মনোভাব পরিমাপের লিকার্ট স্কেল সম্পর্কে আলোচনা কর।
ভূমিকা :
বর্তমানে মনোভাব পরিমাপের একাধিক স্কেলের প্রচলন লক্ষ করা যায়। লিকার্ট স্কেলও তেমনি একটি মনোভাব পরিমাপক স্কেল। যা তুলনামূলকভাবে থার্স্টোন স্কেলের চেয়ে সহজ ও সরল। পরিমাপের জন্য উক্ত পদ্ধতির নামকরণ করা হয় লিকার্ট পদ্ধতি।
লিকার্ট পদ্ধতিতে যে বিষয় সম্পর্কে ইতিবাচক ও নেতিবাচক বহুসংখ্যক উক্তি সংগ্রহ। করতে হয়। অতঃপর সংগৃহীত উক্তি বিভিন্ন ব্যক্তির উপর প্রয়োগ করে প্রতিটি উক্তির প্রতি তাদের মনোভাব যাচাই করা হয়। নিম্নে বর্ণিত পাঁচ মাত্রার স্কেলে টিক চিহ্ন দিয়ে প্রত্যেকটি উক্ত ব্যক্তি কতটুকু সমর্থন করে তা উল্লেখ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রতিটি উক্তির প্রতি ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী তার সাফল্যাঙ্ক পাওয়া যাবে। সাফল্যাঙ্ক গণনার ক্ষেত্রে ইতিবাচক - উক্তিগুলোর মান বা নম্বর নিম্নে দেখানো হলো:
সবশেষে চূড়ান্তভাবে পার্থক্যসূচক উক্তি বাছাইয়ের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিদের মনোভাব সাফল্যাঙ্কের ভিত্তিতে পদ বিশ্লেষণ করা হয়। এতে প্রত্যেক উক্তির সাফল্যাঙ্ক এবং সর্বমোট ব সাফল্যাঙ্কের মধ্যে সহসম্পর্ক নির্ণয় করা হয়। এই সহসম্পর্ক - উক্তির যথার্থতা নির্দেশ করে। উচ্চ সহসম্পর্ক বিশিষ্ট উক্তিগুলোকে চূড়ান্ত স্কেলে রাখা হয় এবং নিম্ন সহসম্পর্ক বিশিষ্ট উক্তিগুলোকে বাদ দেওয়া হয়।
লিকার্ট স্কেলের মাধ্যমে প্রাপ্ত মনোভাবের
সাফল্যাঙ্ক খুব কম ও হলে তা প্রতিকূল মনোভাব নির্দেশ করে। এবং সাফল্যাঙ্ক বেশি হলে
তা অনুকূল মনোভাব নির্দেশ করে। কিন্তু মধ্যবর্তী সাফল্যাঙ্কের ব্যাখ্যা বেশ জটিল। কারণ
এই সাফল্যাঙ্ক মনোভাবের নিরপেক্ষ এলাকাকে নির্দেশ করলেও এর সঠিক ব্যাখ্যা অস্পষ্ট।
লিকার্ট স্কেলের দুর্বলতা:
মনোভাব পরিমাপের ক্ষেত্রে লিকার্ট স্কেলের
মধ্যবর্তী সাফল্যাঙ্কের ব্যাখ্যাটা বেশ জটিল। কেননা লিকার্ট স্কেলের মধ্যবর্তী বিন্দুটি
আপাতদৃষ্টিতে মনোভাবের নিরপেক্ষতা নির্দেশ করেছে মনে হলেও সত্যিকারভাবে এটি মনোভাবের
নিরপেক্ষতা সমর্থক নয়। আর এটিই হচ্ছে লিকার্ট স্কেলের প্রধান দুর্বলতা।
উপসংহার:
পরিশেষে বলা যায় যে, উপরিউক্ত
দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও মনোভাব পরিমাপের মধ্যে লিকার্ট স্কেল সবচেয়ে বেশি প্রচলিত।
কেননা এই স্কেল তৈরিতে খুব অল্প সময় লাগে। তাছাড়াও লিকার্ট স্কেল একটি বিজ্ঞানসম্মত,
সহজতর এবং কার্যকর পদ্ধতি।