চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বগুলো কী কী? চীন-মার্কিন সম্পর্কের প্রকৃতি পরীক্ষা করুন।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বগুলো কী কী? চীন-মার্কিন সম্পর্কের প্রকৃতি পরীক্ষা করুন।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বগুলো কী কী? চীন-মার্কিন সম্পর্কের প্রকৃতি পরীক্ষা করুন।

ভূমিকা : 

একবিংশ শতাব্দীতে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশ্বের যেকোনো দেশের জন্য ঈর্ষণীয় ব্যাপার। চীন তার অর্থনৈতিক উন্নয়ন দ্বারা বর্তমান সময়ের একমাত্র পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বরাজনীতিতে নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। মূলত সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বরাজনীতিতে যে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়েছিল, বর্তমানে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশ্বরাজনীতিতে সেই শূন্যতা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিগত কয়েক বছর চীন তার অর্থনীতিকে যেভাবে বিকশিত করছে, তাতে করে অদূর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব খর্ব হবে।


যে সকল বিষয় নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে তা নিচে আলোচনা করা হলো :

 ১. চীনে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হওয়া :

চীনে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হওয়া :

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নেতারা বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং চীনে গণতন্ত্রকামীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। চীন এই অভিযোগ বারবার অস্বীকার করে আসছে। চীন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নটি দেখে, চীন সেভাবে দেখে না। চীন এটাও বলেছে মানবাধিকার ব্যাপারটি সম্পূর্ণই চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ ব্যাপারে অন্য দেশের কোনো কিছু করণীয় নেই। মার্কিন চাপের মুখে হোক কিংবা অন্য যেকোনো কারণেই হোক, তিয়েনআনমেনের ঘটনাবলির কারণে যারা গ্রেফতার হয়েছিল, চীন প্রায় সবাইকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে। এদের অনেকেই এখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

২. তাইওয়ান প্রশ্নে :

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বগুলো কী কী

তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে সমালোচনা করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র এখন অবশ্য তাইওয়ানকে আলাদা রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয় না। তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাইওয়ানের অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। চীন তাইওয়ানকে নিজের একটি অংশ বলেই মনে করে এবং বিশ্বাস করে ১৯৮০ সালে দেংজিয়াওপিং যে তত্ত্ব দিয়েছিলেন (এক দেশ দুই নীতি), সেই তত্ত্ব অনুযায়ী তাইওয়ান একদিন চীনের অন্তর্ভুক্ত হবে, যেমনটি হয়েছে হংকং। তাইওয়ানের নেতারা অবশ্য এই তত্ত্বে আস্থাশীল নন। তারা তাইওয়ানের স্বাধীনতা চাচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বাধীনতা না চাইলেও তাইওয়ানের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিচ্ছে। তাইওয়ান প্রশ্নে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে কিছুটা ফাটল ধরেছে। ২৯ জানুয়ারি ২০১০ ওবামা প্রশাসন কংগ্রেসকে জানায়, তাইওয়ানের কাছে ছয় বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। হোয়াইট হাউসের ঘোষণার পরপরই বেইজিংয়ে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অস্ত্র বিক্রির জন্য ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। একই সাথে সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াশিংটনের সাথে ২২টির মতো সামরিক সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করার কথাও জানিয়ে দেয় বেইজিং ।

৩. তিব্বত ইস্যু :

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বগুলো কী কী

তিব্বতের প্রশ্নেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে তিব্বতে একজন কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, তিব্বতের স্বায়ত্তশাসনের প্রশ্নে চীনা নেতাদের উচিত ধর্মীয় নেতা দালাইলামার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করা। 

চীন এ ধরনের আলোচনা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। চীন তিব্বতকে তার একটি অংশ বলেই মনে করে। ১৯৫৯ সালে চীন তিব্বত দখল করে নিয়েছিল। সেই থেকে তিব্বতের ধর্মীয় নেতা দালাইলামা ভারতে নির্বাসিত জীবন যাপন করে আসছেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বারাক ওবামা তিব্বতের ধর্মীয় নেতা দালাইলামার সাথে বৈঠক করলে চীন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে।

৪. চীন কর্তৃক পাকিস্তানে পারমাণবিক প্রযুক্তি সরবরাহ :

চীন পাকিস্তানে পারমাণবিক প্রযুক্তি সরবরাহ করছে এমন অভিযোগও ওয়াশিংটনের আছে। পাকিস্তানের পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর চীনের উপর সঙ্গত কারণেই ওয়াশিংটনের সন্দেহ এখন আরো বাড়ছে।

৫. বাণিজ্য ঘাটতি :

বাণিজ্য ঘাটতি চীনের অনুকূলে। যুক্তরাষ্ট্র এই ঘাটতি কমানোর আহ্বান জানালেও চীনের উদ্যোগ তেমন একটা ছিল না। ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মতে এই ঘাটতি প্রায় ৫০০ কোটি ডলার। চীন তার অনুকূলে এই ঘাটতি স্বীকার করে ২০০ কোটি ডলার। কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলের জন্য কয়েকটি বোয়িং বিমান ক্রয় করতে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছ। আগামীতে যুক্তরাষ্ট্র চীনে অত্যাধুনিক কম্পিউটার ও এফ-২০ যুদ্ধ বিমান বিক্রয় করবে। এর ফলে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসতে পারে।

চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব যে খর্ব করবে, সে সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো :

গত এক দশকে চীন ও অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায় । বর্তমান পৃথিবীতে একক ক্ষমতার অধিকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিগত দুই দশক ধরে অর্থনৈতিকভাবে যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে, তা খুব সহজেই অনুমান করা যায়। হঠাৎ করেই চীনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যে বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব খর্ব করবে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এক্ষেত্রে হয়তো সময়ই নির্ধারণ করে দেবে সবকিছু।

যে সকল কারণে চীন বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব খর্ব করবে বলে মনে করা হয় তা হলো :

১. সামরিক আধুনিকীকরণ :

সামরিক আধুনিকীকরণ :

বিশ্বভূমিকা পালনের লক্ষ্যে চীন প্রথমত তার সামরিক বাহিনীর আধুনিকীকরণের কাজ হাতে নিয়েছে। একই সাথে সে এক শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা গড়ে তোলায় আত্মনিয়োগ করেছে। বর্তমান শতাব্দীর শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ যখন তার দেশের জাতীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যবস্থা নেন তখন রাশিয়া ও চীন তার বিপক্ষে অভিন্ন ফ্রন্ট উপস্থাপনের ব্যাপারে একমত পোষণ করে এবং পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট জেমিন ২০০১ সালের ১৬ আগস্ট তারিখে মস্কোর ক্রেমলিনে এক বন্ধুত্ব চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বস্তুত চীন তার নিরাপত্তা রণকৌশলকে দীর্ঘদিন যাবৎ চলতে থাকা প্রতিরক্ষামূলক থেকে আক্রমণাত্মক রূপ দিতে তৎপর। এর আসল উদ্দেশ্য হলো বর্তমানে একমেরু বিশ্বব্যবস্থার ধারক মার্কিনদের ঔদ্ধত্যের সমুচিত জবাব দিয়ে ওই ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনয়ন করে আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার ব্যাপারে অধিক উপযোগী বলে বিবেচিত বহু মেরুব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা।

২. অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি :

চীন এ ব্যাপারে পুরোপুরিভাবে অবগত যে তার সামরিক, বিশেষত ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রমকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিতে হলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অধিক সাফল্য লাভের কোনো বিকল্প নেই। বাস্তবে দেখা যায়, চীন অতি দ্রুত বেগে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে সে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। এমতাবস্থায় সে দেশটি অর্থনৈতিক নেতৃত্বের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ক্রমশই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে ।

৩. চীন-আসিয়ান সম্পর্ক :

চীন-আসিয়ান সম্পর্ক :

চীন-আসিয়ান মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বাণিজ্য সম্পর্ক প্রসারিত হবে এবং নিরাপত্তা সম্পর্ক দৃঢ় হবে। এর ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনের প্রভাব আরও বিস্তৃত হবে, যা USA এর Asia Pacific এলাকায় প্রভাব বলয় প্রতিহত করবে। চীন প্রকৃতপক্ষে এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারে সচেষ্ট এবং আন্তর্জাতিক স্তরে নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ভূমিকা পালন করছে।

৪. প্রবৃদ্ধিমুখী নীতি গ্রহণ :

প্রবৃদ্ধিমুখী নীতি গ্রহণ ও ট্রেড ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কমিউনিস্ট সরকার ব্যবসায়ীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। পশ্চিমা কূটনীতিকদের মতে, চীনে ব্যবসা বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ মার্কিনদের কাছে স্বপ্নের মতো। সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয় যে বিষয়টি তা হলো কমিউনিস্ট রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের প্রবেশের দ্বার উন্মুক্ত হওয়ায় চীনের ব্যবসায়ীরা মহাখুশি। এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে চীন ৭-৮ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখে চলেছে। জাপানকে সরিয়ে চীন এখন যুক্তরাষ্ট্রেরবাজারে সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক।

৫. বিনিয়োগ আকৃষ্ট:

মূলত নব্বই এর দশকের শুরুতেই চীন বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে শুরু করে। কম দামে মানসম্পন্ন পণ্য তৈরিতে চীনের সাফল্য ব্যাপকভাবে বিদেশী উদ্যোক্তাদের টেনে আনছে সে দেশে। চীনের উন্নয়নশীল প্রতিবেশীদের জন্য ব্যাপারটি অনেকটা অক্সিজেন টেনে নেয়ার মতো। '৯৭ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের আগ পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ছিল বিশ্বের মূলধন বিনিয়োগের আদর্শ স্থান।

অর্থনৈতিক সংকট কেটে যাবার পর থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া আশা করেছিল বিদেশী বিনিয়োগের আরেক দফা প্লাবনে তাদের অর্থনীতি চাঙা হবে। কিন্তু তারা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলো, মেনুফ্যাকচারিং ইনভেস্টমেন্টের সিংহভাগই দৌড় দিয়েছে চীনের দিকে। এর ফলে চীনা অর্থনীতি যেভাবে শক্তিশালী হচ্ছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, অদূর ভবিষ্যতে চীন মার্কিন অর্থনীতির সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবে।

৬. দক্ষ জনশক্তি তৈরি :

একসময় চীনের জনশক্তির মান নিয়ে সন্দেহ ছিল। কিন্তু বর্তমানে চীনের শ্রমশক্তি কেবল সংখ্যায় বেশি বা সস্তাই নয়, শিক্ষিত এবং সুশৃঙ্খলও বটে। দক্ষিণ কোরিয়া বা মালয়েশিয়ার দক্ষ শ্রমিকের সঙ্গে পাল্লা দেয়ার মতো শ্রমিকের অভাব চীনে আর নেই। দেশে এখন বিপুলসংখ্যক তরুণ প্রকৌশলী তৈরি হয়েছে, যাদের নিয়োগ দিচ্ছে বিদেশী কোম্পানিগুলো। বর্তমানে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয়ে অধ্যয়নরত বিদেশী ছাত্রদের সংখ্যাগরিষ্ঠ চীনা; দেশে ফিরে এরাই চীনকে বিশ্ববাজারে বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করছে, যা বিশ্ব-অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের একক আধিপত্যকে খর্ব করবে।

৭. হংকং অন্তর্ভুক্ত :

হংকং অন্তর্ভুক্ত :

চীনের অর্থনীতিতে নবজাগরণের সূচনা ঘটে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই। ব্রিটেনের কাছ থেকে ১৫৪ বছর পর চীন হংকং ফিরে পায়। হংকংয়ের উদীয়মান অর্থনীতি, মুক্তবাজার এবং গণতন্ত্র-প্রক্রিয়া চীনের জন্য বিপরীত আদর্শ হলেও চীন 'একদেশ দুই নীতি' পদ্ধতি গ্রহণ করে হংকংয়ের উদীয়মান অর্থনীতির সুবিধাগুলো চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগায়।

হংকংকে চীনা মূল ভূ-খণ্ডে ফিরে পাবার পর দেশের নেতৃবৃন্দও অধিক জোরেশোরে বিশ্বব্যাপী তাদের প্রভাব বিস্তারে মনোযোগ প্রদান করেন। হংকংয়ের শক্তিশালী অর্থনীতি চীনের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করেছে, যা চীনকে বিশ্ব-প্রতিযোগিতায় অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।

৮. WTO-তে চীনের অন্তর্ভুক্তি মুক্তবাজার অর্থনীতিতে প্রবেশের সুযোগ করে দেয় :

মুক্তবাজার অর্থনীতিতে চীনের অংশগ্রহণের ফলে বিশ্ববাজারের বিরাট অংশ যে চীনের দখলে চলে যাবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। আর এতে বেশি ক্ষতি হবে বিশ্বের প্রধান দুই পুঁজিপতি দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের ।

৯. চীন-ভারত বর্তমান সম্পর্ক :

২০১৪ সালে মোদী সরকার আসার পর ধারণা করা হচ্ছে ২০৫০ সালে মধ্যেস ভারত-চীনে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য করবে। চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নয়ন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব হ্রাস করবে, এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।

উপসংহার :

বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য যে কয়টি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ রয়েছে তার মধ্যে সবার আগে যে নামটি আসবে তা হলো 'চীন'। চীন তার অর্থনৈতিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সামরিক শক্তি অর্জন করছে, যা বিশ্বরাজনীতিতে চীনকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে দাড় করিয়েছে। বর্তমান বহুমেরুকেন্দ্রিক বিশ্বরাজনীতি যেরূপই পরিগ্রহ করুক না কেন, তার অস্তিত্ব পরিবর্তনশীল। আর এ পরিবর্তনের ধারায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলমান রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে হাজির করছে চীন। একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বরাজনীতিতে চীনই হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ।


Post a Comment

Previous Post Next Post