলের ছাপ

হ্যান্ড জিওমেট্রি (হাতের গঠন ও আঙ্গুলের দৈর্ঘ্যের মাপ)

চোখের আইরিস এবং রেটিনা

ডিএনএ


২। আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি :

বায়োমেট্রিক্স কি? বায়োমেট্রিকস এর বৈশিষ্ট্য,  প্রকারভেদ ও ব্যবহার


স্বাক্ষর

কী স্ট্রোক

শিরা বা ভেইন

গলার আওয়াজ বা কণ্ঠস্বর

 

১। গঠনগত বৈশিষ্ট্য :

 

মানুষের চেহারা (Face recognition) :

Face recognition

সাধারণত কোনো একজন মানুষের মুখমণ্ডলের সাথে অন্য কোনো মানুষের মুখমণ্ডলের হুবহু মিল পাওয়া যায় না। মানুষের চেহারা শনাক্তকরণ হচ্ছে এমন এক ধরনের প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার যার সাহায্যে মানুষের মুখের গঠন প্রকৃতি পরীক্ষা করে তাকে শনাক্ত করা হয়। এ পদ্ধতিতে দুই চোখের মধ্যবর্তী দূরত্ব, নাকের দৈর্ঘ্য, ব্যাস, চোয়ালের কৌণিক পরিমাণ ইত্যাদি পরিমাপের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়।

 

সুবিধা :

(১) সহজে ফেইস শনাক্ত করা যায়।

(২) সঠিকভাবে এর ফলাফল পাওয়া যায়।

 

অসুবিধা :

 

(১) ক্যামেরা ছাড়া এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় না। ক্যামেরায় আলোর পার্থক্যের কারণে অনেক ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

(২) মেকআপ ব্যবহার, গহনা ব্যবহার এবং চুলের স্টাইল পরিবর্তন ইত্যাদি মুখমণ্ডল শনাক্তকরণকে ব্যাহত করে।

 

আঙুলের ছাপ (Fingerprint) :

Fingerprint

প্রত্যেক মানুষের আঙুলের ছাপ থাকে যাকে আমরা টিপসই বলি। এটি অন্য কোনো মানুষের আঙুলের ছাপ বা টিপসইয়ের সাথে মিলবে না। অর্থাৎ মানুষের আঙুলের ছাপ হচ্ছে ইউনিক বা অদ্বিতীয়। ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার হচ্ছে এমন একটি ডিভাইস যার সাহায্যে মানুষের আঙুলের ছাপ বা টিপসইকে ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে তা পূর্ব থেকে সংরক্ষিত আঙুলের ছাপ বা টিপসইয়ের সাথে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণে এ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়।


আঙুলের ছাপের সুবিধা :

 

(১) এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তুলনামূলক কম খরচ হয়।

(২) কম সময়ের মধ্য শনাক্তকরণ করা যায় খুব।

(৩) সাফল্যের পরিমাণ শতভাগ ।

 

আঙুলের ছাপের অসুবিধা :

 

(১) শুষ্কতা বা আঙুলে কোনো প্রকার ময়লা থাকলে তা সঠিকভাবে শনাক্তকরণ করা যায় না ৷

(২) ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা উপযুক্ত নয়।

 

হ্যান্ড জিওমেট্রি (Hand geometry) :

Hand geometry


হ্যান্ড জিওমেট্রি পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক্স ডিভাইস দ্বারা মানুষের হাতের আকৃতি বা জ্যামিতিক গঠন ও সাইজ নির্ণয়ের মাধ্যমে মানুষকে শনাক্ত করা যায়। এ পদ্ধতিতে মানুষের হাত রিডারের নির্দিষ্ট স্থানে রাখার পর উক্ত ডিভাইস অতি কম সময়ের মধ্যে ডেটাবেজের মানের সাথে প্রাপ্ত মান পরীক্ষা করে ফলাফল প্রদান করে থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীদের উপস্থিতি নির্ণয়, বিল্ডিং বা কক্ষের প্রবেশদ্বারে, লাইব্রেরি, বিভিন্ন ডেটাসেন্টার ও আদালতে আসামি শনাক্তকরণ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় ।

সুবিধা :

(১) ব্যবহারকারীদের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা খুব সহজ

(২) তার হাতটি একটি নির্দিষ্ট স্থানে ছাড়া কোনোকিছু করার প্রয়োজন হয় না।

(৩) সিস্টেমে খুব সল্প মেমরির প্রয়োজন হয়।

অসুবিধা:

(১) হ্যান্ড জিওমিট্রি ডিভাইসগুলোর দাম বেশি।

(২) ইন্সটলেশন খরচও বেশি।

(৩) আর্থাইটিস রোগীর জন্য ব্যবহার করা উপযুক্ত নয়।


চোখের আইরিস ও রেটিনা (Iris & Retina)

Iris & Retina

চোখের মণির চারপাশে বেষ্টিত রঙিন বলয় বিশ্লেষণ করে যে পদ্ধতিতে শনাক্তকরণ করা হয় তাকে আইরিস শনাক্তকরণ পদ্ধতি বলে। চোখের পেছনের রেটিনা বা অক্ষিপটের মাপ বিশ্লেষণ করে শনাক্তকরণের পদ্ধতিকে রেটিনা শনাক্তকরণ পদ্ধতি বলে।

সুবিধা :

(১) শনাক্তকরণে খুব অল্প সময় প্রয়োজন।

(২) মানুষের চোখের আইরিস (Iris) হলো একটি আদর্শ অঙ্গ যা স্বচ্ছ পর্দা দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে, ফলে এর কোনো ক্ষয় নেই ৷

(৩) শনাক্তকরণে ফলাফল সুক্ষ্ণতা ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা হাতের আঙুলের ছাপ থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি।

অসুবিধা :

(১) আইরিস এবং রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

(২) বেশি মেমরি প্রয়োজনে হয়।

(৩) চোখের চশমা ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে শনাক্তকরণ করা যায় না।

(৪) আইরিস রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতি এক নয়।


DNA (ডিএনএ) :

DNA

DNA হচ্ছে জেনেটিক কোডের সংক্ষিপ্ত নাম। এর পুরো নাম Deoxyribo Neucleic Acid এটি মূলত অক্সিজেন, কার্বন, নাইট্রোজেন এবং হাইড্রোজেন এর দ্বারা গঠিত মাইক্রোমলিকিউল। এটি রাসায়নিক তথ্যের অনুবর্তী কিতার মতো বস্তু। আমাদের দেহকোষ বা সেলের নিউক্লিয়াসে এর অবস্থান। নিউক্লিয়াস এসিড নামে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণু বা মলিকিউল দিয়ে ডিএনএ তৈরি। আমাদের ডিএনএ এসব ক্ষুদ্রতর অণু একটি সুনির্দিষ্ট ধারাক্রমে সাজানো থাকে। ঠিক যেমনটি সাজানো থাকে একটি বাক্যে একর পর এক অক্ষর।

DNA-কে বংশ বিস্তারের ব্লু প্রিন্ট বলা যেতে পারে। ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুর মিশ্রণের সময় শুক্রাণুর মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ বাদ যায়, এবং শুধু মায়ের মাইটোকন্ড্রিয়াল DNA স্থান পায়।


সুবিধা :

(১) DNA ফিঙ্গারপ্রিন্টিং তৈরি ও শনাক্তকরণের জন্য কিছু সময় লাগে।

(২) পদ্ধতিগত কোনো ত্রুটি না থাকলে শনাক্তকরণের সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ।

অসুবিধা :

(১) প্রফাইলিং করার সময় সংকরায়ন ও প্রোষিং পদ্ধতির ত্রুটি DNA আলেখনের ত্রুটির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। (২) তুলনামূলক খরচ বেশি।

(৩) সহোদয় সমভেদের ক্ষেত্রে DNA ফিঙ্গারপ্রিন্টিং সম্পূর্ণ এক হয়।

২।  আচরণগত বৈশিষ্ট্য :

স্বাক্ষর (Signature) :

স্বাক্ষরের আকার, লেখার গতি, সময় এবং কলমের চাপকে পরীক্ষা করে ব্যবহারকারীর স্বাক্ষর শনাক্তকরণ করা হয়। এ পদ্ধতিতে একটি টেবলেট পিসি ও বিশেষ ধরনের একটি কলম ব্যবহার করা হয়। ব্যাংক, বিমা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বাক্ষর শনাক্তকরণের কাজে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

কী-স্ট্রোক (Key-stroke) :

'কী স্ট্রোক' হচ্ছে বিস্তারিত সময় জ্ঞানের তথ্য বিবরণী। যখন কোনো ব্যক্তি কম্পিউটার কীবোর্ডে কাজ করে, তখন প্রত্যেক কীতে চাপ দিয়ে ছেড়ে দিলে তা সঠিক বিবরণ দেয়।

শিরা (Vain) : হাত ও শিরার প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে ব্যবহারকারী শনাক্ত করা হয়।

গলার আওয়াজ বা কণ্ঠস্বর (Voice) : প্রত্যেক মানুষের কণ্ঠের ধ্বনির বৈশিষ্ট্য, সুরের উচ্চতা, সুরের মূর্ছনা, স্পন্দনের দ্রুততা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে শনাক্তকরণ করা হয়।


বায়োম্যাট্রিক্স-এর কাজ :

DNA

কোনো ব্যক্তি শনাক্তকরণ (Identification) এবং তার সত্যাসত্য নির্ধারণ (Verification) কাজে ব্যবহার করা হয় ।

ব্যক্তি শনাক্তকরণ (Identification) :

বায়োম্যাট্রিক্স প্রযুক্তিতে ব্যক্তির অদ্বিতীয় কোনো বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করে তা ঐ ব্যক্তির নামের বিপরীতে সিস্টেমের কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। এক্ষেত্রে সিস্টেমের প্রসেসিং ক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে বেশি প্রয়োজন হয়, যাতে সময়মতো অনেক ব্যক্তির রেকর্ডের সংগ্রহ থেকে সহজেই কাঙ্ক্ষিত কোনো ব্যক্তির রেকর্ড খুঁজে বের করা যায়। 

গতানুগতিক পদ্ধতিতে টোকেন নির্ভর শনাক্তকরণ পদ্ধতি যেমন পাসপোর্ট, লাইসেন্স, আইডি কার্ড, ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় এবং জ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে ইউজেরনাম, পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বায়োম্যাট্রিক্স পদ্ধতিতে মানুষের কোনো অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে শনাক্তকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যা টোকেন নির্ভর বা জ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ।

ব্যক্তির সত্যাসত্য নির্ধারণ (Verification) :

এই পদ্ধতিতে পূর্বে থেকেই কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে সংরক্ষিত মানুষের কোনো অদ্বিতীয় এক বা একাধিক বায়োম্যাট্রিক্স বৈশিষ্ট্যের সাথে পরীক্ষাধীন ব্যক্তির বর্তমান বায়োম্যাট্রিক্স ডেটার তুলনা করে ব্যক্তির সত্যাসত্য নির্ধারণ করা হয়। গতানুগতিক এবং জ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে একজন ব্যক্তিকে তার লাইসেন্স, পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড ইত্যাদি বহন করতে হয় এবং ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর মনে রাখতে হয়। বায়োম্যাট্রিক্স পদ্ধতিতে অধিক গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।


Post a Comment

Previous Post Next Post