মাৎস্যন্যায় সম্পর্কে ধারণা দাও।

 মাৎস্যন্যায় সম্পর্কে ধারণা দাও।

মাৎস্যন্যায় সম্পর্কে ধারণা দাও।


ভূমিকা :

শশাঙ্কের মৃত্যুর পর প্রাচীন বাংলার আকাশে অন্ধকারের অমানিশা নেমে আসে। সে সময় কোনো স্থায়ী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সবত্র অস্থিরতা বিরাজ করতো। সবলরা দুর্বলদের উপর নির্মম অত্যাচার করতো।যা ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার ।

 

মাৎস্যন্যায় :

মাৎস্যন্যায় একটি শব্দ যার শাব্দিক অর্থ বড় মাছ কতৃক ছোট মাছকে খেয়ে ফেলা। প্রাচীন বাংলায় মাৎস্যন্যায় বলতে অরাজকতাকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ ছোট ছোট রাজ্যগুলো বড় রাজ্য দ্বারা দখল ও বিপদগ্রস্থ হওয়াকে বুঝিয়েছে।


 শশাংঙ্কের মৃত্যু হয় বাংলার আকাশে জোর যার মুল্লুক তার এ নীতি চালু হয় ফলে  অরাজক অবস্থা সৃষ্টি হয়। ফলে  এ সময়টাকে বলা হয় মাৎস্যন্যায় বা অরাজকতার   যুগ বলা হয় ।

 

 মাৎস্যন্যায় শব্দের অর্থ বিশ্লেষণ :

 

মাৎস্যন্যায় রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ব্যবহৃত একটি প্রতিশব্দ এর অর্থ হচ্ছে আইন বিবর্জিত রাষ্ট্র। কৌটিলের অর্থশাস্ত্রে এর ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। যখন সবল দুর্বলকে গ্রাস করে, যেমন মাছের রাজত্ব যেখানে নিয়ন্ত্রণকারী কেউ নেই, সেখানে বড় মাছ ছোট মাছকে ভক্ষণ করে কিন্তু কেউ কিছু বলে না।

 

তেমনি দেশের অরাজক অবস্থায় সবল দুর্বলের উপর অত্যাচার করে সর্বস্ব গ্রাস করে নেয়। বাংলার এ বিশৃঙ্খল অবস্থা মাছের আচরণের সাথে তুলনা করে এ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এ অরাজকতার মধ্য থেকে পালবংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপাল বাংলার রাজা রূপে প্রতিষ্ঠিত হন।


মাৎস্যন্যায়ের সময়কালঃ

রাজা শশাংঙ্কের মৃত্যুর পর পরবর্তী ১০০ বছর ছিল মাৎস্যন্যায়ের সময়কাল।

 

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলায় শশাঙ্কের মৃত্যু হলে পুরো এলাকায় অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছিল।  যা মাৎস্যন্যায় নামে পরিচিত। প্রায় একশ বছর এ অবস্থা চলার পর পাল বংশের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মাৎস্যন্যায় অবস্থায় পরিবর্তন হয় ।

Post a Comment

Previous Post Next Post