আলাউদ্দিন খলজির বাজার পরিদর্শন পদ্ধতি কীরূপ ছিল?
১. বাজার পরিদর্শন ব্যবস্থা: পণ্য বাজার,
পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের জন্য ‘শাহানা ই মান্ডি’ এবং ‘দিউয়ান ই রিয়াসাতাঁ
নামক দুই জন পদস্থ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। তাছাড়া পণ্যমূল্য ও ওজন পরিমাপ ও
ব্যবসায়ীদের কর্মতৎপরতা তদারকির জন্য সুলতান গুপ্তচর নিয়োগ করেন। এসব ব্যবস্থার ফলে
বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয় ।
২. তদারকি বিভাগ গঠনঃ বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য শাহানা-ই- মতি ও দিওয়ান-ই-রিয়াসত
নামক দুজন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। শাহানা শ্যাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার
তদারক করতো দিওয়ান কাপড় চোপড়, কৃষ্ণা, পশু ইত্যাদির বাজার তদারক করতো। ভাষা সুলতানের
নিকট বাজারের সঠিক অবস্থা তুলে ধরত।
৩. মজুদদারী প্রথা বিলোপ : পণ্যদ্রব্য মজুদ করে যাতে মজুদদাররা কৃত্রিম
সংকট তৈরি করতে না পারে সেজন্য মজুমদারী প্রথা বিলোপ করা হয়।
৪. সরবরাহ সুনিশ্চিতকরণঃ সুলতান
আলাউদ্দিন খলজি পণ্য দ্রব্যের সরবরাহ সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা করেন। পর্যাপ্ত সরবরাহের
অভাবে যাতে খাদ্য শস্য নির্ধারিত মূল্য তালিকার উর্ধ্বে যেতে না পারে, সেজন্য খাদ্যশস্য
রাজকীয় গুদামে জমা রেখে সরবরাহ সুনিশ্চিত করেন।
৫. সরকারি মজুদভাণ্ডার গড়ে তোলা : কৃষকের কাছ থেকে পাওয়া অর্থের বিনিময়ে
রাজস্ব হিসেবে পণ্য দ্রব্য আদায় করে সেসব দ্রব্যের দুষ্প্রাপ্যতা সৃষ্টি হলে এ মজুদ
থেকে সরবরাহ করা হতো।
৬. শস্য বাজার স্থাপন : মূল্য নির্ধারণের সাথে সাথে সুলতান শস্য বাজার
ও স্থাপন করেন, শস্য বাজার দুধরনের দোকানদার দ্বারা পরিচালিত হতো। স্থায়ী দোকানদার
ও ভ্রাম্যমান বিক্রেতা। এছাড়াও তিনি মূল্যবান পন্য বিক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ীদের ছাড়পত্র
প্রদান করেন।
৭. গোয়েন্দা নিয়োগ : তদারকি বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কার্যক্রম
সঠিকভাবে পরিচালনা হচ্ছে কিনা এ ব্যাপারে অবগত হওয়ার জন্য সুলতান গোয়েন্দা নিয়োগ
করেন। তারা সর্বদা সুলতানের কাছে সঠিক অবস্থা তুলে ধরত।
বাজার নিয়ন্ত্রণের সীমাবদ্ধতা : সুলতান তার বাজার সীমাবদ্ধ রেখেছিল,
এ সম্পর্কে সকল ইতিহাসবিদ পোষণ করেন, ইতিহাসবিদ জিয়াউদ্দিন বাৱানি বলেন, “সুলতান আলাউদ্দিন
খলজি সৈন্যবাহিনীর সুবিধার্থেই বাজার নিয়ণ করেছেন এবং উহা দিল্লিও সীমাবদ্ধ ছিল।