বাকশাল কি, বাকশাল কবে গঠিত হয়, বাকশালের সদস্য কারা ছিল? , বঙ্গবন্ধু কি দায়ী ছিল?

 

বাকশাল কি, বাকশাল কবে গঠিত হয়, বাকশালের সদস্য কারা ছিল? , বঙ্গবন্ধু কি দায়ী ছিল?


বাকশাল কি, বাকশাল  কবে গঠিত হয়বাকশাল  গঠনের প্রেক্ষাপট,বঙ্গবন্ধু কি দায়ী ছিল?

শোষণহীন সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ' (বাকশাল) গঠন , রাষ্ট্রপতি পদ্ধতি ও একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য ১৬ জানুয়ারি, ১৯৭৫ সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী আনয়ন করেন। সংশোধন অনুসারে- বাংলাদেশে একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন (অনু-১৮); একজন উপ-রাষ্ট্রপতি থাকবেন, তিনি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন (অনু- ৪৯); মন্ত্রিপরিষদ থাকবে (অনু-৫৮); জাতীয় দল থাকবে (অনু-১১৭ক)। রাষ্ট্রপতি জাতীয় দল গঠন করবে। ২৫ জানুয়ারি, ১৯৭৫ বঙ্গবন্ধু ১৭ জন মন্ত্রী ও ৯ জন প্রতিমন্ত্রী নিয়ে রাষ্ট্রপতির মন্ত্রিসভা গঠন করেন। ৭ জুন, ১৯৭৫ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করেন। বাকশালের কার্যনির্বাহী কমিটি ছিল ৯ সদস্যের এবং কেন্দ্রীয় কমিটি ছিল ১১৫ সদস্যের।

কার্যনির্বাহী কমিটি:

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- সভাপতি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম- সহ-সভাপতি

 এম মনসুর আলী- সাধারণ সম্পাদক

খন্দকার মোশতাক আহমদ

 এ এইচ এম কামরুজ্জামান

 আবদুল মালেক উকিল

অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী

শ্রী মনোরঞ্জন দে

ড. মোজাফফর আহমদ চৌধুরী

 শেখ আবদুল আজিজ

মহিউদ্দিন আহমেদ

গাজী গোলাম মোস্তফা

জিল্লুর রহমান- সম্পাদক

শেখ ফজলুল হক মনি- সম্পাদক

আবদুর রাজ্জাক- সম্পাদক

 

বাকশালের অংগ সংগঠন:

 

জাতীয় কৃষক লীগ (সাধারণ সম্পাদক- ফণিভূষণ মজুমদার)

জাতীয় শ্রমিক লীগ (সাধারণ সম্পাদক- অধ্যাপক মো: ইউসুফ আলী)

মহিলা লীগ (সাধারণ সম্পাদক- বেগম সাজেদা চৌধুরী)

যুবলীগ (সাধারণ সম্পাদক- শেখ ফজলুল হক মনি)

ছাত্রলীগ (সাধারণ সম্পাদক- শেখ শহীদুল ইসলাম)

বাকশাল ছিল বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক লীগের একদলীয় শাসন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ৭ জুন বাকশাল গঠন করেন।

প্রস্তাব ছিল : ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্য নির্বাহী কমিটি থাকবে (বঙ্গবন্ধু হবেন চেয়ারম্যান) । ১১৫ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি থাকবে ।

এই ব্যবস্থায় ১৯টি মহকুমাকে ভেঙে ৬১টি জেলা তৈরির প্রস্তাব ছিল । ৬১টি জেলার জন্য ৬১ জন জেলা গভর্ণর নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৭৫ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে বাকশাল কায়েমের কথা ছিল ।

 

প্রশ্নঃ বাকশালের মতো ব্যবস্থা আপনি সমর্থন করেন কী? যেখানে সকল দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে ।

উত্তর : ধন্যবাদ স্যার, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের দ্রুত পুনর্গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধু একদলের শাসনের প্রয়োজন বোধ করেছিলেন। বহুদল, বহুমত তখন দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করত ।


বাকশালের যৌক্তিকতা :

১. বহুদল, বহুমত দেশের জরুরী উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করত ।

২. তৃণমূল পর্যায় থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য এর দরকার ছিল ।

৩. শাসন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ (জেলা গভর্ণর নিয়োগের মাধ্যমে) দরকার ছিল । 

 সমালোচনা

বাকশালের সমালোচনার সুযোগ নেই । কারণ এই ব্যবস্থা বাংলাদেশে কার্যকর হয় নি। যেটি কার্যকরই হয়নি, সেটির সমালোচনার সুযোগ নেই। কারণ, বঙ্গবন্ধুর উপলব্ধিই হয়তো সঠিক ছিল । বাকশাল কায়েম হলে তা যুদ্ধ পরবর্তী উন্নয়নের পক্ষেই হয়তো আসত।বাকশাল গঠিত হলেও এটি কার্যকর হয়নি।  ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলে বাকশাল বাতিল হয়ে যায়।  


Post a Comment

Previous Post Next Post