উপাত্ত ও তত্ত্বের পারস্পরিক সম্পর্ক আলোচনা কর।

উপাত্ত ও তত্ত্বের পারস্পরিক সম্পর্ক আলোচনা কর। 

উপাত্ত ও তত্ত্বের পারস্পরিক সম্পর্ক আলোচনা কর।

ভূমিকা : 

গবেষণা কাজে ব্যবহৃত দুটি প্রত্যয় হলো তত্ত্ব ও তথ্য। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করতে গিয়ে উভয়ই ব্যবহার করেন। যেকোনো তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক তথ্যের প্রয়োজন হয়। তত্ত্ব ও তথ্য বিভিন্ন দিক দিয়ে সম্পর্কযুক্ত। তত্ত্ব গঠনে তথ্যের ব্যবহার আবশ্যক। একটি ছাড়া অন্যটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়।  তাই গবেষণা কাজে উভয়ের ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। বিজ্ঞানীরা তত্ত্ব ও তথ্যকে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন।  সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীদের তথ্য ও তত্ত্বের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জানা পেশাগত দায়িত্ব।

তত্ত্ব ও তথ্যের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক:


তত্ত্ব ও তথ্যের মধ্যে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত রয়েছে। বিশেষ করে তত্ত্ব জন্ম নেওয়ার জন্য তথ্য প্রয়োজন। আবার তত্ত্বের পরিবর্তন পরিমার্জন, সংশোধন ইত্যাদির জন্য তথ্য দরকার তথ্য পূর্বানুমানে সাহায্য করে, তত্ত্বকে নির্ভরযোগ্য গ্রহণযোগ্য করে তোলে। একটি ছকের মাধ্যমে তত্ত্ব ও তথ্যের মধ্যে সম্পর্কের | গভীরতা জানা যায়।

১. ভালো তত্ত্বের জন্য সঠিক উপাত্ত বা তথ্য প্রয়োজন। তথ্য ছাড়া তত্ত্ব গঠন করা যায় না। তত্ত্ব সৃষ্টির জন্য সামাজিক গবেষণায় পর্যবেক্ষণযোগ্য অনুসন্ধান করতে হয়, যেমন নিউটন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির তত্ত্ব আবিষ্কারের জন্য আপেল মাটিতে পড়া নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছে। তারপূর্বে অনেকেই তা দেখেছেন, কিন্তু কেউ তা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করেনি।

২. সামাজিক গবেষণার কাজে বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে হয়। যার ফলে অনেক সময় তথ্যগুলো নতুন তত্ত্বের জন্ম দিয়ে থাকে। প্রচলিত তথ্যগুলো নতুন তথ্যের সাথে অনেক সময় অমিল হয়। তাই গবেষণকগণ এগুলো সংশোধন করার চেষ্টা করেন। ফলে তত্ত্বটি আরো বেশি গ্রহণযোগ্য, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও কার্যকর হয়ে থাকে।

৩. গবেষণায় পূর্বানুমান গঠন করতে হলে তত্ত্বকে তথ্যের সাহায্য নিতে হয়। কারণ তথ্য সঠিক পূর্বানুমান গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

৪. বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নতুন তত্ত্বের জন্ম দেয়। তাই গবেষকের জন্য তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে গবেষণাকার্য পরিচালনা করেন।

৫. সংগৃহীত তথ্য তত্ত্বকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, সংশোধন, পরিমার্জন করতে সহায়তা করে। গবেষক তথ্যের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে তত্ত্বকে পুনর্গঠনের কাজ করেন।

৬. তত্ত্ব নির্ধারিত করে দেয় গবেষণায় কোনো ধরনের তথ্যের সংগ্রহ প্রয়োজন পড়ে। অর্থাৎ তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

৭. তত্ত্বকে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে হলে তথ্য-উপাত্তের নিয়মতান্ত্রিকতার প্রয়োজন পড়ে। তথ্যের নিয়মতান্ত্রিকতা তত্ত্বের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দেয়।

৮. কতকগুলো সুশৃঙ্খল, প্রণালিবদ্ধ তথ্যকে তত্ত্বের আবিষ্কার করা সহজ হয়। কারণ তথ্যগুলো যদি সঠিকভাবে সাজানো থাকে, তবে সহজেই তা ব্যাখ্যা- বিশ্লেষণ করা সম্ভব।

৯. তত্ত্ব বিজ্ঞানকে সাধারণী করার ক্ষেত্রে অবদান রাখে। আর তথ্য বিজ্ঞানকে নতুন তত্ত্ব আনয়নে ও পুরাতন তথ্য সংশোধনে কাজ করে।

উপসংহার: 

রিশেষে বলা যায়, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তত্ত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তত্ত্বের নির্ভরযোগ্যতার জন্য তথ্য প্রয়োজন পড়ে। তথ্য ছাড়া তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় না। সামাজিক গবেষণায় তথ্য ও তত্ত্ব পরস্পর সম্পৃক্ত। এ কারণে গবেষণাকে এ দুটি প্রত্যয় সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা রাখতে হবে।

 


Post a Comment

Previous Post Next Post