ইবনে বতুতা সম্পর্কে লিখ। ইবনে বতুতা কে ছিলেন?
মরক্কোর অধিবাসী বিখ্যাত মুসলিম পর্যটক
ইবনে বতুতার প্রকৃত নাম আৰু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে বতুতা । তিনি ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দের
২৪ ফেব্রুয়ারি আফ্রিকার তাঞ্জিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন। ২১ বৎসর বয়সে তিনি বিশ্বভ্রমণে
বের হন এবং উত্তর আফ্রিকা, আরব, পারস্য, কনস্ট্যান্টিনোপল, ভারত, বাংলা, সিংহল, মালয়
দ্বীপপুঞ্জ প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করেন ।
ইবনে বতুতা ১৩৩৩ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মদ
বিন তুঘলকের রাজত্বকালে ভারতবর্ষে আগমন করেন এবং দিল্লির সুলতান তাকে সাদরে গ্রহণ করেন।
তার বুদ্ধিমত্তা ও গভীর জ্ঞানে আকৃষ্ট হয়ে সুলতান তাকে প্রধান কাজির পদ দান করেন।
এ পদে দীর্ঘ আট বৎসর দায়িত্ব পালন করার
পর অজ্ঞাত কারণে সুলতানের সাথে সম্পর্ক খারাপ হলে তিনি বন্দি হন এবং কিছুকাল পরে সুলতান
তাকে মুক্ত করে ১৩৪১ খ্রি. রাষ্ট্রদূত হিসেবে চীনে প্রেরণ করেন।
কিন্তু পথিমধ্যে দস্যু কর্তৃক সবস্ব লুণ্ঠিত হলে
তিনি মালয় দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছেন এবং সেখান থেকে দক্ষিণ ভারতের মাদুরা হয়ে চট্টগ্রামে
আসেন। চট্টগ্রাম থেকে সোনারগাঁ হয়ে তিনি সিলেটে যান এবং বিখ্যাত সুফি সাধক হযরত শাহ
জালালের (র) সাথে সাক্ষাৎ করেন।
ইবনে বতুতার বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনি রিহালা ই- ইবনে
বতুতা নামে পরিচিত। এ গ্রন্থে মুহাম্মদ বিন তুঘলকের পরিকল্পনাগুলোর বিশদ বিবরণ যেমন
পাওয়া যায় তেমনি হযরত শাহ জালাল (র)-এর খানকাহ ও বাংলা সম্পর্কেও তিনি বহু মূল্যবান
তথ্য সরবরাহ করেছেন। ইবনে বতুতার মতে, তখন বাংলায় ৩ টাকায় একটি ভালো গরু এবং ১ টাকায়
৮ মণ চাল পাওয়া যেত।
তবে সমৃদ্ধিশালী বাংলার ভৌগোলিক পরিবেশ,
জলবায়ু, বন্যা, মশা-মাছি, কাদামাটি ও বিভিন্ন অনাচার দেখে তিনি একে 'দোজখপূর্ণ নিয়ামত'
বা প্রাচুর্যে পূর্ণ জাহান্নাম বলে অভিহিত করেন।
তিনি ১৩৭৭/৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ৭৩ বৎসর বয়সে
মারা যান।